উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে ‘অধিকারী গড়’ হিসেবে খ্যাত পূর্ব মেদিনীপুর আক্ষরিক অর্থেই বিরোধীদের কাছে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জের নাম। কারণ, ২০০৮ সাল থেকে এই জেলায় যত ভোট এসেছে শাসক দল আরও বেশি মজবুত হয়েছে। দলের কোন্দল সহ অন্যান্য মতবিরোধ যাই থাক না কেন, ভোটের সময় জোটবদ্ধ হয়ে বিরোধীদের পর্যুদস্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়ার ছবি যা আশপাশের জেলাতেও অত্যন্ত বিরল। রাজনৈতিক মহলের মতে, জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী ও শাসক দলের অন্যতম সেনাপতি শুভেন্দু অধিকারীর যোগ্য নেতৃত্ব পূর্ব মেদিনীপুরে শাসক দলকে নিরঙ্কুশ ক্ষমতায় বসিয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে সমস্ত ক্ষেত্রেই একচেটিয়া আধিপত্য শাসক শিবিরের।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় শাসক দল এককভাবে ৫১.৯৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। বামেরা ৩৫.০৫ শতাংশ, কংগ্রেস ২.৩২ শতাংশ ও বিজেপি ৭.৯২ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। অর্থাৎ সকল বিরোধীর প্রাপ্ত ভোট যোগ করলেও তা কোনওভাবেই শাসক দলকে টপকে যায়নি। বরঞ্চ তা অনেকটাই নীচে ছিল। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোট, ওই বছর তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে শাসক দল শুধু সামনের দিকে এগিয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতি সচতন মানুষের কাছে প্রতিটি ভোটের রাজনৈতিক গুরুত্ব আলাদা। দেশ গড়ার ভোটে মানুষ দিল্লির রাজনীতির দিকে নজর রেখে ভোট দেন। ২০১৪ সালের তুলনায় মোদি হাওয়া অনেকটাই ফিকে। তার উপর উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যে বিজেপি কার্যত সুতোর উপর ঝুলছে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে বিধানসভা ভোটে বিজেপির খারাপ ফলাফল মানুষের কাছে অজানা নয়। তার উপর ঘরের ছেলে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপির আর দেশের ক্ষমতায় না ফেরার যুক্তিতে বহু মানুষের মধ্যেই দেশের রায় সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে।
শুধু রাজনৈতিক পরিস্থিতি নয়, বিরোধী দলগুলির ভোট কাটাকাটির রাজনীতিও শাসক দলের হাসিকে আরও চওড়া করেছে। কারণ, এবার পূর্ব মেদিনীপুরে চতুর্মুখী লড়াইয়ে বিরোধী ভোট চারভাগ হচ্ছে। বামেদের ভোট ব্যাঙ্ক ধস নামলেও বাম প্রার্থীদের নিবিড় প্রচার ও বিভিন্ন সভায় ভিড় প্রমাণ করেছে বামশক্তি পূর্ব মেদিনীপুরে একেবারে মুছে যায়নি। ফলে এবারের ভোটেও বামেরা তাঁদের নিজস্ব ভোটব্যাঙ্কের বেশ কিছুটা ধরে রাখতে সক্ষম হবে।
অন্যদিকে, কংগ্রেসও প্রবল মোদি বিরোধী প্রচার করে পূর্ব মেদিনীপুরে গত লোকসভা ভোটের তুলনায় ভোটপ্রাপ্তির হার কিছুটা হলেও বাড়াবে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। বিজেপির ভোট ব্যঙ্ক কিছুটা বাড়লে তা বাম ও কংগ্রেসের ভোট কেটেই বাড়বে বলেই অনেকে মনে করছেন। বিরোধীদের ভোট কাটাকাটির অঙ্কের পাশাপাশি বুথভিত্তিক সাংগঠনিক রিপোর্ট শাসক শিবিরকে চাঙ্গা করে দিয়েছে।
জেলা তৃণমূলের আহ্বায়ক অর্ধেন্দু মাইতি বলেন, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের তুলনায় এবার এই জেলায় আমরা অনেক ভালো ফল করব। কাঁথি ও তমলুক কেন্দ্রে গত পাঁচ বছরের তুলনায় লিড অনেকটাই বাড়বে। আমরা তাই ব্যবধান নিয়েই ভাবছি।