মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য। ... বিশদ
তিস্তা নদীর ভাঙনে বিধ্বস্ত জনপদগুলির মধ্যে তিস্তাবাজার অন্যতম। এটি কালিম্পং-১ ব্লকে। সংশ্লিষ্ট গ্রামের একাংশ গ্রাস করেছে খরস্রোতা তিস্তা। রাস্তার একাংশ ও বেশকিছু বসতভিটা নদীগর্ভে চাপা পড়েছে। এখানে ৫২ জন গ্রামবাসী কার্যত উদ্বাস্তু। তাঁদের কেউ পাশের গ্রামের আত্মীয়, আবার কেউ ভাড়া বাড়িতে আছেন। জিটিএ’র চিফ মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, প্রায় একবছর আগে প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমে হ্রদ বিস্ফোরণের পরই তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়। নাব্যতা কমেছে তিস্তার। যারজেরে ওই গ্রামের নকশা বদল হয়েছে। জেলার মানচিত্র থেকে কার্যত হারিয়ে গিয়েছে গ্রামের একাংশ। এজন্য তিস্তা সংস্কার করতে হবে। নদীর নাব্যতা বাড়াতে হবে।
কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালাসুহ্মণ্যম টি বলেন, নদীর গতি প্রকৃতি ও সংশ্লিষ্ট গ্রামের উপর নজর রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের পাশে রয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি, সমগ্র পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা যা নির্দেশ দেবে সেই মতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শুধু তিস্তাবাজার নয়, কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের নকশাও পরিবর্তন হয়েছে। তিস্তার ছোবল ও ধসের জেরে সংশ্লিষ্ট রাস্তার প্রায় ৪০টি জায়গা বিধ্বস্ত। যারমধ্যে সেলফিধারা, বিরিকধারা, চিত্রে, শ্বেতীঝোরা, ২৮ মাইল প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বেশকিছু জায়গায় মূল রাস্তাই নেই। নদী পাহাড়ের গা ঘেঁষে বইছে। সেখানে পাহাড় কেটে নতুন করে রাস্তা বানানো হয়েছে। তা হলেও সেই রাস্তা বিপজ্জনক। স্থানীয়দের বক্তব্য, জেলার মানচিত্র থেকে রাস্তাটি কার্যত বিলুপ্ত হওয়ার পথে।
কয়েকদিন আগে উত্তরবঙ্গের দুর্যোগ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পর সংশ্লিষ্ট রাস্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাস্তাটি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং সেনা বাহিনীর সঙ্গে রাজ্যের আধিকারিকদের কথা বলার নির্দেশ দেন। জিটিএ’র চিফ মুখপাত্র বলেন, এ ব্যাপারে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক অবশ্য বলেন, বিষয়টি সরকারের নজরে রয়েছে। বর্ষার পর সরকার এ ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেই আশাবাদী।
এদিকে, তিস্তার থাবায় জলপাইগুড়ি জেলার অবস্থাও একই। জেলার মানচিত্র থেকে কার্যত বিলুপ্ত লালটং, চমকডাঙি গ্রাম। এটি ফুলবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে। পুজোর মুখে বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে তিস্তার ভাঙন। রাস্তা, বাড়ি, চাষের জমি গিলেছে নদী। ফলে গ্রামের ৭০টি পরিবারের ৩৫০ জন কার্যত উদ্বাস্তু। তিস্তা গতিপথ পরিবর্তন করায় এমন পরিস্থিতি, জানিয়েছেন সেচদপ্তরের উত্তর-পূর্ব বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক। শুক্রবার শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব ও জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে ওই গ্রামে যান। মেয়র বলেন, বিপন্ন গ্রামবাসীদের পাশে রয়েছি।