বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য

নেশার নাম রিলস,  সংবরণ করবেন কীভাবে?

পরামর্শে বিশিষ্ট মনোবিদ ডঃ নীলাঞ্জনা সান্যাল। 

সামান্য সময় ধরে রিলস দেখার অভ্যেসও ভালো নয়। কারণ স্বল্প সময়কালবিশিষ্ট এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল কনটেন্ট দেখার জন্য আলাদা করে মনোনিবেশ করতে হয় না আমাদের। কনটেন্টগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই মনোযোগ আকর্ষণ করে। মনোনিবেশকে এমন মুহূর্তকাল স্থায়ী ক্ষুদ্র কনটেন্ট-এ আটকে রাখার অভ্যেসে অভ্যস্ত হয়ে গেলে, মানুষ নিজের মনঃসংযোগের ব্যাপ্তি বাড়াতে অক্ষম হয়ে যায়।
 লেখাপড়া করার অভ্যেসেও বিষয়টি প্রভাব ফেলছে যথেষ্ট বেশি। একটি বই পড়তে হলে যতখানি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন, ততখানি আর দিতে পারছে না রিলস দেখতে অভ্যস্ত ছেলেমেয়েরা।
 যারা রিলস দেখে, তারা লম্বা সময় ধরে একটার পর একটা রিলস দেখতে থাকে। বয়ে যাওয়া সময় সম্পর্কে বোধ আবছা হয়ে যায় তখন। এই যে একটার পর একটা শর্ট ভিডিও দেখার অভ্যেস— তা একসময় চলে যায় নেশার পর্যায়ে। 
 ‘প্রতীক্ষার ধৈর্য’ আসলে দীর্ঘ অনুশীলনের ফল। রিলস সেই অনুশীলনের পরিপন্থী। কারণ রিলস দেখার অভ্যেস দেয় তাত্‍ক্ষণিক সন্তুষ্টি। অপেক্ষা ও ধৈর্যের প্রয়োজন হয় এমন কাজ এই মুহূর্তে আনন্দ না দিলেও পরবর্তীকালে তা বৃহত্‍ আনন্দের উত্স হতে পারে সেই কথা অনেকেই ভুলতে বসেছেন। তার জন্য রিলস দেখার অভ্যেসেরও অবদান আছে।
 রিলস-এ অনেক বিষয় তীর্যকভাবে, ব্যঙ্গাত্মকভাবেও দেখানো হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সেখানে মহিলাদের প্রতি কুরুচিকর মন্তব্য করা বা আচরণ করাকেই বেশি করে দৃষ্টিগোচর করানো হয়। মন যখন ওই তাত্‍ক্ষণিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, ওই ধরনের ‘কনটেন্ট’ দেখতে অভ্যস্ত হয়ে যায়, সেগুলি তার রুচিবোধের অবক্ষয় ঘটায়।
 রিলস-এর প্রতি আসক্ত ব্যক্তির সময়জ্ঞান হারিয়ে যায়। পরবর্তী কাজ কী আছে, কতক্ষণ ধরে করার কথা, সেটাও তিনি মনে রাখতে পারে না। তার ফলে তিনি নিজের জীবনে ও কাজকর্মে অগোছালো হয়ে পড়েন। দেখা যায় কারও কারও মুখের সামনে বই খোলা অবস্থায় পড়ে আছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা! একটা অক্ষরও পড়া হয়নি। কিংবা ল্যাপটপ খোলা আছে, একটা কাজও শেষ লেখা হয়নি।
 রিল দেখার চক্রে জড়িয়ে পড়ে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে, যোগাযোগ করতে ভুলে যাচ্ছেন অনেকেই। মশগুল থাকছেন নিজের স্মার্ট ফোন নিয়ে।
  খুদেদের ক্ষেত্রে বিষয়টা আরও চিন্তার। যেসব শিশু প্রথম থেকে রিল দেখে যায়, তারা নিজেদের তাত্‍ক্ষণিক সন্তুষ্টিলাভের চক্রে জড়িয়ে ফেলে। ফলে ধৈর্যের প্রয়োজন এমন কাজ করতে গিয়ে প্রবল সমস্যা হয়।
আর শুধু রিলস দেখা নয়, রিলস তৈরি করতে গিয়েও কতশত সমস্যা উপস্থিত হয়। রিলস বানাতে গিয়ে ট্রেন বা গাড়ির ধাক্কা খাওয়া বা বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ হারানোর মতো ঘটনা আকছার ঘটতে দেখা যায়। এই ধরনের ঘটনা মানসিক অপরিণতির দিকেই নির্দেশ করে।

কীভাবে সম্ভব আসক্তি থেকে মুক্তিলাভ
 ফোন হোক বা ট্যাব, যে মাধ্যমেই একজন ব্যক্তি রিলস দেখুক না কেন, প্রথমেই ওই মাধ্যমটিকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে রাখুন। সম্ভব হলে, নজরের থেকে দূরে রাখুন। এইভাবে বিচ্ছিন্নতার অভ্যেস করুন। তবে নেশা হয়ে গেলে সহজে এমন কাজ করা সম্ভব নয়। বার বার রিলস দেখতে ইচ্ছা হবে। যদি মনে হয় পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে অ্যালার্ম দিয়ে রাখুন। তাতে অল্পসময়ের জন্য রিলস দেখে ফোন সরিয়ে রাখতে হবে। এইভাবে ধীরে ধীরে নেশা থেকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
 একেবারেই সম্ভব না হলে রিলস-এর থেকে আরও বেশি উদ্দীপক কোনও কাজে লিপ্ত হলে ভালো হয়। বড়রা এক্সারসাইজ করতে পারেন। নিজেদের মধ্যে ফোন ছাড়াই সামনাসামনি বসে আড্ডা দেওয়ার অভ্যেস করতে পারেন।
ছোটদের নিজেদের আগ্রহ আছে এমন কোনও খেলা বা বাদ্যযন্ত্র শেখা, ছবি আঁকার সঙ্গে যুক্ত করা গেলেও এই কুঅভ্যেস ত্যাগ করা সম্ভব হতে পারে।
লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

গৃহে শুভ অনুষ্ঠানের আয়োজন। সন্তানের আবদার মেটাতে অর্থব্যয় বাড়তে পারে। মনের অস্থিরতা-উত্তেজনা দমন করুন।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৬.০৮ টাকা৮৭.১৭ টাকা
পাউন্ড১০৫.৪২ টাকা১০৮.৩৩ টাকা
ইউরো৮৮.৮৮ টাকা৯১.৫৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা