গৃহে শুভকর্মের আয়োজনে ব্যস্ততা। বন্ধুসঙ্গ ও সাহিত্যচর্চায় মানসিক প্রফুল্লতা। উপার্জন বাড়বে। ... বিশদ
এক এক করে মহিলারা এগিয়ে এসে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের এক মাসের ভাতা(এক হাজার টাকা) তুলে দিচ্ছেন ইউসুফের হাতে। বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার মহিলাদের উপহার নেওয়ার সময় বারবার কালো রোদ চশমার কাচ তুলে চোখ মুছছেন। ইউসুফের চোখে অবারিত অশ্রু দেখে মুর্শিদাবাদ বহরমপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক সভাপতি অপূর্ব সরকারকেও চোখ মুছতে দেখা গেল। ৫০ জন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের উপভোক্তাকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে মাইক্রোফোন হাতে তুলে নিয়েও কথা সরল না তারকা ক্রিকেটারের মুখে। মঞ্চ থেকে নেমে কিছুটা ধাতস্থ হয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে ইউসুফ বললেন, বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ এতদিন পুষে রেখেছিলাম। আজ যেন তেমনই আনন্দ পেলাম। শুক্রবার বিকেলে বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আইজুদ্দিন মণ্ডলের নেতৃত্বে রাজধরপাড়া নেতাজি সঙ্ঘের মাঠে ইউসুফ পাঠানের জনসভা ও রোড শোয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, ইউসুফ আসছেন শুনে এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা আমাকে বলেন, তৃণমূল প্রার্থীর প্রচারে আমরা একমাসের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দিতে চাই। মহিলাদের স্বতঃস্ফূর্ত ইচ্ছায় আমি বাধা দিইনি।
সভা শুরুর দু’ঘণ্টা আগে থেকে কাতারে কাতারে মানুষ রোদ মাথায় ইউসুফের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। মার্জিনা বিবি, খালিদা বিবি, সবিতা ভাদুড়ি, সুরুবালা দাস, শ্যামলী হাজরা, সোনাভান খাতুনরা সকাল সকাল সংসারের কাজ সামলে মঞ্চের পাশে ইউসুফের অপেক্ষায় ছিলেন। হাজিপাড়ার বাসিন্দা মার্জিনা বিবি বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের ১২ মাস লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভাতা দিচ্ছেন। আমরা আমাদের প্রার্থীকে একমাসের টাকা দিলাম। হেকমপুরের বাসিন্দা বিলকিস বেগম বলেন, আমরা জানি ইউসুফের মতো বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারের টাকার অভাব নেই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই এই সিদ্ধান্ত। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের উপভোক্তাদের টাকা দিতে দেখে এলোফা বেওয়া ছুটে যান বাড়িতে। হন্তদন্ত হয়ে ফিরে মঞ্চে উঠে ইউসুফের হাতে বিধবা ভাতার এক হাজার টাকা তুলে দিলেন। ইউসুফের মাথায় হাত রাখতেই ইলোফা বেওয়াকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন তিনি।
সূতি এলাকায় প্রচার সেরে বিকেল ৪টে নাগাদ রাজধরপাড়া খেলার মাঠে পৌঁছন ইউসুফ। তখন তিনি জানতেন না তাঁর জন্য কী বিস্ময় অপেক্ষা করছে। সোজা বাংলায় বলেন, কেমন আছেন? ১৩ মে ও ৪ জুন খেলা হবে? গ্যালারি কাঁপানো জবাব পেয়ে জুম্মা মোরারক জানিয়ে বলেন, আপনারা দশ পা এগিয়ে এলে আমি ১০০ পা এগিয়ে যাব। আপনারা আমার, মমতা দিদির শক্তি বাড়ান। দিল্লিতে গিয়ে আপনাদের কাজ করব।
রোড শোয়ে দু’হাজার বাইক আর এক হাজার টোটোর মিছিল আছড়ে পড়ল বহরমপুর-হরিহরপাড়া রাজ্য সড়কে। প্রতিটি বাইকে দু’জন, টোটোয় পাঁচ থেকে ছ’জন সমর্থক নিয়ে ইউসুফের হুডখোলা গাড়ি কুতবাপুকুর, হাতিনগরের দিকে গড়াল। বৃহস্পতিবার কান্দির প্রচারে আর এক পাঠান পাঞ্চ দেখেছেন মানুষ। জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকারকে বাইকের পিছনে বসিয়ে দোহালিয়া মোড় থেকে আন্দুলিয়া প্রচার করেন ইউসুফ।
নিজস্ব চিত্র