পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি কর্মে ব্যস্ততা। ব্যবসা সম্প্রসারণে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা। ... বিশদ
গল্পকার তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া কয়েকটি অভিজ্ঞতার কথা গল্পাকারে তুলে ধরেছেন। প্রথম গল্প ‘ডোবারু’। রঙ্গিলা (অমিত সাহা) এক অদ্ভুত চরিত্রের মানুষ। সাধু হওয়ার আশায় ঘর ছাড়ে। কিন্তু হিমালয়ের ঠান্ডা সহ্য করতে না পেরে ফিরে আসে সমতলে। এখানেও যে তপস্যা করার চেষ্টা করেনি তা নয়। মশার কামড়ে রণে ভঙ্গ দেয়। তাই সাধু হওয়ার আশা ছেড়ে গোপালপুরের সমুদ্রতীরে যায় কাজের খোঁজে। পেট চালাতে তার আজব পেশা । সাঁতার না জেনেও পর্যটকদের সে দেখায় সমুদ্রে কীভাবে মানুষ তলিয়ে যায়। রঙ্গিলার একার অভিনয়েই এই গল্পের বৈতরণী পেরিয়ে গিয়েছে। রঙ্গিলার সঙ্গে দর্শকও পৌঁছে গিয়েছিল গোপালপুর। অমিতের শরীরী ভাষা, সংলাপ বলার কায়দা এক কথায় মুগ্ধ করে। আলো ও আবহে সমুদ্রের ভাবনা ও প্রয়োগ বেশ ভালো।
পরের গল্প ছিল ‘করাঞ্জলি’। এই গল্পে গল্পকার এক সাধারণ খেটে খাওয়া মুটে। গল্পের প্রধান চরিত্র রঙ্গিলার (বুদ্ধদেব দাস) সরল ভাবধারা আর পরিমিত বুদ্ধির বিষয়কে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন পরিচালক। সমর (অনুরণ সেনগুপ্ত), ইন্দিরা (শাঁওলি চট্টোপাধ্যায়), ঝর্ণা (অভিনন্দা দে), জয়নীর (মধুরিমা গোস্বামী) স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয় গল্পে গতি আনে। দুই দ্বাররক্ষক শর্মা (অর্ক চক্রবর্তী) ও পাল (সুরজ বিশ্বাস) বেশ ভালো। প্রান্তিক মানুষের চরিত্রকে দারুণ ভাবে তুলে ধরেছেন বুদ্ধদেব দাস। রূপসজ্জায় রঙ্গিলা বানিয়ে তোলার জন্য সঞ্জয় পালের তারিফ প্রাপ্য। ঢাকের শব্দের সংযোজনে জানলা খুলে দেখা পুজোর আবহকেও সুন্দর ধরা হয়েছে।
শেষ গল্প ছিল ‘রঙ্গিলার নাম রঙ্গলাল’। রঙ্গলাল (বিশ্বজিৎ সরকার) গরিব হতে পারে কিন্তু ঐতিহ্যের মর্যাদা সে জানে। জীবনের লড়াই থেকে রাজনৈতিক প্রতিশোধ সামলে জীবন সায়াহ্নে এসে হাঁটুর ব্যাধি তাকে থমকে দিলেও কাবু করতে পারেনি। অতি সাধারণ জীবন যাপন থেকে হাঁটুর চিকিৎসা দিবাস্বপ্নের মতো ব্যাপার রঙ্গলাল ও নন্দিতার (সংযুক্তা চৌধুরী) কাছে। সন্তানহারা এই দম্পতির জীবন সংগ্রামের লড়াইটা লেখককে উদ্ভুদ্ধ করে। কথায় কথায় লেখক জানতে পারেন রঙ্গলালের কাছে মহাত্মা গান্ধীর লেখা একটা চিঠি আছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য অনেক। এই চিঠি বিক্রি করতে পারলেই হাঁটুর সমস্যার সমাধান। কিন্তু রঙ্গলাল রাজি হয়নি। আগের দুটো গল্পে চমক ছিল। শেষ গল্পে সেই চমকটা পাওয়া গেল না। তবে গল্পকার তথা লেখক খুব সুন্দর করে বেঁধেছেন গল্পগুলিকে। অভিনেতা তথা পরিচালক তথাগত চৌধুরী লেখকের ভূমিকার পাশাপাশি গল্পের চরিত্র হয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মঞ্চে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন।