ধনাগম যোগটি অনুকূল। দুপুর থেকে কর্মের বাধা মুক্তি ও উন্নতি। শরীর-স্বাস্থ্য সমস্যার যোগ। ... বিশদ
২০১৯ সালে মালদহে তৃণমূল তুলনামূলকভাবে অনেক দুর্বল ছিল। সেবার দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী তৃতীয় স্থানে ছিলেন। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৩ লক্ষ ৫১ হাজার ৩৫৩টি। তাঁর থেকে কংগ্রেস প্রার্থী প্রায় ৯৫ হাজার ও বিজেপি প্রার্থী ৮৪ হাজার ভোট বেশি পান। তার দু’বছরের মাথায় এরাজ্যে বিধানসভা ভোট হয়। তখন শুধুমাত্র সুজাপুর বিধানসভাতেই তৃণমূল প্রার্থী ১ লক্ষ ৩০ হাজার ১৬৩ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন। ওই লোকসভা কেন্দ্রের বাকি যে পাঁচটি বিধানসভা মালদহে রয়েছে, সেগুলির অধিকাংশেই তৃণমূল আশাতীত ফল করে। মোথাবাড়ি ও মানিকচকে যথাক্রমে ৫৬ হাজার ৫৭২ ও ৩৩ হাজার ৮৭৮ ভোটের ব্যবধান ছিল। দুটি ক্ষেত্রেই তৃণমূলের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনে যে ইংলিশবাজার থেকে বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী প্রায় ১ লক্ষ ভোটে এগিয়েছিলেন, সেখানে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের ব্যবধান কমে ২০ হাজার হয়ে যায়। এমনকী বৈষ্ণবনগর আসনটি বিজেপির কাছ থেকে তৃণমূল সামান্য ব্যবধানে এবার ছিনিয়েও নেয়। সুজাপুরে গত লোকসভায় কংগ্রেস প্রার্থী আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) ৯১ হাজার ভোট পেয়েছিলেন।
গত বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর ছেলে তথা এবারের দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস প্রার্থী ঈশা খান চৌধুরী মাত্র ২২ হাজার ভোট পান। বাকি বিধানসভা গুলির মধ্যে মানিকচকে ১১ হাজার ও মোথাবাড়ি ১৬ হাজারের কিছু বেশি ভোট কংগ্রেস প্রার্থীরা পেয়েছিলেন। সেখানে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ছিল যথাক্রমে ১ লক্ষ ১০ হাজার এবং ৯৭ হাজার।
উত্তর মালদহেও একই ছবি। গত লোকসভা ভোটে ওই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু, কংগ্রেসের ঈশা ও তৃণমূলের মৌসম নুরের প্রাপ্ত ভোট ছিল যথাক্রমে ৫ লক্ষ ৯ হাজার ৫২৪, ৩ লক্ষ ৫ হাজার ২৭০ এবং ৪ লক্ষ ২৫ হাজার ২২৬। অর্থাৎ তৃণমূলের থেকে বিজেপি প্রায় ৮৫ হাজার ভোটে এগিয়েছিল। গত বিধানসভা নির্বাচনে শুধুমাত্র মালতীপুর কেন্দ্রেই তৃণমূল ৯২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয় পায়। ফলে সমগ্র লোকসভার ব্যবধান একটি বিধানসভাতেই কার্যত মুছে যায়। রতুয়া, চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুরে তৃণমূল জয় পেয়েছিল যথাক্রমে ৭৫ হাজার, ৬৭ হাজার ও ৭৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে। হরিশ্চন্দ্রপুর আসনে এবারের উত্তর মালদহের কংগ্রেস প্রার্থী মোস্তাক আলম পেয়েছিলেন ২৯ হাজার ৩৯৬ ভোট। ওই কেন্দ্রে তৃণমূল পায় ১ লক্ষ ২২ হাজার ৫২৭টি ভোট। বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত হবিবপুর বিধানসভায় গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের ব্যবধান ছিল ৫২ হাজার ভোট। গত বিধানসভা নির্বাচনে তা কমে সাড়ে ১৯ হাজার হয়ে যায়।
গত বিধানসভা নির্বাচনে মালদহ ও ইংলিশবাজার কেন্দ্র বিজেপি দখল করলেও, ওই দুই এলাকায় থাকা দুই শহরে গত পুর ভোটে তৃণমূল নিরঙ্কুশ জয় পায়। বছরখানেক আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূল জেলা পরিষদ ও সিংহভাগ পঞ্চায়েত সমিতি দখল করে। বেশিরভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে ঘাসফুলের প্রার্থীরা জয় হাসিল করেন। বাম-কংগ্রেস জোট ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও বিজেপি সেভাবে দাগ কাটতে পারেনি।