বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
সম্পাদকীয়

খেলাপ ও খেলাপিদের সুরক্ষা

শব্দই ব্রহ্ম। শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে মানুষ কথা বলে। সেই কথাই দামি, যা অর্থবহ। ব্যক্তিত্বসচেতন ব্যক্তিরাই অর্থবহ কথা বলেন। সবচেয়ে ব্যক্তিত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেই জনগণ তাদের ‘অভিভাবক’ নির্বাচন করে। অভিভাবক সেই কথা বলবেন, যা তিনি রাখতে পারবেন। এই অভিভাবক একটি নির্বাচিত সরকারের শীর্ষকর্তা হলে তাঁর সবকথাই মূল্যবান, সে-কথা তিনি সংসদে না ময়দানের ভাষণে বললেন, সেই বিচার বাহুল্য। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি সেরকমই একজন ওজনদার নেতা অলঙ্কৃত করেন বলেই দেশবাসী বিশ্বাস করে। নরেন্দ্র মোদি ভারতের তৃতীয় দফার প্রধানমন্ত্রী, তাঁর ভারতশাসনের একদশক ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। কিন্তু দেশের দায়িত্বগ্রহণের প্রাকমুহূর্ত থেকে এই পর্যন্ত তিনি যত কথা দিয়েছেন, তার কয়টি রক্ষিত হয়েছে? প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাসের কত শতাংশ অন্তত রক্ষার ব্যাপারে তাঁর আন্তরিকতা দেখেছি আমরা? দফা ধরে ধরে এসবের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমরা হতাশার বেশিকিছু যে খুঁজে পাব না, তা একজন কট্টর গেরুয়া সমর্থকও জানেন। 
এই প্রসঙ্গেই ইপিএস ৯৫ পেনশন স্কিমের অন্তর্গত প্রবীণ ব্যক্তিদের দুর্দশার কথা পাড়া যায়। সম্পূর্ণ বেসরকারি ক্ষেত্র এবং কিছু অধিগৃহীত সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের জন্য ইপিএফ মারফত যে ‘পেনশন’ স্কিম চালু আছে তার চেয়ে বড় প্রহসন এদেশে সত্যিই বিরল। পুরো কর্মজীবনে একজন কর্মীর বেতন থেকে প্রতিমাসে কিছু অর্থ কেটে নিয়ে ইপিএফে জমা করা হয়। সেখানে একইভাবে কিছু অর্থ জমা দেয় নিয়োগকারী সংস্থাও। ওই স্কিমের ‘পেনশন’ মেলে তার ভিত্তিতেই। পেনশন বলতে সাধারণভাবে সেই পরিমাণ অর্থকেই বোঝায়, যা দিয়ে একটি বৃদ্ধ দম্পতি ভদ্রভাবে শেষজীবন অতিবাহিত করতে পারেন। বর্তমান বাজার মূল্যে একজন দিনমজুর পরিবারের স্তরে নেমে এসেও বেঁচে থাকতে হলে প্রতিমাসে অন্তত ১০/১৫ হাজার টাকা প্রয়োজন। সেখানে ইপিএফের ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের আর্থিক রিপোর্ট অনুসারে, ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত ৭৮ লক্ষাধিক গ্রাহককে মাসিক পেনশন দেওয়া হয়েছে। সংখ্যাটি দেখে মনে হবে, বাহ্‌, সত্যিই তো ‘মেরা ভারত মহান’! কিন্তু ‘পেনশন’ নামে প্রদত্ত অর্থের পরিমাণ জেনে পাঠক কী বলবেন তা ঠিক করুন—৩৬ লক্ষ ৭০ হাজারের বেশি গ্রাহককে দেওয়া হয়েছে ১০০০ টাকারও কম—তাঁদের বেশিরভাগেরই পেনশন ঘোরাফেরা করে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার ভিতরে! আরও মজার ব্যাপার, এই অঙ্ক একবার ঠিক হয়ে গেলে হিমালয়ের মতো সেখানেই নট নড়ন চড়ন হয়ে থাকবে! অর্থাৎ পেনশন গ্রহণের পর একজন গ্রাহক ২০-৩০ বছর বেঁচে থাকলে সেই সুদূর ভবিষ্যতেও ওই টাকা পাবেন তিনি। ভেবে দেখুন, তখন ওই টাকার মূল্য আজকের ৩০০-৪০০ পয়সার অধিক থাকবে তো? ভারতের জনদরদি প্রধানমন্ত্রী অবশ্য দাবি করেন, তাঁর আমলে এই পেনশন দেওয়া হয় ন্যূনতম ১০০০ টাকা। এতক্ষণ যে হিসেব আমরা পেলাম তারপর প্রধানমন্ত্রীর দাবিকে আর একটি ‘জুমলা’ আখ্যা দিলে কি তাঁর সরকারকে কুৎসা করা হবে? 
যাই হোক, জীবন উপান্তের এই তীব্র যন্ত্রণা থেকে মুক্তির দাবি প্রবীণদের অনেক দিনের। তাঁরা মাসে অন্তত ৭৫০০ টাকা পেনশন, ডিএ এবং বিনামূল্যের চিকিৎসা পরিষেবাসহ কিছু ন্যায্য সুবিধা দাবি করেন। এই দাবিতে মহারাষ্ট্রের বুলদানায় রিলে অনশন চলছে কয়েক বছর যাবৎ। এছাড়া দেশের নানা প্রান্ত থেকে নয়াদিল্লি পর্যন্ত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বিক্ষোভ অবস্থান হয়েছে অগুনতি বার। এই আন্দোলন করতে গিয়ে তাঁরা একাধিক বার পুলিসের লাঠির আঘাতেও জর্জরিত হয়েছেন। সারা দেশ ‘ছিঃ ছিঃ’ করলেও শুধু নির্বিকার দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী। বাড়তি পেনশনের দাবিতে সিলমোহর দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। এই ব্যাপারে ২০২২ সালের নভেম্বরে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছিল তারা। কিন্তু বর্ধিত হারে পেনশন দিতে দু’বছরের বেশিকাল ধরে টালবাহানা করছে সরকার। তাদের চাপানো একাধিক অন্যায় শর্তে জটিলতরও হয়েছে এই পেনশন প্রক্রিয়া। মোটা টাকা জমা দিয়ে বর্ধিত হারে পেনশন গ্রহণে রাজি হয়ে আবেদন করেছেন সাড়ে ১৭ লক্ষ গ্রাহক। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ২০ হাজার জনকেও বর্ধিত পেনশন সরকার দিতে পারেনি। আবার জমা টাকার উপর ন্যায্য সুদও দিতে নারাজ মোদি সরকার। সব মিলিয়ে বেঁধে ঠ্যাঙানোরই অবস্থা সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের। ফন্দিবাজ সরকার সব দায় পিএফও কর্মীদের ঘাড়ে চাপিয়েই হাত ধুলে ফেলতে তৎপর। বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতির খেলাপ থেকে শীর্ষ ১০০ খেলাপির হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাঙ্কঋণ মকুব পর্যন্ত অন্তত শ’খানেক ‘ইভেন্ট’ সামনে আসে অনায়াসে। মোদি সরকার, বস্তুত, কথার খেলাপে এবং বড় মাপের খেলাপিদের সুরক্ষার প্রশ্নে পরিষ্কার রেকর্ড গড়েছে! সেখানে প্রবীণরা কোন মর্যাদাই-বা প্রত্যাশা করতে পারেন!
1d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পদার্থ ও রসায়নিক বিদ্যার অনুশীলনে বিশেষ উন্নতি।প্রায় সম্পূর্ণ কাজে বাধা আসতে পারে। বিকেল থেকে মানসিক...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৫.৭৮ টাকা৮৭.৫২ টাকা
পাউন্ড১০৫.৯৮ টাকা১০৯.৭২ টাকা
ইউরো৮৮.৭৪ টাকা৯২.১১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা