পদার্থ ও রসায়নিক বিদ্যার অনুশীলনে বিশেষ উন্নতি।প্রায় সম্পূর্ণ কাজে বাধা আসতে পারে। বিকেল থেকে মানসিক ... বিশদ
এর প্রথম কারণ ৬ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ আমাজন নদীর অস্থির চলন ও জলপ্রবাহ। দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, পেরু, কলম্বিয়ার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে এই নদী। প্রধানত জুন থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এখানে থাকে বর্ষাকাল। নদীর স্বাভাবিক প্রস্থ বর্ষায় অনেক গুণ বৃদ্ধি পায়। যেমন জানুয়ারিতে নদীর যা প্রস্থ থাকে, বর্ষায় সেই প্রস্থ দশগুণ বেড়ে যায়। দু’কূল ভাসিয়ে চওড়া হয়ে ওঠে নদী। বেড়ে যায় জলের গতিবেগও। এই পরিস্থিতিতে আমাজন নদীর উপর সেতু তৈরির চিন্তাও বোধহয় কেউ করেননি! কারণ বর্ষায় তা কাজেই লাগবে না। আমাজনের পার্শ্ববর্তী এলাকার মাটিও অত্যন্ত নরম। সেখানে কোনওভাবেই সেতুর পরিকাঠামো নির্মাণ করা সম্ভব হয় না। আবার নদীর জলস্তরের হ্রাস-বৃদ্ধিও অনিয়ন্ত্রিত। এই এলাকায় গভীর, পোক্ত ভিত্তি স্থাপন করা যেমন ব্যয়সাপেক্ষ, তেমনই সময়সাপেক্ষ। নদী উপত্যকাও সেতু তৈরির জন্য উপযুক্ত নয়।
ব্রিজ বা সেতুর মূলত প্রয়োজন পড়ে যাতায়াতের জন্য। আমাজনের দু’পাড়ে বড় শহর বা ঘন জনবসতি নেই। বরং ঘন জঙ্গলে ঢাকা রয়েছে এই নদী। আবার, আমাজন উপকূলের যে সমস্ত এলাকায় মোটামুটি জনবসতি দেখা যায়, সেখানে নদী পারাপারের জন্য ফেরির ব্যবস্থা রয়েছে। তাই ব্রিজের প্রয়োজন পড়ে না।
আমাজন প্রবাহিত হয়েছে ৫৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত বিশ্বের বৃহত্তম রেন ফরেস্টের মধ্যে দিয়ে। কয়েক লক্ষ প্রাণী ও গাছপালার ঠিকানা ‘পৃথিবীর ফুসফুস’-এ। লোভ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার বশবর্তী হয়ে এখানে অরণ্য ধ্বংস করে চলছে নগরায়ণ। যার কুপ্রভাব সরাসরি পড়ছে বিশ্বের জলবায়ুতে। কয়েক বছর আগে আমাজনের জঙ্গলের বিস্তীর্ণ অংশ দাবানলে পুড়ে গিয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলে আরও বড় সমস্যা ডেকে আনতে পারে। সেতু ও রাস্তা তৈরি করতে গেলে প্রচুর গাছ কাটতে হবে। যা আমাজনের জীববৈচিত্র্যের জন্য মোটেও ভালো কাজ হবে না। এ কারণেই আমাজন নদীর উপর দিয়ে সেতু তৈরির চিন্তা করা হয় না।