পদার্থ ও রসায়নিক বিদ্যার অনুশীলনে বিশেষ উন্নতি।প্রায় সম্পূর্ণ কাজে বাধা আসতে পারে। বিকেল থেকে মানসিক ... বিশদ
• অভিনয়ের সুযোগ
অসম্ভব খুঁতখুঁতে। গল্প, চিত্রনাট্য, সংলাপ কিংবা সিনেম্যাটিক লজিক, একশো শতাংশ মনঃপুত না হলে অভিনয় বা পরিচালনা কোনওটাই করেন না। এহেন অপর্ণা সেন অভিনয়ের অবকাশ পেয়েই ‘এই রাত তোমার আমার’-এ অভিনয় করতে রাজি হয়েছিলেন। তাঁর ভাষায়, ‘রিয়ালিস্টিক অভিনয়ের স্কোপ।’ শুধুই কি তাই? মাপা হাসি ছড়িয়ে বলেন, ‘তার চেয়েও বড় লোভনীয় ব্যাপার ছিল, অঞ্জন দত্ত আর আমি একসঙ্গে অভিনয় করছি। অঞ্জনের মতো এত ভালো অভিনেতা আমাদের এখানে কম আছে।’ অকপট অভিনেত্রীর বিশ্লেষণে, ‘গল্পটাও ভালো লেগেছিল। সারা জীবনের শেষে এসে একটা বোঝাপড়া। ভালোবাসা, বঞ্চনা, সেইসঙ্গে জয়িতার (অভিনীত চরিত্র) অসুস্থতা, দুষ্টুমি, খুনসুটিও আছে। সব মিলিয়ে আমার মনে হয়েছিল পরত আছে।’
• ভেতরের শক্তি
‘দাম্পত্যের মধ্যে কেউ একজন বেশি স্ট্রং হয়। অন্যজন তুলনায় দুর্বল। অনেক সময় হয় মানুষের ভিতরে শক্তি থাকে, সেটা ভিতরেরই জিনিস’, এই অন্তর্নিহিত শক্তির জন্যই জয়িতাকে নিজের মতো মনে হয়েছে বলছিলেন অপর্ণা।
• নন্দনবোধ
বরাবরই মার্জিত, ছিমছাম, রুচিসম্মত প্রসাধনে নিজেকে সাজিয়েছেন অপর্ণা। তাই আটাত্তরেও তিনি বর্ণময় ব্যক্তিত্ব। সেই গোপন ব্যাকরণ ফাঁস করলেন ‘মৃণালিনী’। ‘এটা আমি পেয়েছি আমার মায়ের কাছ থেকে। মায়ের নন্দনবোধ আমাকে খুব আকর্ষণ করত। পণ্ডিতিয়ার বাড়িটা মা অল্প উপকরণে খুব সুন্দর করে সাজাত। তাই রুচিসম্মতভাবে সব কিছু করতে ভালোলাগে। আয়নায় আমার চেহারাটা রুচিহীন যেন না দেখায়।’ তারপরেও সতর্ক অভিনেত্রী সাবধান করে দেন, ‘আগের অপর্ণা সেনকে পর্দায় আশা করবেন না। চরিত্রের প্রয়োজনে একটু রোগা হতে হয়েছে। সত্যিই আগের বয়স আর নেই। তবুও আমাকে নয়, আমাদের অভিনয় দেখতে আসুন, আশাহত হবেন না।’
• বয়স বাধা
দীর্ঘ অভিনয় ও পরিচালক জীবনে অপর্ণা-অঞ্জন একই ছবিতে একাধিক কাজ করলেও ‘এক ফ্রেমে’ এই প্রথম। ‘আসলে আমাদের কেউ জুটি হিসেবে ভাবেননি কোনওদিন।’ প্রচ্ছন্ন আক্ষেপের মধ্যেও উৎসাহী অপর্ণার আশা, ‘এখনও হতে পারে।’ সেটা কি একে অপরের পরিচালনায়? ভেবে বললেন, ‘আমার সেই বয়সটা আর নেই। অভিনয়, পরিচালনা দু’টো একসঙ্গে আর পারব না। ‘পারমিতার একদিন’- এ পেরেছিলাম। ‘ইতি মৃণালিনী’র সময় খুব কষ্ট হয়েছিল।’ অঞ্জন অবশ্য অপর্ণাকে নিয়ে একটি চিত্রনাট্য প্রস্তুত করে রেখেছেন। ছবির সম্ভাব্য নাম ‘বসি’। কিন্তু প্রযোজকের অভাব। অভিনেত্রীর উদাসী জবাব, ‘ছবিটা করার খুব ইচ্ছে আমার। আর মনে হয় না সম্ভব হবে। বয়সটা পেরিয়ে গিয়েছে।’
• পরিসর কমছে
‘৩৬ চৌরঙ্গী লেন’ থেকে ‘দ্য রেপিস্ট’, পরিচালক অপর্ণার প্রায় তেইশ বছরের পরিক্রমা। অভিনেত্রী হিসেবে শুরু ১৯৬১ সালে, ‘তিন কন্যা’র মাধ্যমে। এই দীর্ঘ যাপনের পর অভিজ্ঞ অভিনেত্রী-পরিচালকের পর্যবেক্ষণ ‘আমাদের জায়গাটা কমে গিয়েছে।’ অপর্ণার অভিযোগের আঙুল সরাসরি টেলিভিশন ধারাবাহিকের দিকে। কেন? ‘মানুষের রুচি একদম নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’ প্রাসঙ্গিকতায় উঠে আসে অপর্ণার শেষ পরিচালিত ছবি ‘দ্য রেপিস্ট’। পরিচালকের আক্ষেপ, ‘প্রযোজকরা ছবিটা যদি না দেখায়, কী আর করার আছে? আমজনতার নাকি ভালো লাগবে না। অথচ প্রযোজকদের পছন্দ। আমার প্রশ্ন আপনাদের যদি ভালো লাগে, তাহলে সাধারণ দর্শকের কেন ভালো লাগবে না?’
• কম ভুল
দীর্ঘ সিনেমা-যাপনের পর এখন পিছনে ফিরে তাকিয়ে ফেলেন কখনও। ভালো মন্দের বিশ্লেষণে না গিয়ে পরিচালক অপর্ণা হেসে বলেন, ‘সবচেয়ে কম ভুল করেছি দুটি ছবিতে। ‘জাপানিজ ওয়াইফ’ আর ‘দ্য রেপিস্ট’।’