শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহ বৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে ... বিশদ
এদিকে, চীনা অনুপ্রবেশকারী হান জুনেইকে রবিবার দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন মালদহের পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া। প্রায় ঘণ্টা তিনেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মধ্য ত্রিশের ওই চীনা নাগরিককে। ইতিমধ্যে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশে অ্যান্টি টেররিজম স্কোয়াড বা এটিএসের পাঁচ সদস্যের একটি দল হানকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য মালদহে আসছে। এর আগে লখনউতে এটিএসের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া হানের সঙ্গী সান জিয়াংয়ের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে তাঁকে জেরা করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। এমনকী জানা গিয়েছে, ওই চীনা অনুপ্রবেশকারীর ল্যাপটপ সহ ইলেক্ট্রিনিক গ্যাজেটস খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে ডাকা হতে পারে কোনও এথিক্যাল হ্যাকারকেও।
মিলিক সুলতানপুর গ্রামটি প্রশাসনিকভাবে কালিয়াচক-৩ ব্লকের অন্তর্গত হলেও পুলিসের বিভাগ অনুযায়ী পড়ে কালিয়াচক থানার অধীনে। আবার জেলা সদর ইংলিশবাজার থেকে দ্রুত মহদিপুর দিয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় মিলিক সুলতানপুরে। গ্রামে ঢোকার মুখে বিএসএফের কড়াকড়ি নিয়ে একসময় আন্দোলন করে বছর দেড়েক আগে খবরে উঠে এসেছিল এই ছোট গ্রামটি। জেলা প্রশাসন, পুলিস ও বিএসএফের বৈঠকে তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল গ্রামের বাইরে নদী সংলগ্ন এলাকাতেও কাঁটাতার বসানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে সক্রিয়ভাবে। কিন্তু সেই প্রস্তাব এখনও রয়ে গিয়েছে খাতাকলমেই। মিলিক সুলতানপুর লাগোয়া কাঁটাতারহীন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছিল হান জুনেই। পরে ধরা পড়ে বিএসএফের হাতে। ফলে আবারও জোরালোভাবে উঠতে শুরু করেছে মিলিক সুলতানপুর সংলগ্ন ভারতীয় ভূখণ্ডকে পুরোপুরি কাঁটাতার দিয়ে মুড়ে ফেলার দাবি।
ওই গ্রামের বাসিন্দা আলম শেখ, সেলিম শেখ সহ অনেকেরই বক্তব্য, বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় এবং কাঁটাতার না থাকার কারণে ওই চীনা যুবকের নদী পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়তে কোনও সমস্যা হয়নি। তাই অবিলম্বে কাঁটাতার বসানো দরকার। কাঁটাতার না থাকায় তাঁরা যে কতটা সমস্যায় তাও তুলে ধরেছেন মিলিক সুলতানপুরের বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, কাঁটাতারহীন এলাকার জমিতে ফসল চাষ করলেও অনেক সময়ই তা কেটে নিয়ে পালিয়ে যায় বাংলাদেশের কিছু লোক। তাই কাঁটাতার বসানো অত্যন্ত জরুরি। তাঁদের আশঙ্কা, চীনা নাগরিকের অনুপ্রবেশের পথ দিয়ে ভারতে ঢুকে পড়তে পারে অন্যান্য কুখ্যাত জঙ্গিও।
গোটা বিষয়টি নিয়ে বিএসএফ কর্তৃপক্ষের সরাসরি প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও তাঁদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের বেশকিছু সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর কাজ হয়েছে ইতিমধ্যেই। বাকি এলাকাতেও ওই কাজ নির্দিষ্ট সময়েই হবে বলে আশা করা যায়।
উল্লেখ্য, মালদহে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার। বেশ কিছু এলাকায় কাঁটাতার বসানোর পরেও প্রায় ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত এখনও কাঁটাতারবিহীন বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও মালদহে রয়েছে দু’দেশের মধ্যে প্রায় ৩০ কিলোমিটার বরাবর জলসীমান্ত।
সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, এর আগে দু’বার আমরা বিএসএফ কর্তৃপক্ষকে আন্তর্জাতিক সীমান্তে যতটা সম্ভব কাঁটাতার দেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। তারমধ্যে মিলিক সুলতানপুরও রয়েছে। সাম্প্রতিক চীনা অনুপ্রবেশের পর বিষয়টি নিয়ে বিএসএফ কর্তৃপক্ষকে আবারও অনুরোধ করা হবে।
এদিকে, হান জুনেইকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিষয়টি নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি মালদহের পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া। তিনি বলেন, ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে যা পাওয়া গিয়েছে তা যাচাই করা হচ্ছে। পরবর্তীতে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।