বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
বিনোদন
 

নতুনরা কেউ জিজ্ঞেস করে না

দিন কয়েক পরেই ৮১ হবেন ‘চারুলতা’। আজও অভিনয়ে তাঁর একই অধ্যবসায়। নতুন ধারাবাহিকে পর্দায় ফিরছেন তিনি। নেপথ্যে কী? মাধবী মুখোপাধ্যায়ের মুখোমুখি স্বরলিপি ভট্টাচার্য।

আরও একটা জন্মদিন আসছে, ফিরে তাকালে কী মনে পড়ে?
যখন মা বেঁচে ছিলেন, জন্মদিন করতেন। বাড়িতে বানাতেন পায়েস, কালোজাম। লোকজন ডাকতেন। একটা উৎসবের মতো। তবে পুরোটাই ঘরোয়া। মা চলে যাওয়ার পর তেমন জন্মদিন মুছে গিয়েছে। এখন যাঁরা জানেন, শুভেচ্ছা জানান। বই উপহার দেন। তবে জন্মদিন এখন পালন করে আমার মেয়ে। কেক কাটা হয়। (একটু হেসে) স্বদেশি নয়, বিদেশি মতে জন্মদিন পালন।

একই এনার্জি নিয়ে কাজ করছেন এই বয়সেও। নতুন ধারাবাহিক শুরু হচ্ছে তো?
হ্যাঁ, ‘বালিঝড়’ শুরু হবে। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা।

গল্প কি আলাদা ধরনের?
আমার কাছে একটাই শব্দ, সেটা হল লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। যেমন ভালো ওর লেখা, তেমন মানুষটাও। পুরো ইউনিটই অসাধারণ। পরিবেশ ভালো। ফলে কাজে অসুবিধে হয় না। 

অবসরে অন্যান্য ধারাবাহিক দেখেন?
হ্যাঁ, দেখি। তবে ধারাবাহিক দেখতে বসলে মনে হয়, কোনও কোনও অভিনেতার অভিনয় বেশ চড়া দাগের। ভাবি, অভিনয়ে অনুভূতিটুকু কেন থাকে না? ওটাই তো ভালো অভিনয়ের জন্য যথেষ্ট। অনেকে এত চড়া মাত্রার অভিনয় করেন, মনে হয় যেন যাত্রা দেখছি। এটার দরকার নেই। কারণ আমরা দেখছি ঘরে বসে, স্টেজের সামনে নয়।

নতুনদের এসব পরামর্শ দেন? 
না! নতুনরা কেউ জিজ্ঞেস করে না। আমি বলতেও যাই না। আরও একটা জিনিস... আমাদের এখানে আর্কাইভ, ফিল্ম লাইব্রেরি আরও ভালো হওয়া দরকার। ওরা দেখে শিখবে, সে উপায়ও যে কম! উত্তমকুমার প্রায় ২০০-২৫০ ছবি করেছেন। কিন্তু এখন আর ক’টা দেখতে পাওয়া যায়? কারও হয়তো এটা মনেই হয় না!

নতুন প্রজন্মের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কী কী সমস্যা চোখে পড়েছে?
এখন বেঁচে থাকাটা অনেক চ্যালেঞ্জিং। ছোট ছোট জিনিসে আনন্দ পেতে ভুলে যাচ্ছি আমরা। মানুষ হিসেবে এরা সকলেই ভালো। তবে এরা ভাবে, একটা ধারাবাহিক করলে হবে না। দুটো, তিনটে করতে হবে। আমরা ভাবতাম, একটাই স্থির হয়ে করব। এখনকার প্রজন্মের ধৈর্য কম। সেটা সমাজের দোষ। গতকাল যেটা পাঁচ টাকায় কেনা হয়েছে, আজ সেটা ১০ টাকায় কিনতে হবে। সেটাও তো চিন্তার। 

নতুন ছবি দেখেন?
ভালো সিনেমা হলে আমার মেয়ে সিনেমা হলে নিয়ে যায়। শেষ দেখেছি ‘অপরাজিত’। খুব ভালো লেগেছিল। মানিকবাবুর ম্যানারিজম জীতু ঠিকঠাক রপ্ত করেছে। উনি দেখলে নিশ্চয়ই খুশি হতেন। অনীকবাবুর কাছে শুনলাম ওঁর ছেলে (সন্দীপ রায়) নামগুলো বদলে দিতে বলেছিলেন। আমার মনে হয়, সত্যজিৎ রায় বেঁচে থাকলে বলতেন নাম দিয়েই করো।

পুরনো দিনের সোনালি স্মৃতি কখনও মন খারাপ করায়?
মন খারাপ করে কী হবে? ভালো-মন্দ সব যুগেই থাকে। ছবি বিশ্বাস, নরেশ মিত্র, শিশির কুমার ভাদুড়ি—কত মানুষের সঙ্গে কাজ করেছি। থিয়েটারে আমাদের নাচ, গান সব শিখতে হতো। ওই ট্রেনিংটা ছিল বলে আজও পরিচালক যা বলেন, সেটাই করতে পারি। ওই স্কুলিংটা দরকার। আর একটা কথা ঠিক, যার যখন ছুটি পাওয়ার, সে তখনই পাবে। তবে উত্তমবাবু অনেক তাড়াতাড়ি চলে গিয়েছেন। ইন্ডাস্ট্রিকে আরও অনেক কিছু দিতে পারতেন। 

পুরনো অধ্যায়ের কোনও পাতা ফের পড়তে চাইলে কোনটা বেছে নেবেন?
ধীরাজ ভট্টাচার্যের সঙ্গে ‘নূরজাহান’ নামের একটা নাটক করতাম। উনি শাহজাহান আর আমি ঔরঙ্গজেবের ভূমিকায়। একটা সংলাপ বলতাম, ‘চোখ দুটো উপড়ে ফেলে দেব’। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গে দর্শক হাততালি দিত। কোনওদিন হাততালি না পড়লে, সঙ্গে সঙ্গে এসে ধীরাজবাবু বলতেন, ‘হাততালি পড়ল না কেন?’ তার মানে আমার কোথাও বলার ভুল হয়েছে। প্রত্যেকটা মানুষের কাছে শিক্ষা পেয়েছি। এই শিক্ষার মধ্যে একটা স্নেহ ছিল। সেটারই আজ বড় অভাব। 

1st     February,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ