বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
সম্পাদকীয়

আর কবে রহস্য উদ্ঘাটন?

প্রতি বছর তাঁর জন্মদিন এলেই বিতর্কটা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। দেশনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুর ‘অন্তর্ধান রহস্য’। এই রহস্য উদ্ঘাটনে ১৯৫৫ সালে তৎকালীন নেহরু সরকার শাহ নওয়াজ কমিশন গঠন করে। তারা জানায়, ১৯৪৫ সালে তাইহোকু বিমানবন্দরে বিমান দুর্ঘটনায় নাকি মৃত্যু ঘটে নেতাজির। এরপর ১৯৭০ সালে ইন্দিরা গান্ধীর সরকার খোসলা কমিশন গঠন করে। সেই কমিশন প্রায় একই রিপোর্ট দেয়। মোরারজি দেশাই প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন গঠিত মুখার্জি কমিশনের রিপোর্টে অন্য তথ্য উঠে আসে। এই তৃতীয় তদন্ত কমিশন দাবি করে, বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়নি। কারণ, ১৯৪৫-এর ১৮ আগস্টের ওইদিনে তাইহোকুতে কোনও বিমান দুর্ঘটনাই হয়নি বলে কমিশনকে জানিয়েছে তৎকালীন তাইওয়ান সরকার। এই ধোঁয়াশার মধ্যে নেতাজি গবেষকদের কেউ কেউ রীতিমতো ‘তথ্য’ দিয়ে দাবি করেন, ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত এই মহান দেশনেতাকে দেখা গিয়েছে রাশিয়ায়। তারও পরে শোরগোল ওঠে, গুমনামী বাবার ছদ্মবেশে নেতাজি নাকি ছিলেন ভারতে। সেই রহস্যেরও সত্য জানা যায়নি আজও। বিস্ময়ের কথা হল, সুভাষচন্দ্রের মতো একজন ব্যক্তিত্ব প্রায় আশি বছর আগে, ১৯৪৫ সালে ‘উধাও’ হয়ে গেলেন! কিন্তু ৭৭ বছর অতিক্রান্ত একটি স্বাধীন দেশের সরকার আজও দেশবাসীর বিশ্বাস অর্জনের মতো কোনও তথ্য হাজির করতে পারল না! ঘটনা হল, নেতাজি অন্তর্ধান রহস্যের সত্য উদ্ঘাটনে অতীতের কংগ্রেস সরকার গোটা দুই কমিশন গঠন ছাড়া কার্যত তেমন কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। নরেন্দ্র মোদি সরকারও সেই একই পথের শরিক হয়েছে। অথচ বাঙালি তো বটেই, দেশবাসীর আবেগ রয়েছে নেতাজিকে ঘিরে। দেশনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুকে তাঁর প্রাপ্য সম্মানটুকু দিয়ে এখনও তাঁর জন্মদিনটিকে জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করেনি মোদি সরকার!
যদিও সুভাষচন্দ্রের ১২৮তম জন্মজয়ন্তীর দিন আবেগাপ্লুত মোদি নেতাজির প্রতি তাঁর সরকারের শ্রদ্ধা-ভালোবাসার কথা বোঝাতে গিয়ে জানান, এখন দেশে নেতাজির জন্মদিনকে ‘পরাক্রম দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। তাঁর সরকার ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির মূর্তি বসিয়েছে, আন্দামানে নেতাজির নামে একটি দ্বীপের নামকরণ হয়েছে। লালকেল্লায় তৈরি হয়েছে নেতাজি মিউজিয়াম। কিন্তু যে দেশনেতার ‘অন্তর্ধান’ রহস্য আজও ধোঁয়াশায় ঢাকা, তা নিয়ে এবারও কোনও উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি প্রধানমন্ত্রীর মুখে। নেতাজির অন্তর্ধান নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হাতে ৬৪টি ফাইল ছিল। তার সবক’টি দেখার জন্য প্রকাশ্যে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চান সত্য উদ্ঘাটিত হোক। কিন্তু নেতাজি সংক্রান্ত যে শতাধিক ফাইল রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের জিম্মায় তা নিয়ে উচ্চবাচ্য নেই মোদি সরকারের মুখে! সবচেয়ে আশ্চর্য্যের হল, জাপানের রেনকোজি মন্দিরে রাখা নেতাজির চিতাভস্ম (কথিত) ভারতে আনতে কোনও উৎসাহ দেখাচ্ছে না মোদি সরকার। অথচ এই দাবি বহুদিনের। সুভাষ-কন্যা অনিতা পাফ ফের জানিয়েছেন, সরকার ওই চিতাভস্মের সঙ্গে তাঁর ডিএনএ মিলিয়ে দেখতে চাইলে আপত্তি নেই। সরকার কেন নেতাজি-কন্যাসহ আরও অনেকের এই দাবি মেনে চিতাভস্ম দেশে আনার ব্যবস্থা করছে না, তারও কোনও উত্তর নেই। উল্টে দেখা গিয়েছে, এই দায়িত্ব বিদেশ না স্বরাষ্ট্র কোন মন্ত্রকের তা নিয়ে কেন্দ্রের দুই মন্ত্রকের দড়ি টানাটানি চলছে। নেতাজি অন্তর্ধানের মতোই এও বড় কম রহস্যের নয়। সব মিলিয়ে তাই সুভাষচন্দ্র বসু বড় ‘চক্রান্তের শিকার’ বলে মনে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আপামর বাঙালির মতো তাঁরও আক্ষেপ, ‘আমরা নেতাজির জন্মদিন জানি, মৃত্যুদিন জানি না’।
কেন্দ্রে এই রহস্যজনক ভূমিকা জারি থাকলেও বাঙালির মন পেতে নেতাজি বন্দনায় কোনও কার্পণ্য রাখেননি প্রধানমন্ত্রী। জন্মদিনে এই মহান বরেণ্য নেতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মোদি বলেছেন, ‘নেতাজির মন্ত্র ছিল ঐক্য। জাতি-ধর্ম-ভাষার ভিন্নতা নয়, আমাদেরও বিকশিত ভারত গড়তে দেশবাসীর ঐক্যের উপর জোর দিতে হবে’। প্রধানমন্ত্রীর মুখে ঐক্যের এই ললিত বাণী শুনে অবাক হতে হয়। কারণ আরএসএস তথা বিজেপির মতাদর্শের মূল ভিত্তিই হল বিভাজন তৈরি করা। দেশকে হিন্দুরাষ্ট্র বানাতে প্রতিদিন এই বিভাজনের রাজনীতিকেই উস্কে দিচ্ছে মোদিবাহিনী। এজন্য সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটিই মুছে দেওয়ার চেষ্টা থেকেও তারা পিছপা নয়। এবং ঘটনা হল, নেতাজি বরাবরই হিন্দু মহাসভা তথা আরএসএসের এই রাজনীতির তীব্র বিরোধিতা করে এসেছেন। তাই মোদির মুখে এখন নেতাজির ঐক্যের বাণী-স্মরণ হাস্যকর লাগে। ভণ্ডামিও মনে হতে পারে।
5d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পদার্থ ও রসায়নিক বিদ্যার অনুশীলনে বিশেষ উন্নতি।প্রায় সম্পূর্ণ কাজে বাধা আসতে পারে। বিকেল থেকে মানসিক...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৫.৭৮ টাকা৮৭.৫২ টাকা
পাউন্ড১০৫.৯৮ টাকা১০৯.৭২ টাকা
ইউরো৮৮.৭৪ টাকা৯২.১১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা