মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য। ... বিশদ
মায়ের মুখের উপর দিয়ে সকলে হেঁটে যাবে, তা মানতে পারেননি এক মহিলা আন্দোলনকারী। থাকতে না পেরে প্রতিবাদ করেছিলেন। কেন প্রতিবাদ করেছেন, প্রশ্ন তুলে তাঁর বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত ‘আন্দোলনের মুখ’রা। নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে ওই মহিলাকে ‘অ্যান্টি সোশ্যাল’ বলে কটাক্ষও করা হয়। ভিন্ন মত পোষণকারী আন্দোলনকারী অবশ্য ওই মহিলার পাশেই দাঁড়িয়েছেন। পাল্টা বলছেন, সোদপুরে প্রতিবাদের নামে এসে অনেকেই দেদার রিল-ভিডিও তৈরি করছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেগুলি পোস্ট করে টাকাও কামাচ্ছেন তাঁরা। তার বেলায় কেন কিছু বলা হচ্ছে না!
জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত মহালয়ার আগের রাতে। কলকাতার মতো সোদপুরেও রাত জাগরণের কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এখন এই ধরনের কর্মসূচিতে আর সেভাবে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে না। আন্দোলনে যোগ দিয়ে মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাস্তায় স্লোগান লিখছিলেন কয়েকজন প্রতিবাদী। সঙ্গে চলছিল ছবি আঁকা। পানিহাটি থেকে ওই কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন রিয়া রায় নামে এক প্রতিবাদীও। সোদপুর মোড়ে আয়োজিত এ সংক্রান্ত যে কোনও কর্মসূচিতেই যোগ দেন তিনি। গতকাল সেখানে পৌঁছে তিনি দেখেন, রাস্তায় দুর্গামূর্তি আঁকা হচ্ছে। আর একজন বড় করে আঁকছেন মা দুর্গার মুখ। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করেন রিয়াদেবী। বলেন, ‘একটু পরেই সকলে মায়ের মুখের উপর দিয়ে হাঁটবে। এটা ঠিক নয়। এটা আমাদের বিশ্বাসের জায়গা। অবিলম্বে এটা মুছে ফেলা উচিত।’ ছবি মোছা তো দূরের কথা, একথা বলার জন্য প্রকাশ্যেই তাঁকে হেয় করেন প্রতিবাদীরা। তাদের ঔদ্ধত্যে মানসিকভাবে অত্যন্ত আঘাত পান রিয়াদেবী। সারারাত থাকার মানসিকতা নিয়ে এলেও কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ি ফিরে যান তিনি। বুধবার সকালে ‘সোদপুর প্রতিবাদী মঞ্চ’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও এই ধরনের ছবি আঁকার তীব্র প্রতিবাদ করেন তিনি। এর পরেই ওই গ্রুপে বিতর্ক চরম আকার নেয়। সেখানে বহু প্রতিবাদী এই ঘটনার চরম নিন্দা করেন। এক প্রতিবাদী লেখেন, ‘প্রয়োজনে এর জন্যও রাস্তায় নামতে পারি। সহিংস ও অহিংস—দুটো পথই জানা আছে।’
পরে রিয়াদেবী বলেন, ‘মা আমাদের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা। যে যতই বলুক, পুজোয় ফিরব না, অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি দিতে লাইনে ঠিকই দাঁড়াবে। সেই মায়ের ছবির উপর দিয়ে সকলে হেঁটে যাবে! এটা মানতে না পেরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। কিন্তু গতকাল রাতে সোদপুর মোড়ে ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আমাকে হেয় করা হয়েছে। এমন জিনিস হলে প্রতিবাদ জানাব।’ অন্যদিকে, রাস্তায় দুর্গার মুখ আঁকার পক্ষে থাকা শৌণক ভট্টাচার্য বলেন, ‘রাস্তায় তো অভয়ার মুখও আঁকা হচ্ছে। সেও তো মেয়ে। তার বেলায় কেন এত প্রশ্ন উঠছে না। আসলে আন্দোলনকে দুর্বল করার চেষ্টা হচ্ছে। অনেকেই আন্দোলনে এসে রিল-ভিডিও করে টাকা কামাচ্ছে। আমরা শুধু বিচার চাই। এই সমস্ত ছবিই প্রতীকী। নাগেরবাজার, যাদবপুর সর্বত্র দুর্গার মুখ আঁকা হচ্ছে।’ প্রতিবাদীরা সাফাই দিলেও ক্ষোভ কিন্তু বাড়ছে আম জনতার।