মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য। ... বিশদ
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেসিবি ও ট্রাক্টরের ব্যবসা ছিল আব্দুলের। বেশ কয়েক বছরে ব্যবসা ফুলে ফেঁপে ওঠে। ব্যবসায় উন্নতি করার লক্ষ্যে আরও একটি জেসিবি কেনার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। একতলা বাড়িতেও তাঁর পরিবারের মন ভরছিল না। সেই আব্দুল ও তাঁর পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যার পরিকল্পনা করল কে? পুলিস থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দা—ধন্দে সকলেই। পাশের ঘরে শুয়ে থাকার কারণে প্রাণ বেঁচে গিয়েছে আব্দুলের বড় ছেলে বোলপুরে নব নালন্দা স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ওয়াসিম আখতারের। মা ও ভাইকে হারিয়ে সে এখন দিশেহারা। বাবাও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবসায়িক শত্রুতা নাকি সম্পর্কের টানাপোড়েন, খতিয়ে দেখছে পুলিস। ইতিমধ্যেই বোলপুরের এসডিপিও রিকি আগরওয়ালের নেতৃত্বে ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে বোলপুর থানা।
রজতপুর মৌজার নতুনগীত গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন আব্দুল। পরিবারে চার ভাই। প্রত্যেকের আলাদা সংসার। তাঁদের মধ্যে আলিম মেজো। বড় ভাই সেকেন্দার আলি স্থানীয় জলদপ্তরে কাজ করেন। সেজ ভাই শেখ হালিমের গাড়ি ভাড়ার ব্যবসা রয়েছে। ছোট ভাই মোহাম্মদ আলি চাষবাস করে দিন গুজরান করেন। ভাইদের মধ্যে আর্থিকভাবে কিছুটা সম্পন্ন ছিলেন আলিম। গ্রামবাসীদের দাবি কর্মঠ আলিম গ্রামে অজাতশত্রু ছিলেন। জেসিবি ও ট্রাক্টর দুটো থাকার কারণে বোলপুরের অনেক নির্মাণ ঠিকাদার তাঁকে নিয়মিত কাজ দিতেন। ফলে কয়েক বছরের মধ্যেই তাঁর ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে। আলিমের জ্যাঠতুতো ভাই শেখ উজির বলেন দাদা ধর্ম ও কর্মের মধ্যে থাকতেন বলে স্থানীয়রা তাঁকে এলাকার মসজিদ কমিটির প্রধান করেছিলেন। ওর একতলা বাড়ি ছিল। পরবর্তীতে দোতলা বাড়ির পরিকল্পনা করলেও ব্যবসা বাড়াতে আরও একটি জেসিবি মেশিন কেনার চিন্তাভাবনা শুরু করেছিল দাদা। কিন্তু তার আগেই সব শেষ। ব্যবসার দিক থেকে দাদার কোনও শত্রু রয়েছে বলে আমার জানা নেই। শত্রুতা থাকলে মারধর করলেও সেটা ঠিক ছিল। দাদার এত বড় সর্বনাশ হতো না। এরকম করে তিন-চার বছরের বাচ্চা ও স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলার মত নৃশংস ঘটনা যে কেউ ঘটাতে পারে, তা আমরা কল্পনাও করতে পারছি না।
তবে, সাংবাদিকদের কাছে কাঁদতে কাঁদতে ওয়াসিম জানিয়েছে, রাতে অগ্নিকাণ্ডের সময় একজনকে দেখেছি। যাকে সকালে আর দেখা যায়নি। আমি জানি সে-ই এই অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে। সেটা আমি পুলিসকে জানাব। কে সেই ব্যক্তি? কী তার উদ্দেশ্য? এই নিয়ে ধন্দ আর রহস্য ক্রমেই বাড়ছে। পুলিস সেই অজ্ঞাত পরিচয় জানার চেষ্টা চালাচ্ছে। ওয়াসিম জানিয়েছে, সে পুলিসকে সবরকম সহযোগিতা করবে। বাড়িটি ঘিরে নিরাপত্তারক্ষীরা। (ডানদিকে) উপরে আব্দুল আলিম। (মাঝখানে) মৃত আয়ান। (নীচে) আব্দুলের বড় ছেলের সঙ্গে কথা বলছেন জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ। নিজস্ব চিত্র