বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, লোকসভা ভোটে হারের পর জেলার ব্লকে আমরা পর্যালোচনা বৈঠক করেছি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখেছি সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই মেরুকরণ হয়েছে। সমস্ত ব্লক কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ২১ জুলাইয়ের পর থেকে অঞ্চল বৈঠক শুরু করা হবে। অঞ্চল কমিটির বৈঠকে বুথ কমিটির পরিষ্কার চিত্রটা উঠে আসবে। দুই-তিনটি অঞ্চল নিয়ে একদিনে বৈঠকে বসব। শক্তিশালী বুথ কমিটি তৈরি করা হবে। বুথ কমিটি শক্তিশালী হলে সংগঠন মজবুত হবে এবং মেরুকরণ রোখা যাবে। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটে মেরুকরণের ফলেই আমাদের পরাজয় হয়েছে। মেরুকরণের ভোট হলে এলাকার উন্নয়ন কীভাবে হবে। উন্নয়নের ইস্যুতে ভোট হওয়া উচিত ছিল। আমরা আগামী বিধানসভা ভোটে এই মেরুকরণকে যেমন করেই হোক রুখব। সেজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছি।
জেলার রাজনৈতিক মহলের একটি বড় অংশ মনে করে তৃণমূলের সাংগঠনিক দুর্বলতার সুযোগেই মেরুকরণ সম্ভব হয়েছে। জেলা থেকে শুরু করে ব্লক, অঞ্চল ও বুথ কমিটি পর্যন্ত একাধিক গোষ্ঠী বিবাদে জর্জরিত হয়ে আছে শাসক দল। আর এখান থেকেই তাদের দুর্বলতা শুরু হয়েছে। মানুষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনকল্যণমুখী প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে। রাস্তাঘাট, সেতু থেকে শুরু করে কৃষক বাজার, কৃষি জমির খাজনা মকুব, কৃষকবন্ধু প্রকল্প সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সুবিধা তাঁরা নিয়েছে। সবুজসাথী, সমব্যাথী সবক্ষেত্রে উপভোক্তারা প্রকল্পের সুবিধা নিতে পেয়েছেন। এরপরেও রাজ্যে বিজেপির উত্থান প্রমাণ করেছে উন্নয়ন ইস্যুতে ভোট হয়নি। দল মানুষের কাছে সঠিকভাবে যেতে পারেনি। অর্থাৎ সাংগঠনিক দুর্বলতাই এই ব্যর্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তৃণমূলের দাবি, জেলায় বিজেপির সংগঠন নেই। এরপরেও তারা বিপুল ভোট পেয়েছে। এর কারণই হচ্ছে দলের অন্দরে কোন্দল। লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী কানাইয়ালালবাবু ৪ লক্ষ ৫১ হাজার ৭৮টি ভোট পান। অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী পেয়েছিলেন ৫ লক্ষ ১১ হাজার ৬২৫টি ভোট। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে জয়ী প্রার্থী সিপিএমের মহম্মদ সেলিম এবারও প্রার্থী হন। তিনি মাত্র ১ লক্ষ ৮২ হাজার ৩৫টি ভোট পেয়েছেন। কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি পান মাত্র ৮৩ হাজার ৬৬২টি ভোট। তৃণমূল প্রার্থীর থেকে ৬০ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হন বিজেপির দেবশ্রীদেবী।
জেলার সাতটি বিধানসভা এলাকা নিয়ে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্র গঠিত। বিধানসভা ভিত্তিক ফল বিশ্লেষণ করলে ইসলামপুরে তৃণমূল ৬০ হাজার ৯৭৬টি ভোট পায়। বিজেপি পায় ৫৬ হাজার ৫৩১টি ভোট। গোয়ালপোখরে তৃণমূল ৭৯ হাজার ৩২৮টি, বিজেপি ৩১ হাজার ২৯০টি ভোট পেয়েছে। চকুলিয়াতে তৃণমূল ৫৯ হাজার ১২৯টি, বিজেপি ৫১ হাজার ৩০৪টি ভোট পেয়েছে। তিনটি বিধানসভাতেই তৃণমূল লিড পায়। তবে সেক্ষেত্রে ব্যবধান বেশি ছিল না। কিন্তু বিজেপির অনেক বেশি ব্যবধান আসে বাকি চারটি বিধানসভায়। করণদিঘিতে বিজেপি ১৫ হাজার ৩৩৯, রায়গঞ্জে ৪২ হাজার ২০২, হেমতাবাদে ৬৩৮২ এবং কালিয়াগঞ্জে ৫৬ হাজার ৭৬২ ভোটে তারা লিড পায়।
দলের এই পরাজয়ের পর দলনেত্রী জেলা সভাপতি অমল আচার্যকে সরিয়ে পরাজিত কানাইয়ালালবাবুকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেন। ওই দায়িত্ব পেয়েই কানাইয়ালালবাবু সংগঠনকে মজবুত করতে ময়দানে নেমেছেন। তিনি সবক’টি ব্লক কমিটি ভেঙে দিয়েছেন।