সংবাদদাতা, কালিয়াচক: গেম খেলার জন্য মায়ের কাছে ফোন চেয়েছিল। মা দেননি। অভিমানে চরম পথ বেছে নিল মেয়ে। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ঘর থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ওই কিশোরীর। দশম শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার পূর্ব জেলেপাড়ায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বৈষ্ণবনগর থানার পুলিস একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরী মোবাইল গেমে আসক্ত ছিল। প্রায়শই মোবাইল নিয়ে মায়ের সঙ্গে তার গণ্ডগোল বাধতো। যা নিয়ে এর আগেও একাধিকবার ওই ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তারপর থেকে তাকে পরিবারের লোকেরা সেরকম কিছু বলতেন না। কিন্তু পড়াশোনা ছেড়ে মোবাইল গেমে ওই কিশোরী ব্যস্ত থাকায় বুধবার তার মা বকাবকি করেন। তারপর মেয়ের কাছ থেকে মা মোবাইলটি কেড়ে নেন। অভিমানে গত বুধবার থেকে বদ্ধ ঘরে একাই ছিল ওই কিশোরী। সেদিন থেকে খাবারও খায়নি ওই ছাত্রী। বৃহস্পতিবার রাতে ফের ওই কিশোরী মায়ের কাছে মোবাইল চায়। কিন্তু সেরাতেও মা তাকে ফোন দেননি। ফের মায়ের সঙ্গে ঝগড়া হলে ওই কিশোরী ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর তার মা কিশোরীকে খাবারের জন্য ডাকতে গেলে ভেতর থেকে কোনও আওয়াজ আসেনি। অনেকক্ষণ সাড়াশব্দ না মেলায় প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখে কান্নায় শোকস্তব্ধ মা। স্থানীয়রাই তড়িঘড়ি ওই কিশোরীকে বেদরাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের বলেন, মা-মেয়ে দু’জনেই বাড়িতে থাকত। মেয়েটি মোবাইল ফোনে সারাক্ষণ গেম খেলত। মা শাসন করতে গিয়ে এই পরিণতি। দশম শ্রেণির কিশোরীর এই পরিণতিতে অবাক প্রতিবেশীরা।
বৈষ্ণবনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। পড়ুয়ারা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এটা খুব বিপজ্জনক ইঙ্গিত। এমন ঘটনা রুখতে সমাজের সকলকেই সচেতন হতে হবে।