মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য। ... বিশদ
সম্প্রতি কান্দি মহকুমার ভরতপুর ১, বড়ঞা ও খড়গ্রামের একাংশ বন্যা কবলিত হয়েছিল। যদিও সপ্তাহখানেক হল ওইসকল গ্রামগুলি থেকে বন্যার জল নেমে গিয়েছে। তবে কয়েক হাজার হেক্টর আমনের জমি নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তুঁত গাছও। ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আশায় চাষিরা শস্যবিমার ফর্মও পূরণ করে কৃষিদপ্তরে জমাও দিয়েছেন।
এদিকে বন্যা নামতেই গ্রামগুলিতে পুজোর উন্মাদনা দেখা গিয়েছে। বড়ঞা ব্লকের সোনাভারুই, শ্যামপুর, চোঁচোয়া, গড্ডা, সিংহারি, সুখদানপুর, কোল্লা, জাখিনা, ছত্তরপুর, চাঁদপুর গ্রামগুলি এবছর প্লাবিত হয়েছিল। যদিও এই সময় সবক’টি গ্রাম বন্যামুক্ত। প্রতিবছর কোল্লা গ্রামে তিনটি দুর্গাপুজো হয়। এবারও তিনটি পুজো হচ্ছে। বাসিন্দা মেঘনাথ চুনারি বলেন, আমাদের গ্রাম যেভাবে বন্যায় ঘেরা পড়ে গিয়েছিল। তাতে কেউ ভাবেনি যে এবছর পুজো হবে। কিন্তু মা দুর্গা পুজো পাবেন না এটা হয় নাকি? জমির ধান নষ্ট হলেও পুজোর আনন্দ প্রতিটি পরিবারে এসেছে। তবে বাজেট কমেছে অনেকের।
বড়ঞা ব্লকের সোনাভারুই, জাওভরি, ভরোয়া, তারাপুর, মামুদপুর, বৈদ্যনাথপুর গ্রামগুলিও বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। সোনাভারুই গ্রামে এক ন’ বছরের বালিকা দিস্তা বাগদির মৃত্যু হয় বন্যার জলে ভেসে গিয়ে। সোনাভারুই গ্রামে একটি মাত্র পরিবারে দুর্গাপুজো হয় প্রতিবছর। তবে গ্রামের ওই ঘোষবাড়ির পুজোতে সকলেই উন্মাদনায় মেতে উঠেন। বাসিন্দা সনাতন বাগদি বলেন, এবছর বন্যায় গ্রামে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। একটিও জমির ধান ঘরে উঠবে না। তবে বন্যার আতঙ্ক কাটিয়ে পুজোর আনন্দ বেশিরভাগ বাড়িতেই দেখা দিয়েছে। অনেক বাড়িতে হলুদ মুড়ি থেকে নারকেল নাড়ু তৈরি হচ্ছে। তবে সবাই কম খরচায় পুজো সারতে চাইছেন।
এদিকে খড়গ্রাম ব্লকের পদমকান্দি ও ঝিল্লি পঞ্চায়েত এলাকা দ্বারকা নদের জলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পদমকান্দি পঞ্চায়েতের মিরহাটি, ঝাঁঝড়া, ছেঁচুড়িয়া, সর্বমঙ্গলাপুর গ্রামগুলিতে বন্যার জল ঢুকলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এই সকল গ্রামগুলিতে এক থেকে দু’টি করে দুর্গাপুজো হয়ে থাকে।
ঝাঁঝড়া গ্রামের বাসিন্দা তারকনাথ কোনাই বলেন, জমির ধান সব গিয়েছে। অনেকের মাটির বাড়িও পড়ে গিয়েছে। তবুও অনেক বাড়িতে ছোট ছোট ছেলে রয়েছে। ওরা কি এসব বুঝবে। তাই ধার করে হলেও বাচ্চাদের জন্য পুজোর জামা প্যান্ট কিনে দিতে হচ্ছে। আবার অনেকে জমানো টাকা থেকেও পুজোর খরচ করছেন। গ্রামে পুজোর উন্মাদনা ফুটে উঠেছে।