সংবাদদাতা, মাথাভাঙা: মাথাভাঙা-২ ব্লকে বিগত বছরের চেয়ে ৫০০ হেক্টর বেশি জমিতে এবার ভুট্টা লাগিয়েছিলেন চাষিরা। কৃষিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী এবারে ভুট্টার ফলন বেশি না হলেও ভালো দাম রয়েছে। পাইকারদের হাত ধরে ইতিমধ্যেই এখানকার ভুট্টা রাজ্যের একাধিক পশুখাদ্য তৈরির কারখানা সহ ভিনরাজ্যে পাঠানো হচ্ছে। গতবছর এ সময়ে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা প্রতি কুইন্টাল ভুট্টা বিক্রি হতো। এবারে এখনই দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন চাষিরা। বিঘা প্রতি ১১ থেকে ১৪ মণ পর্যন্ত ফলন হচ্ছে।কৃষি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যাঁরা আগাম ভুট্টা লাগিয়েছিলেন তাঁদের ফলন কিছুটা হলেও ভালো। কিন্তু দেরিতে যাঁরা লাগিয়েছেন চড়া রোদের কারণে তাঁদের ফলন কিছুটা মার খাচ্ছে। বিশেষ করে উঁচু জমিতে যাঁরা লাগিয়েছিলেন তাঁদের ভুট্টা গাছে সেচ ব্যবহার করতে হচ্ছে। অনেক গাছে ঠিকভাবে মোচা আসেনি। ওসব জমিতে ফলন অনেকটাই কম। তবে ফলনে কিছুটা মার খেলেও দাম ভালো থাকায় খুশি কৃষকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, আগাম বৃষ্টি হলে ভালো ফলন পাওয়া যেত। মাথাভাঙা-২ ব্লকের রুইডাঙা দ্বিজেন সরকার, উনিশবিশার খগেন দেবনাথ বলেন, এবারে ভুট্টার ফলন গড় হিসেবে ভালো হয়েছে। এখনও ভুট্টা তোলার কাজ করছি আমরা। আগাম যে জমিতে লাগিয়েছিলাম সেখান থেকে বিঘা প্রতি ১৩ থেকে ১৫ মণ পেয়েছি। দেরিতে যেটা লাগিয়েছি সেটাতে ১০ থেকে ১২ মণ হবে। বাইরে থেকে পাইকাররা এসে ভুট্টা নিয়ে যাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, গতবছর মাথাভাঙা-২ ব্লকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছিলেন কৃষকরা। এবারে ভুট্টার চাষ হয়েছে প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে। ভুট্টা চাষে শ্রমিক কম প্রয়োজন হয়। এ কারণে সম্প্রতি কৃষকদের ভুট্টা চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।
একইসঙ্গে মাথাভাঙা-২ ব্লকের ঘোকসাডাঙা সহ বেশ কয়েকটি বাজারে পাইকারি কৃষিপণ্যের বাজার বসে। সেখানে ভিনরাজ্যের পাইকাররা আসেন। রেল যোগাযোগ থাকায় বাইরে সহজে কৃষিপণ্য নিয়ে যাওয়া যায়। ভুট্টা সহ নানা সব্জি সারা বছর চাষ করেন মাথাভাঙা-২ ব্লকের কৃষকরা।
মাথাভাঙা-২ ব্লক সহ কৃষি আধিকারিক মলয়কুমার মণ্ডল বলেন, ব্লকে এবার ভুট্টার চাষ কিছুটা বেশি হয়েছে। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় ফলন কিছুটা কম। তবে বাজার ভালো থাকায় লোকসান হবে না চাষিদের। আমরা কৃষকদের ভুট্টা চাষে সহায়তা করছি। ভুট্টায় রোগপোকার আক্রমণ হলে কৃষকদের সঠিক পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।