বিনোদন

ময়দান: অজেয় অজয় ময়দানের ঘাসে সোনা রোদের গান
 

• ডাক্তারের সামনে বসে আছেন রহিম সাহেব। বিভিন্ন টেস্টের রিপোর্ট দেখে মুখ হঠাৎই গম্ভীর। বললেন, ‘আপনার লাঙ ক্যান্সার।’ মুহূর্তের জন্য চোখের কোণ কেঁপে উঠল কিংবদন্তি কোচের। তারপরই তাঁর প্রশ্ন, ‘হাতে কতদিন সময় পাওয়া যাবে?’ উত্তর এল, ‘তা বলা মুশকিল।’ অন্য কেউ হলে এরপর ভেঙে পড়তেন। কিন্তু তিনি তো অন্য ধাতুতে গড়া। তাই কেস খুলে সিগারেট বেরল। ফস করে জ্বলে উঠল আগুন। ডাক্তার অবাক। কী দেখছেন তিনি? কিছু বলতে যাবেন, তার আগেই রহিম সাহেবের ঠোঁট নড়ে উঠল, ‘এখন সিগারেট ছেড়ে দিলে তো আর ক্যান্সার সারবে না।’ এই দৃশ্যে অসামান্য অভিনয় অজয় দেবগণের। মুখের পেশির চলন দেখার মতো। ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তার গভীরে বিষাদের ঘনঘটার অভিব্যক্তি কত সহজেই ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। গোটা সিনেমাতেই তিনি অনবদ্য। 
ভারতীয় ফুটবলের সফলতম কোচ সৈয়দ আব্দুল রহিমকে কেন্দ্র করেই বনি কাপুরের প্রযোজনায় তৈরি হয়েছে ‘ময়দান’। ১৯৫১ ও ১৯৬২ এশিয়ান গেমসে তাঁর প্রশিক্ষণেই সোনা জেতে ভারত। এছাড়া রয়েছে ১৯৫৬ মেলবোর্ন ওলিম্পিকসে চতুর্থ হওয়ার গর্ব। ফুটবলই ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। পরিচালক অমিত শর্মা পরিকল্পিত পথেই এই ছবিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের ফুটবলারদের এক সুতোয় বেঁধেছেন অজয় দেবগণ। থুড়ি রহিম সাহেব। তাঁর কুঁড়ির মধ্যে রয়েছেন কলকাতার চুনী গোস্বামী, প্রদীপ কুমার ব্যানার্জি (পিকে), অরুণ ঘোষ, সেকেন্দ্রাবাদের তুলসীদাস বলরাম, মুম্বইয়ের নেভিল ডিসুজারা। ছবিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভারতীয় ফুটবলের স্বর্ণযুগ। ক্রিকেট এবং হকি নিয়ে এরকম কাজ অতীতে হলেও ফুটবল ছিল ব্রাত্য। তাই সিনেমাপ্রেমীরা এই টিমকে ধন্যবাদ দিতেই পারেন। 
সিনেমা শুরু হচ্ছে অবশ্য লজ্জার হার দিয়ে। ১৯৫২ হেলসিঙ্কি ওলিম্পিকসে শৈলেন মান্নার নেতৃত্বে যুগোস্লাভিয়ার কাছে ১০-১ গোলে হারছে ভারত। কোচ রহিম সাহেব। তারপর তাঁর ঘুরে দাঁড়ানো শুরু। ফুটবল ফেডারেশনের কয়েকজন কর্তার অসহযোগিতা সত্ত্বেও ফোকাস নড়েনি রহিম সাহেবের। সিনেমার পরতে পরতে রয়েছে সেই গল্প। পাশাপাশি পরিবারের প্রতি বুদ্ধিদীপ্ত কোচের দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতাও তুলে ধরা হয়েছে। 
অজয় দেবগণের ফুটবলাররাও অভিনয় করেছেন মনপ্রাণ ঢেলে। শিল্পী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও মুন্সিয়ানার ছাপ স্পষ্ট। চৈতন্য শর্মা (পিকে), অমর্ত্য রায় (চুনী), আমন মুন্সিদের (অরুণ ঘোষ) দেখলে মনে হবে খেরোর খাতায় যথেষ্ট সময় দিয়েছেন পরিচালক-প্রযোজক। ফেডারেশনের কুচক্রী কর্তার ভূমিকায় রুদ্রনীল ঘোষ যথাযথ। তবে তাঁকে ছাপিয়ে গিয়েছেন গজরাজ রাও। তৎকালীন নামী সাংবাদিক পঙ্কজ গুপ্তর চরিত্রে তিনি অসাধারণ। প্রশংসা প্রাপ্য সিনেমাটোগ্রাফার তুষারকান্তি রায়-ফিওডোর লাস এবং সুরকার এআর রহমানের। 
১৯৬২’র এশিয়ান গেমসে সোনা জয়ের এক বছরের মধ্যেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছিলেন রহিম সাহেব। ক্যান্সারের কাছে হার মানতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তার আগে কাশির দমকে মুখ থেকে রক্ত উঠলেও স্বপ্ন সার্থক করেছেন। এই পর্বেও অজয় অজেয়। সাদা রুমাল লাল হলেও ফুটবলারদের সাফল্যের পথে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। 
এই সিনেমা অবশ্যই দর্শকদের প্রশংসা পাবে। তবে গবেষণায় বিস্তর ত্রুটি রয়েছে। ১৯৫৬ মেলবোর্ন ওলিম্পিকসে ভারতের ক্যাপ্টেন বদ্রু ব্যানার্জির নাম উল্লেখ করা হল না। ঠিক তেমনই ‘পিকেদা’ ডাক বড়ই বেমানান চুনী গোস্বামীর মুখে। এছাড়া ১৯৬০ ওলিম্পিকসে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ম্যাচে সেমসাইড গোল করেননি অরুণ ঘোষ। ১৯৬২ এশিয়ান গেমসে ভারতের বেশ কয়েকটি ম্যাচে গোলের তথ্যে ভুল নজরে এসেছে। তবে এই ময়দানে রয়েছে ঘাসের গন্ধ, লড়াইয়ের নির্যাস। 
সোমনাথ বসু
3Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা