উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
কলকাতার জোড়াবাগানে বাল্যকাল কাটানো সাহেব যাদব ওই পাড়ার বিখ্যাত মানুষটির আজও ফ্যান। মিঠুন চক্রবর্তী। অবিকল মিঠুনের মতোই চুলের স্টাইল আজও। বললেন, এই যে আমি যাদব। আমার তো অখিলেশ যাদবকেই ভোট দেওয়ার কথা! তাই তো! কিন্তু দেব না। কারণ এই যে সব ছোট ছোট কাজই বারাণসীর চেহারা ধীরে ধীরে পালটে দিচ্ছে সেগুলো তো বিরাট কিছু প্রকল্প নয়। এটা আমরাও জানি। কিন্তু দেখুন আর কেউ তো করেনি এটুকুও। মোদিজি এসে করলেন। তাই এটা ভাববেন না যাদব মানেই মহাজোটে ভোট যাচ্ছে। ওসব জাতিবাদ আর চলবে না। ভোট পাবেন মোদিজি। অন্তত বারাণসীতে। এমনিতে একজন দুজন নয়। বারাণসীর অলিগলিতে উঁকি মারলে সবথেকে বেশি যে বাঙালি ভদ্রলোকদের পাওয়া যাবে তাঁরা হলেন হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক। ওই গলিতে ডক্টর চক্রবর্তী তো এই গলিতে ডক্টর মল্লিক। সারাবছর রমরম করছে এম ভট্টাচার্য হোমিওকেমিক দোকান। গোধুলিয়া মোড়ের ডক্টর সুভাষ সমাদ্দার অবশ্য মোদি সমর্থক হলেও সাবধানী। তিনি মোদিবাতাসে ভেসে যেতে রাজি নয়। বললেন, কোনও সন্দেহ নেই যে মোদিজি অনেক কিছু করেছেন। এবং আরও পাঁচ বছর তাঁকে আমরা সুযোগ দেব।
সবথেকে বড় যে কাজটি মোদিজি করেছেন সেটি হল বারাণসীকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন। জার্মানি থেকে জাপান। একের পর এক রাষ্ট্রপ্রধানকে নিয়ে এসেছেন। বারাণসী থেকে লখনউ ফোর লেনের রাস্তা হচ্ছে। মেট্রো রেল আসবে।
তাহলে কি কোনও অপ্রাপ্তি নেই? এই প্রশ্নের সামনে এসে বারাণসীর মোদিবন্দনায় স্পিডব্রেকার লাগছে। ইনকাম! সত্যনারায়ন রাই আর সুভাষ সমাদ্দার একই সুরে বললেন সার কথা। মোদিজি রাস্তাঘাট, সাফসাফাই, হাসপাতালের উন্নতি, সব করছেন। কিন্তু এবার একটা জিনিস করতেই হবে। সেটা না হলে কিন্তু এসব বৃথা। সেটা কী? রোজগার! বারাণসীর চিত্র বদলানো শুরু হলেও রোজগারের কোনও ব্যবস্থা হয়নি এখনও। একটাও কোম্পানি নেই, ফ্যাক্টরি নেই। মদনপুরার ফাতিমা এন্টারপ্রাইজেসের বেনারসী বিক্রেতা বললেন, বেশ কয়েকটা যদি কাপড়, সুতো, সিল্কের কারখানা হত তাহলে আমাদের খুব সুবিধা হয়। এখানে হাজার হাজার বস্ত্রশিল্পীরাও কাজ পেত। এখানে সেরকম কাজ নেই বলে বারাণসীর শিল্পীরা চলে যায় সুরাত। বিজনেস যে ডাউন, কর্মসংস্থান নেই, এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাই বারাণসীর ১০০ শতাংশ তাঁদের এমপি মোদিজির পাশে আছে বটে, কিন্তু প্রথম পাঁচ বছর গাড়িটা চলতে শুরু করার ইঙ্গিত মিলেছে। এবার স্পিড নেবে তখনই যখন মানুষকে একটু আয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। তা না হলে আজও কিন্তু বারাণসীর মানুষকে সেই সুরাত, মুম্বই, দিল্লিতেই যেতে হয় কাজের জন্য। ওই যে কৌশলেন্দ্র কুমার। গোধুলিয়া মোড়ে দেখা যাবে একটা ট্রাফিক পুলিশের অল সিজন উঁচু মঞ্চ আছে। সেখানে দিনভর পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমে চলছে ট্রাফিক রুলের ঘোষণা। আকাশবাণীর বারাণসী রিলে সেন্টারের একসময়ের অস্থায়ী পদের ঘোষক কৌশলেন্দ্র কুমার শহরে পরিচিত রেডিও আর্টিস্ট হিসাবে। কিসের আর্টিস্ট? সেই কবে রেডিওতে কাজ করতাম। তাও তো অস্থায়ী। একটা স্থায়ী চাকরি বা কাজ চাই বুঝলেন তো! রেডিও আর্টিস্ট কৌশলেন্দ্র কুমারের একারই নয়, এটা আসলে গোটা বারাণসীর কর্মপ্রার্থীদের মন কি বাত!