উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
শান্তিপুরের বিধানসভার ২৫৬টি ভোটকেন্দ্রে এবার ভোট দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। এই বিধানসভা এলাকায় ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি পুরসভা রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে রানাঘাটের তৃণমূলের প্রার্থী রুপালি বিশ্বাস শান্তিপুর থানার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে মিশে গিয়ে ভোটপ্রচার করেছিলেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, প্রথম দিন থেকেই তৃণমূল প্রার্থী রুপালিদেবী যেভাবে প্রচারে ঝড় তুলেছেন, তাতে ভালো সাড়া পেয়েছেন তিনি। প্রচারের শেষ লগ্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং দীর্ঘ প্রায় চার কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে শান্তিপুরে রোড-শো করেছিলেন। কিন্তু প্রচারে সেভাবে সাড়া ফেলতে পারেনি বাম-বিজেপি। শান্তিপুর শহরজুড়ে বিভিন্ন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে বুথ এজেন্ট দিতে পারেনি বিরোধীরা। সবমিলিয়ে এগিয়ে তৃণমূল। ভোটদান কেন্দ্রগুলিতে সিপিএমের প্রতিনিধিদের বিজেপির হয়ে কাজ করতে দেখা যায় বলে অভিযোগ তোলে তৃণমূল। সিপিএম ও বিজেপির অলিখিত আঁতাতকে তৃণমূল গুরুত্ব দিতে নারাজ। উল্টে এই আঁতাতের সুফল পাবে তৃণমূল। শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান অজয় দে বলেন, শান্তিপুর শহরের ২৪টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে, ভোটের দিন আমি নিজে ঘুরে দেখেছি। হাতেগোনা কয়েকটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ছাড়া অধিকাংশ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বিজেপি নির্বাচনী এজেন্ট দিতে পারেনি। পাশাপাশি সিপিএমের এজেন্টরাই বিজেপির হয়ে ভোট করেছে। তবে সেসবকিছুকে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল। তাদের দাবি, প্রার্থী রুপালি বিশ্বাসের হয়ে ভোট প্রচারে ঝাঁপিয়েছিল তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকরা। প্রচার থেকেই এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনের আগে এই বিধানসভা ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি পুরসভাকে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব দু’টি ভাগে নির্বাচনী কাজের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছিল। বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য বিধানসভার অন্তর্গত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে নির্বাচনী বিভিন্ন কাজের দায়িত্বে ছিলেন। শান্তিপুর পুরসভার তৃণমূলের হয়ে নির্বাচনী দায়িত্ব দেওয়া হয় পুরসভার চেয়ারম্যান অজয় দেকে।
কেবলমাত্র শান্তিপুর পুরসভার ভোটার সংখ্যা ছিল এক লক্ষ ১৯ হাজার। এর মধ্যে এক লক্ষ পাঁচ হাজার ভোট পড়েছে। শান্তিপুর পুরসভা এলাকাতেই ৮৭ শতাংশ ভোট পোল হয়েছে।
অন্যদিকে, শান্তিপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তপন সরকারকে শান্তিপুর পুরসভা ও শান্তিপুর থানার অন্তর্গত চারটি পঞ্চায়েতের ভোটের আগে নির্বাচনের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। রানাঘাট উত্তর পশ্চিম বিধানসভার অন্তর্গত শান্তিপুর শহর, আরবান্দি-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত, নবলা ও ফুলিয়া টাউনশিপ গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ছিল ৭৪টি। শান্তিপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তপন সরকার বলেন, আমার দায়িত্বে থাকা চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতেই ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে তৃণমূল এগিয়ে থাকবে। বিশেষ করে নোটবন্দি ও জিএসটির প্রভাব পড়ে ফুলিয়ায় তাঁতশিল্পের উপর। ফলে এখানে কোনওরকমভাবে বিজেপি দাঁত ফোটাতে পারবে না। তাই শান্তিপুর ব্লকজুড়ে প্রায় চার হাজারেরও বেশি তাঁতশিল্পীর পরিবার বিজেপি থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে।
এদিকে, জয়লাভের বিষয়ে ১০০ শতাংশ আশাবাদী বিজেপিও। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাঁতশিল্পীদের সুযোগ সুবিধার জন্য বিশেষ প্রকল্প আনা হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূলীরা সেই প্রকল্পের কার্ড বিলি করতে বাধা দিয়েছে। তাই শান্তিপুরের সাধারণ মানুষ এবার বিজেপিকেই ভোট দিয়েছে। এখানে বিজেপিই জিতবে।