মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য। ... বিশদ
চিংড়ি নিয়ে বাঙালি সর্বদা দু’ভাগে বিভক্ত থাকে। বিশেষজ্ঞরাও কিছুতে খুঁজে পান না, ঠিক কবে থেকে চিংড়ি এপার বাংলা আর ইলিশ ওপার বাংলার সিগনেচার হল। অনেকে আবার চিংড়ি-ইলিশের দ্বৈরথে বাজার অর্থনীতির শর্তও দেখতে পান। চিংড়িকে ‘জলের পোকা’ বলে কম কটাক্ষ করেন না ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা। ‘এবার বুঝুক চিংড়িই আমাদের দেশের মুখ কেমন উজ্জ্বল করল’, বক্তব্য এক মোহনবাগান সমর্থকের। বছর সত্তরের অবিনাশ মুখোপাধ্যায় আর এক খাদ্যরসিক। তিনি বলেন, ‘খাবারের মধ্যে আবার মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল কী মশাই? ইলিশ কি শুধু পদ্মাতেই পাওয়া যায়? এপার বাংলার ইলিশের কি স্বাদ নেই নাকি?’
চিংড়ির নানাবিদ পদের চাহিদা সর্বদাই থাকে বাজার হোক বা রেস্তরাঁয়। কলকাতার বাঙালি রেস্তরাঁগুলিতে এখন চিংড়ির মালাইকারি চেখে দেখতে গেলে কম টাকা গুনতে হয় না। আবার মাছের বাজারেও দাম বেশ চড়া। ফলে চাইলেই সকলের পাতে সবসময় জোটে না চিংড়ি। আবার বাঙালি চিংড়িকে ঠিক ‘সামুদ্রিক মাছ’ বলে দেগে দিতেও রাজি নয়। আপামর বাঙালির কাছে সমুদ্র বলতে দিঘা, পুরী বা মন্দারমণি। মন্দারমণির সমুদ্র সৈকতের মাছের দোকানগুলিতেও চিংড়ির চাহিদা কম নয়। গেঞ্জি-হাফ প্যান্ট পরা এক বাঙালি সমুদ্রে স্নান করে এসে বললেন, ‘এই চিংড়ি-পমফ্রেটকে সমুদ্রের মাছ বলে দাগিয়ে দিলে প্রতিবাদ করব। যেভাবে প্রতিদিন সন্তোষপুর বাজারে দেখি, মনে হয় পাশের পুকুরেই হয়।’ শুনে তাঁর বন্ধুর বক্তব্য, ‘সত্যিই তো! চিংড়ি যে আসলে সমুদ্রের মাছ মাঝে মধ্যে ভুলেই যাই। কিন্তু পুকুরে-নদীতেও তো চিংড়ি হয়। গঙ্গার স্বচ্ছ চিংড়ি খেয়ে দেখেছেন? মুখে লেগে থাকবে চিরকাল।’ বাংলার খাবার-দাবার নিয়ে চর্চা করেন রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। তাঁর লেখা বইও আছে। তিনি বলেন, ‘রাধাপ্রসাদ গুপ্তর একটি প্রবন্ধে চিংড়ির মালাইকারি নিয়ে পড়েছিলাম, এটা আসলে মালয় কারি। মালয় দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চলে নারকোল দিয়ে রান্না করাটা বৈশিষ্ট। চিংড়ি তো সামুদ্রিক পোকা। সম্ভবত ওখানেই এই ধরনের রান্নার উত্পত্তি। আমরা যেভাবে মালাই শব্দটা ব্যবহার করি দুধের একটা অংশ হিসেবে। সেখানে নারকেলের দুধ সে অর্থে ব্যবহার হয়। সেখান থেকেই মালাইকারি এসেছে।’