দেশ

১০ মাসে দেশে ডিজিটাল অ্যারেস্টের ফাঁদে ১ লক্ষ, ২১৪০ কোটির প্রতারণা

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ শব্দটা শুনলেই অনেকেই আজকাল আঁতকে উঠছেন। কারণ, তাঁদের কাছে ফোন আসছে ইডি, সিবিআই, এনসিবি বা অন্য কোনও কেদ্রীয় এজেন্সি থেকে। সেই কণ্ঠস্বর শুনে হাত-পা কাঁপেনি এমন মানুষের সংখ্যা হাতেগোনা। ভয়ে গুটিয়ে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন এবং এখনও করে চলেছেন। আর সেকেন্ডের মধ্যে খুইয়ে ফেলছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রতারণার নয়া এই ফাঁদে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নাম করেই মাত্র দশ মাসে দেশ থেকে ২ হাজার ১৪০ কোটি টাকা হাতিয়েছে সাইবার জালিয়াতরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অন্তর্গত সাইবার শাখার এই রিপোর্ট শীর্ষ আধিকারিকদের চিন্তা বাড়িয়েছে।
সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় ভারত সরকার ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টাল চালু করেছে। প্রতারকদের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দেশজুড়ে। এমনকী বিদেশ থেকেও তার কলকাঠি নাড়া চলছে। যে কোনও রাজ্যের নাগরিক এই ধরনের ঘটনার শিকার হলে যাতে দ্রুত টাকা ফেরত পান এবং অপরাধীদের শিকড় পর্যন্ত পৌঁছনো যায়, সেই লক্ষ্যেই এমন পোর্টাল। কোন কোন রাজ্যে সাইবার অপরাধীরা বেশি সক্রিয় তার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেছেন সাইবার শাখার কর্তারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, ডিজিটাল অ্যারেস্টের ভয় দেখিয়ে প্রতাকরকদের সবচেয়ে বেশি ফোন যাচ্ছে দিল্লি, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাত, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিতে। পোর্টালে জমা পড়া অভিযোগ থেকেই তা স্পষ্ট। তথ্য বলছে, কেউ খুইয়েছেন ৩০ লক্ষ, আবার কেউ এক কোটি টাকা। দাবি মতো ‘তোলা’ দেওয়ার পরও সমস্যা না মেটায় অভিযোগ জানাচ্ছে আম জনতা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাইবার শাখা জানুয়ারি থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখেছে, এই দশ মাসে ডিজিটাল অ্যারেস্টের ফাঁদে পড়েছেন প্রায় এক লক্ষ। অনেকেই তার মধ্যে ডিজিটাল অ্যারেস্টের শিকার হয়ে সাইবার প্রতারকদের হাতে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। টাকা না দিলে ভয়ঙ্কর  পরিণতি হবে—একথা শুনেই ভয়ে প্রতারকদের কাছে অ্যাকাউন্ট হাট করে খুলে দিয়েছেন তাঁরা। নজর করার মতো বিষয় হল, অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে কয়েকটি আবার বিদেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের। গড়ে প্রতি মাসে ২১৪ কোটি টাকা হাতিয়েছেন এই অপরাধে অভিযুক্ত সাইবার জালিয়াতরা। 
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আসা রিপোর্ট অনুযায়ী ডিজিটাল অ্যারেস্টের নাম করে ফোনগুলি করা হচ্ছে বেআইনি কলসেন্টার থেকে। তার বেশিরভাগের ঠিকানাই এশিয়ার কোনও না কোনও দেশ। বিভিন্ন এজেন্সি তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারছে, মূলত থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার ও ভিয়েতনামে খোলা হয়েছে এই কলসেন্টারগুলি। ভারতে ফোন করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে দেশের সিম। যা সাইবার অপরাধ চক্রের শাগরেদদের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে বিদেশে। সিবিআই, ইডি, এনসিবি বা দিল্লি ও মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চের আধিকারিক সেজে বসা অভিযুক্তদের সিংহভাগই ভারতীয়। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সেইসব দেশের নাগরিকরাও। প্রথমে টাকা জমা পড়ছে জালিয়াতদের ভারতীয় অ্যাকাউন্টে। তারপর তা ‘পাচার’ হয়ে যাচ্ছে বিদেশে। আর তারপর? প্রায় পুরো অঙ্কটাই ক্রিপ্টো কারেন্সিতে বিনিয়োগ করে দিচ্ছে জালিয়াতরা। সেই কারণেই সমস্ত রাজ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে নির্দেশ গিয়েছে ডিজিটাল অ্যারেস্ট নিয়ে। বলা হয়েছে, প্রতারণা ঠেকাতে প্রত্যেক রাজ্যকে একযোগে কাজ করতে হবে। এই অপরাধে কেউ ধরা পড়লে বা অভিযোগ হলে, সেই রাজ্য অন্য সর্বত্র সংশ্লিষ্ট তথ্য শেয়ার করবে। এভাবে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা চক্র ভাঙা যাবে। ইতিমধ্যেই বিদেশে চলা কলসেন্টারগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে মন্ত্রক সূত্রে খবর। সেগুলি বন্ধ করতে সিবিআই মারফত ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে চলছে সচেতনতা প্রচার। কারণ, নরেন্দ্র মোদি যতই বলুন ডিজিটাল অ্যারেস্ট বলে কিছু হয় না, আম জনতা সচেতন না হলে প্রতারণার অঙ্ক লাফিয়ে বাড়বে।  
1d ago
কলকাতা
রাজ্য
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উচ্চতর বৃত্তিমূলক শিক্ষা লাভের জন্য নামী স্বদেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পেতে পারেন। অর্থকর্মে উন্নতি...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৫ টাকা৮৪.৯৯ টাকা
পাউন্ড১০৭.৪১ টাকা১১১.১৯ টাকা
ইউরো৮৯.৯৮ টাকা৯৩.৩৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা