পরিবারের কারও স্বাস্থ্য অবনতিতে মানসিক চিন্তা। অপ্রিয় সত্য কথার জন্য সামাজিক ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে পারেন। ... বিশদ
বক্তা আবহাওয়া বিজ্ঞানী প্রীতম চক্রবর্তী। দেশের হয়ে গবেষণায় দক্ষিণ মেরুতে পড়েছিলেন ৪০০ দিন। সদ্য ফিরেছেন জলপাইগুড়িতে। আর ফিরেই শোনালেন এই অভিজ্ঞতার কথা। বললেন, ‘আমরা ছিলাম আন্টার্কটিকার পূর্বপ্রান্তে ভারতী রিসার্চ স্টেশনে। তার কিছুটা দূরেই রাশিয়ার রিসার্চ স্টেশন। রয়েছে চীনেরও গবেষণাকেন্দ্র। চোখের সামনে মা পেঙ্গুইনকে ডিম দিতে দেখেছি। সেই ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়ার পর পরিবারের নতুন সদস্যকে নিয়ে অন্যত্র চলে যেত পেঙ্গুইনের দল। চোখ-মুখের ইশারায় যেন বুঝিয়ে দিত, ওদের সাম্রাজ্যে আমরা এলিয়েন! তবে হ্যাঁ, সারা বছর পেঙ্গুইন দেখা যেত না। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত গায়ে কার্যত লেপটে থাকত ওরা।’
আন্টার্কটিকায় কতটা বরফ গলছে? সেখানকার গ্লেসিয়ারগুলির কী অবস্থা? সেসব খতিয়ে দেখার পাশাপাশি দক্ষিণ মেরুর ওজোন স্তর, তুষারপাত, তাপমাত্রা, বায়ুচাপ, রেডিয়েশন সহ নানা বিষয়ে গবেষণার সুযোগ পেয়েছিলেন জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সায়েন্টিফিক অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রীতম চক্রবর্তী। শহরের গোমস্তাপাড়ার বাসিন্দা এই আবহাওয়া বিজ্ঞানী দক্ষিণ মেরুর উদ্দেশে রওনা দেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে। প্রথমে গোয়ায় এনসিপিওআর দপ্তরে রিপোর্টিং করেন প্রীতম। সেখান থেকে বিমানে কেপটাউন। তারপর ফের উড়ানে আন্টার্কটিকা। ফিরেছেন গত ডিসেম্বরে। বললেন, ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর পোলার অ্যান্ড ওশান রিসার্চের (এনসিপিওআর) উদ্যোগে আমরা দক্ষিণ মেরুতে পা রাখি। আমাদের সঙ্গে ইসরোর বিজ্ঞানীরাও ছিলেন। মোট ২২ জনের টিম। তবে আবহাওয়া বিজ্ঞানী হিসেবে গোটা দেশ থেকে দু’জন ছিলাম। আমি ও মেঘালয়ের একজন।’ শীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি। গরমে সর্বোচ্চ ৫ ডিগ্রি। এই পরিবেশে টানা গবেষণা চালিয়ে যেতে হয়েছে প্রীতমবাবুকে। বলছিলেন, ‘আমাদের গবেষণাকেন্দ্র একটি আইল্যান্ডে। গরমে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করতাম হেলিকপ্টার। কিন্তু অন্যসময় ভরসা পিস্টন বুলি কিংবা স্নো স্কুটার।’ তিমির দেখা পেয়েছেন? হাসলেন গবেষক... ‘নাঃ, ওটা দেখতে পাইনি। তবে সীল চাক্ষুষ করার সৌভাগ্য হয়েছে।’ বরফ তো বটেই, বেগ দিত প্রবল হাওয়াও। বললেন, ‘ঘণ্টায় দেড়শো কিমি বেগে পর্যন্ত হাওয়া পেয়েছি। এপ্রিল থেকে অক্টোবর পুরোটা ঢেকে যেত বরফে। বন্ধ হয়ে যেত উড়ান, জাহাজও। আগে থেকে খাবারদাবার মজুত করে রাখতে হতো। কেপটাউন থেকে খাবার আসত। ভারত থেকেও কিছু যেত।’