উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
মঙ্গলবার কলকাতায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের রোড-শো চলাকালীনই বিদ্যাসাগর কলেজে তাণ্ডব চলে। কলেজ ভাঙচুরের পাশাপাশি বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়। এই ঘটনায় বিজেপিকে দায়ী করে প্রচারে নামে তৃণমূল। এদিন সোশ্যাল সাইটে মুখ্যমন্ত্রী সহ তৃণমূল নেতা- কর্মীরা বিদ্যাসাগরে ছবি প্রোফাইল পিকচার করে ঘটনার প্রতিবাদ জানান। কিন্তু এদিন বিকেল থেকেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করে তৃণমূল। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ সিউড়ি শহর তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে মিছিল করে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। দলীয় কার্যালয় থেকে পোস্ট অফিস মোড় হয়ে শহরে ঘোরে এই মিছিল। নেতৃত্বে ছিলেন শহর সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার।
অন্যদিকে, এদিন প্রতিবাদ মিছিল হয় জেলার বাণিজ্য শহর সাঁইথিয়ায়। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক নীলাবতী সাহা, জেলা সম্পাদক দেবাশিস সাহা, শহর সভাপতি পিনাকী দত্ত, ভাইস চেয়ারম্যান কাজি কামাল হোসেন। একইভাবে প্রতিবাদ মিছিল হয় দুবরাজপুরেও। প্রাক্তন চেয়ারম্যান পীযূষ পান্ডের নেতৃত্বে মিছিলে পা মেলান বহু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। তবে শুধু শহর এলাকায় নয়, গ্রামীণ এলাকায়ও মিছিল করে তৃণমূল। এদিন সিউড়ি-২ ব্লকের সদর কার্যালয় পুরন্দরপুরেও মিছিল করে তৃণমূল। নেতৃত্ব দেন দলের ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম। মিছিল হয় রাজনগর, খয়রাশোলেও। অন্যদিকে, এদিন সকালে সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে প্রতিবাদ সভা করে এসইউসি। সেখান থেকে পুরসভার কাছেও প্রতিবাদ সভা করে। সেখানে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মাল্যদান করে তাঁদের সম্মান জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন বীরভূম কেন্দ্রের তাদের প্রার্থী আয়েষা খাতুন। এছাড়াও নলহাটিতে তাদের কর্মসূচি হয়।
এদিন বিকেলে রামপুরহাট শহরে ধিক্কার মিছিল করে তৃণমূল। রামপুরহাট-১ ব্লক ও শহর তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে এই মিছিলে পা মেলান মহকুমা পর্যবেক্ষক তথা জেলা সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য, ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেন, শহর সভাপতি অমিত চক্রবর্তী, রামপুরহাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশ্বিনী তেওয়ারি প্রমুখ। রামপুরহাটের দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হওয়া বিশাল মিছিল গোটা শহর প্রদক্ষিণ করে পাঁচ মাথায় জড়ো হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন নেতৃত্বরা। ত্রিদিববাবু বলেন, বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে বিজেপি প্রমাণ করল তারা কত বড় ফ্যাসিস্ট। তারা বাংলার মানুষকে অপমান করেছে। অন্যদিকে, বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতি নিয়ে ধিক্কার মিছিল হয়। ডাকবাংলো মোড় থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি গোটা শহর ঘোরে। নেতৃত্ব দেন দলের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মন।
এদিন বোলপুরে বিজেপি বিরোধী ধিক্কার মিছিল করে বোলপুর শহর ও ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি বাংলার সংস্কৃতিকে নষ্ট করে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে। তারই প্রতিবাদে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এক হওয়ার ডাক দিয়ে এই মিছিল করা হয় বোলপুরে। মিছিলটি তৃণমূল জেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে শান্তিনিকেতন যাওয়ার রাস্তা হয়ে মসজিদ রোড ঘুরে জেলা কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন দুবরাজপুরের বিধায়ক নরেশচন্দ্র বাউড়ি ও বোলপুর পুরসভায় তৃণমূল পরিচালিত ওয়ার্ডগুলির কাউন্সিলার সহ কর্মী-সমর্থকরা। মিছিল থেকে বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।
একইভাবে বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদ জানিয়ে ধিক্কার মিছিল করেন বোলপুর শহরের সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষজন। উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। বোলপুর শহর ঘুরে ফের বিদ্যালয়ের সামনে শেষ হয়। এই মিছিলে পা মেলান অধ্যাপক, কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকর্মী সহ অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা। মিছিলে কোনও বিশেষ দলের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনও স্লোগান দেওয়া হয়নি। তাঁদের দাবি, রাজনীতি নিজের জায়গায়। কিন্তু সেই ঘৃণ্য রাজনীতি থেকে নিস্তার পেলেন না বিদ্যাসাগরও। মিছিলের মধ্য দিয়ে তাঁরা দাবি জানিয়েছেন, অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।