নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: একঝাঁক আর্থিক অনিয়মকে আর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে না। এই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পেমেন্ট অ্যান্ড সেটলমেন্ট সিস্টেম অ্যাক্ট, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট, ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট, ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন অ্যাক্ট এবং ইন্ডিয়ান কয়েনেজ অ্যাক্ট। এই আইনগুলির মধ্যে এমন কিছু ধারা রয়েছে, যেগুলি লঙ্ঘন করা হলে সেটি আইনের চোখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অর্থাৎ অপরাধ প্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হলে কারাবাস হবে। এবার এই ধারাগুলির সংশোধন করা হবে। ওই ধারায় যেখানে আগে অপরাধীদের জেলও হতে পারত, নয়া সিদ্ধান্ত কার্যকর করার পর নিছক জরিমানা দিলেই রেহাই পাওয়া যাবে। এই আইনগুলির কিয়দংশকে শাস্তিযোগ্য অপরাধের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। মূল লক্ষ্য শিল্পমহল, কর্পোরেটকে আরও বেশি বাণিজ্যে আকৃষ্ট করা। অর্থমন্ত্রক এবং নীতি আয়োগের বৈঠকে ঠিক হয়েছে বাণিজ্যে সহায়তা করতে হলে বহু আইনের ফাঁস থেকে মুক্তি দিতে হবে শিল্পমহলকে। এই তালিকায় আগামী দিনে ইনকাম ট্যাক্স আইন, এক্সাইজ আইন এবং জিএসটি আইনের কিছু অংশকে আনা হবে বলে জানা যাচ্ছে। অর্থাৎ যে কোনও কর রাজকোষে জমা না হওয়াকেই আর করফাঁকি হিসেবে গণ্য করা হবে না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনও সংস্থা টিডিএস সময়মতো জমা না দিলে সেটিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধের তালিকায় রাখা আধুনিক বাণিজ্যের সময়োপযোগী নয়। নির্দিষ্ট সময়সীমা ধার্য করে জরিমানার ব্যবস্থা করলেই ওই জটিলতা, সংঘাত এবং দীর্ঘকালীন মামলা মোকদ্দমা এড়ানো যায় বলে মনে করছে সরকার। তাই এই আইন সংশোধন করে বহু ক্ষেত্রেই অপরাধমুক্ত করা হবে।
২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার জন বিশ্বাস আইন এনেছিল। ৪২টি আইন সংশোধন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল জন বিশ্বাস বিলে। এবার সরাসরি আর্থিক অনিয়ম অথবা বিশেষ ক্ষেত্রের কর ফাঁকিকে অপরাধ ধরা হবে না। সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, উন্নত এবং স্বস্তিদায়ক বাণিজ্য আবহ হিসেবে ভারতকে আকর্ষণীয় করে তোলাই সরকারের উদ্দেশ্য। তবে যে আইনগুলির সংশোধন করে কিয়দংশকে অপরাধের সংজ্ঞা থেকে মুক্তি দেওয়া হবে, তার মধ্যে ফেমা থাকায় প্রশ্ন উঠছে, যে আইনে সরাসরি বিদেশি মুদ্রার লেনদেন জড়িত থাকছে, তার ক্ষেত্রে সরকার কেন শৈথিল্য দেখাচ্ছে? সরকারি সূত্রের খবর, আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে যদি টাকা পাচারের সম্পর্ক প্রমাণিত হয়, সেক্ষেত্রে বর্তমান আইনই কার্যকর হবে তথা শাস্তিযোগ্য থাকবে সেই অপরাধ। একমাত্র সরকারের প্রাপ্য কর দেওয়ার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে এই আইনে।