গৃহে শুভকর্মের আয়োজনে ব্যস্ততা। বন্ধুসঙ্গ ও সাহিত্যচর্চায় মানসিক প্রফুল্লতা। উপার্জন বাড়বে। ... বিশদ
শিল্প ও সংস্কৃতির পীঠস্থান বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসে যত্রতত্র রয়েছে বিভিন্ন স্থাপত্য ও ভাস্কর্য। এরমধ্যে অধিকাংশই আচার্য নন্দলাল বসু ও রামকিঙ্কর বেজের সৃষ্টি। রামকিঙ্করের তৈরি মূর্তিগুলি মূলত কলাভবন ও সঙ্গীত ভবন সংলগ্ন এলাকাতেই রয়েছে। এরমধ্যে সাঁওতাল পরিবার, কলের বাঁশি, বুদ্ধদেব, সুজাতা, ধান ঝাড়াই উল্লেখযোগ্য। ৩০ থেকে ৫০ দশকের মধ্যে এই মূর্তিগুলি তিনি ক্যাম্পাসে স্থাপন করেছিলেন। মুক্ত পরিবেশে থাকার আঙ্গিকেই মূর্তিগুলো তিনি তৈরি করেছিলেন। কলাভবন কর্তৃপক্ষও সেই ভাবধারায় মূর্তিগুলো উন্মুক্ত অবস্থায় রেখেছিল। কিন্তু এএসআই ভাস্কর্যগুলিকে ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী তকমা দেয়। এরপর থেকেই মুক্ত পরিবেশে শিল্প সৃষ্টির ধারা শুরু হয় শান্তিনিকেতনে। শিক্ষকদের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরাও পরীক্ষামূলকভাবে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন স্থাপত্য ও ভাস্কর্য গড়ে তুলেছেন। যা শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল এই হংসমূর্তি। তিন ফুট উচ্চতার হংসমূর্তিটি কলাভবন ও সঙ্গীত ভবনের মাঝে কালোবাড়ির সামনে রয়েছে। মূর্তিটি কে করেছে জানা না গেলেও প্রায় ৪০ থেকে ৫০ বছরের পুরনো বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই মূর্তিটি আচমকা ভাঙ্গা পড়ে থাকতে প্রথম দেখেন পড়ুয়ারা। এরপর বিষয়টি তারা কলাভবন কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন। কিন্তু তারপরেও এই ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা এখনও জানা যায়নি। এমনকী এই বিষয়টি চেপে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
কলাভবনের ঐতিহ্যবাহী কালোবাড়ির সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই অস্থায়ীভাবে সবুজ চাদরে বাড়িটিকে মুড়ে ফেলেছে বিশ্বভারতীর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। তার মাঝেই এই মূর্তি ভাঙার বিপত্তি কীভাবে ঘটল, তার কোনও জবাব নেই খোদ নিরাপত্তা বিভাগের কাছে। এ বিষয়ে এক আধিকারিক বলেন, প্রতিটি ভবনের সামনে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়ন থাকলেও কালোবাড়ির সংলগ্ন এলাকায় কোনও নিরাপত্তা রক্ষী থাকে না। নেই সিসি ক্যামেরাও। তাই কারা এই ঘটনা ঘটাল, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে, হেরিটেজের অন্তর্গত ওই এলাকায় কেন সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তারক্ষী নেই, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তনীরা। মূর্তিটি ভাঙা দেখে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ সঙ্গীত ভবনের প্রাক্তনী তথা কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্রের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ডঃ গৌরব চৌধুরী। তিনি বলেন ছাত্রাবস্থা থেকে ওই মূর্তিটি দেখছি। তাই এই গর্হিত কাজ কে করেছে, তা কর্তৃপক্ষের তদন্ত করে দেখা উচিত। এটা মোটেই কাম্য নয়। যদিও এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। • নিজস্ব চিত্র