নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: বিজেপিতে ভবিষ্যৎ নেই। ভরসা রয়েছে বিরিয়ানির দোকানে। বিশেষ ছাড় দিয়ে বিরিয়ানি বিক্রি করে ভব্যিষতের ভিত তৈরি করা যাবে। এমনই বিশ্বাস বিজেপি’র যুব নেতাদের। সংগঠনের হাল বেহাল দেখে তাঁরা বিরিয়ানি দোকান করার দিকে ঝুঁকেছেন। রীতিমতো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তাঁরা দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সুধীররঞ্জন সাউ বর্ধমান শহরে বিজেপির দাপুটে নেতা হিসেবেই পরিচিত। সংগঠনের একাধিক পদে তিনি ছিলেন। কয়েক দিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তিনি রাজনীতিকে বিদায় জানিয়েছেন। সুধীররঞ্জন বলেন, সংগঠনের ভবিষ্যৎ বলে আর কিছু নেই। দল নিয়ে কেউ চিন্তা করে না। এক সময় আমরা লড়াই করে সংগঠন করেছিলাম। এখন আমাদের গুরুত্ব নেই। সেই কারণেই বিরিয়ানি দোকান করেছি।বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি ছিলেন পিন্টু সাম। তিনি এখনও যুব মোর্চার পদে রয়েছেন। তিনি বলেন, দল ছাড়তে পারব না। কিন্তু, ভবিষ্যতের জন্য কিছু তো একটা করতে হবে। সেই কারণেই বিরিয়ানি দোকান খুলেছি। বিজেপি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দলের আরও কয়েকজন নেতা এই পথে হেঁটেছেন। তাঁরা তালিত এলাকায় দোকান করেছেন। এক নেতা বলেন, যে কেউ ব্যবসা করতেই পারেন। রাজনীতিতে স্থায়ী আয় নেই। সেই কারণে অনেকেই এই পথে হাঁটেন। তবে তাঁরা ব্যবসা অন্যদের দিয়ে চালান। তাঁরা সংগঠনে বেশি সময় দেন। কিন্তু, যুব নেতারা সংগঠনকে কার্যত বিদায় জানিয়ে বিরিয়ানির দোকান করছেন। সংগঠনে সময় তাঁরা দিচ্ছেন না। পুজোর সময় দলের তরফে বিভিন্ন পুজো মাণ্ডপের সামনে স্টল তৈরির জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু, যুব নেতারা বিরিয়ানির স্টলে পড়ে থাকায় স্টল তৈরি করতেও বেগ পেতে হচ্ছে।
বিজেপির জেলাসভাপতি অভিজিৎ তা অবশ্য এনিয়ে কিছু বলতে চাননি। দলের আরএক নেতা রাজু পাত্র বলেন, সংগঠন নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা দরকার। অনেক পুরনো নেতা বসে রয়েছে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় গেরুয়া শিবিরের অবস্থা শোচনীয়। এবার বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের আসনটিও তাদের হাতছাড়া হয়েছে। অধিকাংশ বুথেই তাদের কমিটি নেই। কিন্তু, নেতাদের মধ্যে দড়ি টানাটানি রয়েছে। বারবারই দলের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। লোকসভা নির্বাচনের সময়েও নেতৃত্ব কোন্দল সামাল দিতে পারেনি। সংগঠনের এই অবস্থা দেখে অনেকেই বিকল্প পথ বেছে নিচ্ছেন। তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, এরাজ্যে বিজেপির কোনও ভবিষ্যৎ নেই। সেটা আমরা বহু দিন থেকেই বলে আসছি। ওদের দেরিতে বোধদয় হয়েছে। আগামী দিনে ওরা ঝান্ডা ধরার লোক পাবে না। বিজেপি নেতারা বিরিয়ানির দোকান করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের প্রতি আস্থা হারিয়ে আরও কয়েকজন অন্য পথে পা বাড়িয়েছেন। বিশেষ ছাড় দিয়ে তাঁরা বিরিয়ানির ব্যবসায় বাজিমাত করতে চাইছেন।