মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য। ... বিশদ
সোমবার কলকাতার আমেরিকান সেন্টারে নিজের বর্ণময় জীবনের কথা শোনাচ্ছিলেন আইসা। অ্যাফ্রো-মার্কিন -দের জীবন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উদার দেশেও কুসুমাস্তীর্ণ নয়। তার উপরে মেয়ে। স্কুলের কেরিয়ার কাউন্সেলর পরামর্শ দিয়েছিলেন, কসমেটোলজি বা প্রসাধনবিদ্যা নিয়ে পড়ুক আইসা। কোনও পেশাকে ছোট না করলেও সেখানেই নিজেকে সীমাবদ্ধ করে রাখতে চাননি তিনি। বাবার উৎসাহে ভয় কাটানো শুরু গণিতে। পড়লেন পদার্থবিদ্যা। স্কুলের কাউন্সেলরের কথা শুনলে যাঁর জীবন কসমেটিক্সে আটকে যেতে পারত, তিনিই চলে এলেন কসমিক সায়েন্স বা ব্রহ্মাণ্ড গবেষণায়। কালক্রমে নাসায় এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার তথা রকেট সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজে যোগ দিলেন।
আইসা বলছিলেন, আমাকে দেখে অনেকেই ভাবতে পারেন না, আমি একজন এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার। স্রেফ কৃষ্ণাঙ্গী বলেই নয়, মার্কিন মুলুকেও মেয়েরা মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শীর্ষক্ষেত্রে খানিকটা বিরলই বটে।
তবে, শুধুমাত্র নাসার চাকুরে হিসেবেও নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি আইসা। নিজের ইঞ্জিনিয়ারিং কনসাল্টেন্সি ফার্ম খুলে উদ্যোগপতি হয়েছেন। তাঁর সংস্থার তৈরি অ্যাপ বিশ্বের অনগ্রসর দেশের পড়ুয়া, বিশেষ করে ছাত্রীদের গণিত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে এগিয়ে চলতে সাহায্য করে। শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে তাঁর নিত্যদিনের ওঠাবসা। হাজারের কাছাকাছি গবেষণাপত্রও রয়েছে তাঁর। এবার চলেছেন আরও বড় চ্যালেঞ্জ নিতে। শিল্পপতি জেফ বেজোসের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি ‘ব্লু ওরিজিন’ সংস্থার রকেটে শিগগিরই মহাকাশে পাড়ি দিতে চলেছেন তিনি। প্রথাগত প্রশিক্ষণ না পেয়েও বিজ্ঞান গবেষণায় এভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে দু’বার ভাবেননি তিনি।
কলকাতায় এসে নারকেল নাড়ুর প্রেমে পড়া আইসা জানান, সব মায়ের মতো তাঁর মায়েরও প্রশ্ন ছিল, এই সিদ্ধান্ত কেন? আসলে আইসার অনেক কিছু প্রমাণ করার দরকার ছিল। একই সঙ্গে তিনি ‘ব্ল্যাক’দের এবং নারী সমাজের প্রতিনিধি। সুনীতা উইলিয়ামসের নিরাপদে পৃথিবীতে অবতরণের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। আবার নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েও যাবতীয় প্রশ্ন তিনি উড়িয়ে দিচ্ছেন নতুন অভিজ্ঞতার উত্তেজনায়। স্পেস ট্যুরিজম নিয়েও তিনি খুবই আশাবাদী। তিনি বলেন, এর ফলে এমন অনেক দেশের মানুষই মহাকাশে যাওয়ার সুযোগ পাবেন, যেখানে এই বিজ্ঞানের চর্চাই হয় না। সরকারি এবং প্রথাগত এজেন্সিগুলির সঙ্গেও এই বেসরকারি এজেন্সিগুলি কাজ করছে। মহাকাশযান তৈরির পাশাপাশি মহাকাশচারীদেরও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সংস্থাগুলি। তাই এর ইতিবাচক দিক নিয়েই ভাবা উচিত বলে মত আইসার। -নিজস্ব চিত্র