রাজ্য

ইউনিক কোড হাতিয়েই ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালে হানা দেয় জালিয়াতরা

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এ কোনও সাইবার গ্যাংয়ের কর্ম নয়। ভিন রাজ্য থেকে ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টাল হ্যাকও হয়নি। সর্ষের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল ভূত। শিক্ষাদপ্তরের মধ্যেই লুকিয়ে প্রতারণার মাস্টারমাইন্ড। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া এলাকার প্রাইমারি স্কুলের টিচার ইন চার্জ দিবাকর দাসকে গ্রেপ্তার করার পরই রাজ্যজুড়ে চলা ট্যাবকাণ্ডের মূল ছকের নাগাল পেল কলকাতা পুলিসের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম। জেলা এবং সংশ্লিষ্ট স্কুলের ইউনিক কোড হাতিয়ে সরকারি পোর্টালে ঢোকার ‘লগ-ইন আইডি’ তৈরি করে নেওয়া হতো। এরপরেই সহজ পাসওয়ার্ডকে কাজে লাগিয়ে চলত পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরের কারচুপি। এভাবেই কলকাতা পুলিস এলাকার ১০৯ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা লোপাট করেছিল জালিয়াত চক্র। এই ঘটনায় শহরের বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৫। 
লালবাজার জানিয়েছে, ২৮ বছর বয়সি দিবাকর দাস ওরফে বিট্টু পেশায় সরকারি শিক্ষক। চলতি বছরে পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা দেওয়ার জন্য স্কুল শিক্ষাদপ্তরের একটি বৈঠক হয়। স্কুল পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন দিবাকর। সেখানেই তিনি জানতে পারেন, ট্যাব ইস্যুতে পড়ুয়াদের তালিকা এসআইয়ের কাছে অনলাইনে জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। পুলিসের তদন্ত বলছে, ২৮ আগস্ট ছিল পড়ুয়াদের নাম ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর স্কুলপর্যায় থেকে উচ্চস্তরে জমা দেওয়ার শেষদিন। সবক্ষেত্রেই পড়ুয়াদের তথ্যে কারচুপি হয়েছে, ২৭ তারিখ গভীর রাত থেকে ভোররাতের মধ্যে। 
কিন্তু, গোটা জালিয়াতিটা হল কীভাবে? লালবাজারের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমের জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত দিবাকর জানিয়েছেন, গুগলে যেকোনও স্কুলের নামের সঙ্গে ‘ইউনিক কোড’ টাইপ করে সার্চ করলেই তা  পাওয়া যায়। সেই কোড সংগ্রহ করতেন অভিযুক্ত। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হওয়ার সুবাদে তাঁর কাছে ছিল ওই স্কুলের সংশ্লিষ্ট জেলার বিশেষ কোড বা ডিস্ট্রিক্ট কোড (যা স্কুল শিক্ষা দপ্তরের জন্য বৈধ)। স্কুলের ইউনিক কোড ও ডিস্ট্রিক্ট কোড পরপর বসালেই তৈরি হয়ে যায় সংশ্লিষ্ট স্কুলের ‘লগ-ইন আইডি’। সেই আইডি-ই হল ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালে ঢোকার প্রথম চাবিকাঠি। এই ছক সম্পর্কে অবগত ছিলেন দিবাকর। তাই যেকোনও স্কুলের হয়ে পোর্টালে ‘লগ-ইন’ করা ছিল ধৃতের বাঁ হাতের কাজ। 
প্রথম চাবিকাঠি হাতালেই হল না। সরকারি পোর্টালের দ্বিতীয় তালা খুলতে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট স্কুলের পাসওয়ার্ড। পুলিসের তদন্ত বলছে, এই পাসওয়ার্ড অত্যন্ত দুর্বল। উদাহরণস্বরূপ কলকাতা পুলিসের এক কর্তা জানিয়েছেন, কোনও স্কুলের নামের সঙ্গে ১২৩ বা ০০০ জুড়ে দিলেই পাসওয়ার্ড তৈরি। অনুমানশক্তিকে কাজে লাগিয়ে সেই পাসওয়ার্ড বসিয়ে দিতেন চোপড়ার প্রাথমিক শিক্ষক। ‘লগ-ইন আইডি’ ও পাসওয়ার্ড মিলে গেলেই খুলে যেত সংশ্লিষ্ট স্কুলের পড়ুয়াদের তালিকা। সেই তালিকার তথ্য ‘এডিট’ করত জালিয়াতরা। পূর্ণাঙ্গ তালিকা জমা পড়ার আগে রাতে বদলে দেওয়া হতো গ্রাহকের নাম ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর। তাতেই ট্যাবের টাকা থেকে বঞ্চিত হতো প্রকৃত পড়ুয়ারা। 
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ভাড়া করতেন এই শিক্ষক নিজেই। একগুচ্ছ অ্যাকাউন্টের ব্যবস্থা করে দিলে মিলত বেশি কমিশন। সিঙ্গল অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে কমিশনের অ্যামাউন্ট ছিল ৩০০ টাকা। সিটের দাবি, দিবাকরের মতো রাজ্যজুড়ে এই প্রতারণা কাণ্ডের চক্রে রয়েছে অসাধু শিক্ষকরাই। দিবাকরের সঙ্গে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের এক শিক্ষকের যোগসূত্র মিলেছে। কিন্তু, শিক্ষা দপ্তরের পোর্টালের নিরাপত্তা এতটা ঠুনকো কেন? প্রশ্ন উঠছে। প্রতারণা রুখতে ইতিমধ্যেই শিক্ষাদপ্তরের কী করণীয়, তা নিয়ে পাঠ দিয়েছে লালবাজারের সাইবার বিভাগ ও বিশেষজ্ঞরা।
কলকাতা
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কর্মের প্রসার ও ক্ষেত্র বিশেষে বড় বরাতও পেতে পারেন। খেলাধুলায় কৃতিত্বের জন্য সুনাম ও অর্থকরী...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৫৮ টাকা৮৫.৩২ টাকা
পাউন্ড১০৪.৮১ টাকা১০৮.৫৩ টাকা
ইউরো৮৭.৩৩ টাকা৯০.৬৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা