দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
চারদিনের গঙ্গামহোৎসবে নদীঘাটের সাজানো মঞ্চে বসে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত, ভজন, শাস্ত্রীয় নৃত্য, লোকসঙ্গীতের আসর। সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত চলে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শহরের ময়দানে বসে হস্তশিল্পের মেলা। মেলা উৎসবের আনন্দে শহর জুড়ে রং আর আলোর রোশনাই। উৎসবের টানে ভিড় জমায় দেশ-বিদেশের পর্যটক আর অজস্র ফোটোগ্রাফার। কার্তিক পূর্ণিমার আগের রাতে গঙ্গামহোৎসবের সুরেলা উৎসব শেষ হলে শুরু হয় দেব দীপাবলির প্রস্তুতি। কাছে দূরের গ্রাম, গঞ্জ, শহর থেকে পুণ্যস্নানে আসেন অজস্র মানুষ। যার মধ্যে দেহাতি পরিবারই বেশি। মাঝরাত থেকেই শুরু হয় গঙ্গাস্নান। গঙ্গার ঘাট তখন লাখো মানুষের দখলে। তিথির যোগ মেনে পুণ্যার্জনে ডুব দেন জলে। কার্তিক পূর্ণিমার দিন সকাল পর্যন্ত চলে সেই পুণ্যস্নান। ভিড় বেশি থাকে দশাশ্বমেধ আর পঞ্চগঙ্গা ঘাটে। সর্বক্ষণ মাইকে বাজছে মন্ত্রপাঠ আর গঙ্গাভজন।
ভোরের আলো ফুটলে স্নান সেরে ঘাটে বসেই মেয়েরা ব্রতকথা পাঠ করেন। সব্জি এবং ফুলের ঢিপি বানিয়ে রাধা দামোদরের পুজোও করেন অনেকে। এছাড়াও শিব ও গঙ্গাপুজোও চলে সাড়ম্বরে। লাখে মানুষের গঙ্গাস্নান শেষ হলে দুপুরের আগেই শুরু হয় ঘাট ধোওয়ার পালা। সন্ধের মুখে ঘাটের সিঁড়ি, বুরুজে লক্ষ লক্ষ ঘিয়ের প্রদীপ বসানো হয়। বাঁশের ডগায় ঝোলানো হয় আকাশ প্রদীপ। ঘাট লাগোয়া মন্দির, হাভেলিগুলো সাজানো হয় বিজলি বাতির মালায়। কার্তিক পূর্ণিমার দিন সন্ধের সময় শহরের ভিড় নামে গঙ্গার ঘাটগুলোতে। দিনের আলো নিভলে ঘাটে ঘাটে জ্বলে ওঠে লাখো ঘিয়ের প্রদীপ। অখণ্ড আলোকমালায় সেজে ওঠে কাশীর গঙ্গাতীর। পঞ্চগঙ্গা ঘাটে বিশেষ পুজোপাঠ, আরতি দিয়ে শুরু হয় দেব দীপাবলি উৎসব। প্রতিটি ঘাটেই একে একে শুরু হয় গঙ্গারতি। সব থেকে বর্ণাঢ্য আরতি হয় দশাশ্বমেধ ঘাটে। নানা ধরনের গঙ্গারতি হয়। জলে ভাসানো হয় অজস্র প্রদীপ। সুসজ্জিত পুরোহিতের দল ঘণ্টাখানেক ধরে গঙ্গাপুজো ও গঙ্গারতি করেন। গঙ্গায় নৌকা নিয়ে ভেসে পড়ে আলোকোজ্জ্বল ঘাটের বৈচিত্র্যময় ছবি দেখা এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা। দেব দীপাবলির সন্ধেতে ঘাটে ঘাটে আলোরমালা আকাশে আতসবাজির ফোয়ারা বারাণসীকে উৎসবের আলোয় ভরিয়ে দেয়।
ছবি: সুবীর কাঞ্জিলাল