উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
পুকুরপাড়ে বসে বসে সৈকত এসবই ভাবছিল। মন উড়ুক ঘুরুক, উড়তে উড়তে ঘুরতে ঘুরতে যেখানেই যাক না কেন, তার চোখ অবশ্য ফাতনার দিকে স্থির। ফাতনা নড়লে, নড়াচড়ার ধরন দেখলেই বুঝতে পারবে, বঁড়শিতে মাছ গেঁথেছে কি না, সেই বুঝে হেঁচকা টান। কোথায় পালাবে বাবা, জ্যামিতিবক্সের স্কেল-সাইজের ল্যাটা হয়তো তখন তিড়িং বিড়িং লাফাচ্ছে!
এক ভাবনা থেকে আরেক ভাবনা, মুহূর্তেই ভাবনা পাল্টে যায়। এই তো ভাবছিল ট্রেন-সম্প্রসারণ নিয়ে, সেই ভাবনা বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ মোড় নিয়ে নেয় মৎস্য-শিকারে। চারের জাদুতে ছিপে ল্যাটা ব্যাটা ছটফটাচ্ছে, এমন এক দৃশ্য চোখের সামনে ভাসতে থাকে, ক্রমেই যেন তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
সারাক্ষণই এমন কত ভাবনা মনের মাঝে কিলবিল করে! ভাবনার কি আর শেষ আছে! গল্প হয়তো ফুরোয়, নটেগাছ মুড়োয়, ভাবনা রয়েই যায়। যখন তখন, যে কোনও মুহূর্তেই ভাবনা আবার দুর্ভাবনাও হয়ে ওঠে।
পুকুরপাড়ের চারদিকে রকমারি গাছ। গাছের পাতার ফাঁকফোকর গলে রোদ পড়েছে দুব্বোঘাসে। সবুজ ঘাসে রোদ-ছায়ার কাটাকুটি দেখতেও লাগছে বেশ! পুকুরের পাড় ঘেঁষে বেড়ে ওঠা জামগাছে ওত পেতে বসে রয়েছে এক রং-বাহারি মাছরাঙা। দেখে মনে হচ্ছে, রং-তুলিতে কোনও শিল্পী রাঙিয়ে তুলেছে তাকে।
সৈকত এই প্রথম মাছরাঙা দেখছে, তা নয়। মাঝেমধ্যেই পুকুরপাড়ে মাছরাঙা আসে। কখনও এমনভাবে অবাক বিস্ময়ে মাছরাঙা দেখেনি সে। আজ দেখতে গিয়ে খেসারতও দিতে হল। এসব সাতসতেরো ভাবতে গিয়ে, দেখতে গিয়ে ফাতনা যে নড়ে উঠেছে, তা খেয়ালই করেনি। ঘোর কাটতে এক ঝটকায় ছিপটা তুলে দেখল, অনেক মেহনতে বানানো চার বঁড়শিতে নেই আর! ছিটেফোঁটাও নেই। ধূর্ত মাছ সুযোগ বুঝে খেয়ে পালিয়েছে। সৈকতের মনে হয়, নির্ঘাৎ বড়সড় মাছ ছিল। ধরতে না-পারা সে-মাছের জন্য মনের ভেতর হু-হু করে ওঠে।
চার খেয়ে মাছ পালানোর দুঃখ ভুলতে পারে না সৈকত। পাখিদের কিচিরমিচির, ফড়ফড়াফড় ফড়িঙের উড়ে যাওয়া বা এ-ফুলে সে-ফুলে ঘুরে বেড়ানো, কিছুই আর চোখ টানে না তার! ভাল্লাগছে না। ‘ঢের হয়েছে মাছ ধরা, এবার উঠি ‘... বিড়বিড়িয়ে একথা বলে উঠতে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই সৈকতের চোখ চলে যায় ফাতনায়। ফাতনা নড়ে উঠল, নড়ে উঠেই থামল না, ছিপের সুতো দূরে চলে যাচ্ছে যেন! প্রথমে মৃদু টান, পরমুহূর্তেই সে-টান বাড়ে। মনে হয়, ছিপের সুতোয় গায়ের জোরে কেউ টান দিচ্ছে। হুইল ঘুরছে, সুতো খুলছে। সৈকত কালবিলম্ব না করে সর্বশক্তি দিয়ে হেঁচকা টান মারে।
টান মারতেই বিস্ময়! ইয়াব্বড়ো মৃগেল। ছটফটাচ্ছে, পারলে ছিপের সুতো ছিঁড়ে ঝাঁপ দেবে জলে। ওই জলেই ঘরসংসার, আত্মীয়কুটুম, ওখানেই বুঝি ফিরে যেতে চায়!
দু’চার বার লাফালেই কি আর ফিরে যাওয়া যায়! একবার ধরা পড়ে গেলে ছাড়া পাওয়া সহজ নয়। মানুষগুলোর তো আর দয়ামায়া নেই! কেটে, ভেজে, ঝোল বানিয়ে চালান দেবে পেটে। সৈকতের মনে হল, ধরা পড়া মছলিবাবু বোধহয় একথাই ভাবছে!
সৈকত গেঁথে থাকা মাছটিকে ছিপ থেকে প্রায় জোর করেই ছাড়াতে গেল। পিচ্ছিল মাছটি তিড়িং করে পালাতে গিয়েও শেষ পর্যন্ত পালাতে পারল না। ‘হাঁ’ করা মাত্র মুখের ছিপ ছাড়াতে গিয়ে রক্ত ঝরল। রক্ত দেখে সৈকতের কেমন যেন মন খারাপ হয়ে যায়!
বঁটিতে মা মাছ কাটছেন। গলগলিয়ে রক্ত পড়ছে। মনের কোণে অযত্নে পড়ে থাকা অতীতের এক ছেঁড়া-ছেঁড়া আবছা ছবি সহসা স্পষ্ট হয়ে উঠল। মাছটাকে দু’হাতে চেপে ধরে বাড়ির দিকে হাঁটতে হাঁটতে সৈকত এক মুহূর্তের জন্য হলেও থমকে দাঁড়ালো।
থমকে দাঁড়ানো মাত্র চমকে উঠল, সামনের পেয়ারাগাছের পাকাপাতার ফাঁকে ছোট্ট একটা হলুদ-রঙা পাখি। পাতার রং পাখির রং মিলেমিশে একাকার। হঠাৎ করে সুরেলা মিষ্টি গলায় শিস না দিলে সৈকত বুঝতেই পারতো না, পাকা পাতার সঙ্গে গায়ের রং মিলিয়ে ছোট্ট পাখিটা গাছের ডালে বসে আছে!
চোখ পড়া মাত্র উড়ুৎফুড়ুৎ, পাখিটাই উড়ে পালাল। মাছটাকে আরও শক্ত করে ধরে বাড়ির দিকেই এগতে থাকে সৈকত। পায়ে পায়ে পুকুরপাড়, গাছগাছালি, ছায়ার কাটাকুটি পেরিয়ে অবশেষে বাড়িতে।
বাড়ি মানে তেমন বড়সড় কোঠাবাড়ি নয়, হাড় জিরিজির ভাঙাচোরা মাটির বাড়ি। উপরে খড়ের ছাউনি। সেই ছাউনি বর্ষার জল খেয়ে খেয়ে রং বদলেছে। খড়-চালে ছড়িয়ে থাকা পুঁইলতাগুলো বেশ ডাগরডোগর। মা’র যত্নে ছোট্ট পুঁইচারা বাড়তে বাড়তে ছড়িয়ে পড়েছে খড়-চালে।
দরজা থেকে ঘরে ঢুকেই সৈকত মাছ ধরার আনন্দে চিৎকার করে মাকে ডাকল। না, সাড়া পেল না! একবার, দু’বার, তিনবার। পরপর তিনবার ডেকেও সাড়া না পেয়ে সৈকত নিশ্চিত হল, মা নিশ্চয়ই পাশের বাড়ির রমলামাসির কাছে গেছেন। মাছটাকে রান্নাঘরে গামলা চাপা দিয়ে রাখল সৈকত। তখনও মাছটা বেঁচে! প্রাণশক্তি কমে এসেছে, সেই তেজ আর ছটফটানি নেই। খাবি খাচ্ছে!
রান্নাঘরের পাশের দরজা দিয়ে দু’পা এগলেই রমলামাসির ঘরসংসার। সৈকত যা ভেবেছে ঠিক তাই। রমলামাসির সঙ্গে মা গল্প জুড়েছেন।
মা ঘরদোর খোলা রেখে এখানে এসে গল্পে মজেছে দেখে সৈকত একটু ক্ষুণ্ণই হয়। পারলে দু’কথা শুনিয়ে দেয়। বলতে গিয়েও শেষ পর্যন্ত অবশ্য কিছুই বলল না। মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে কেমন যেন মায়া হল!
এই ক’মাসে মা কেমন বুড়িয়ে গেছেন। মুখে একফোঁটাও আলো নেই। আঁধার ঘনিয়ে এসেছে। ফলে বকুনির সুরে তাঁকে আর কিছুই বলা হয় না সৈকতের। মা’র মুখের দিকে ফ্যালফেলিয়ে তাকিয়ে থাকে। মা’র মুখের দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে থাকতে না-ভালোলাগা বোধ আবার চাগাড় দিয়ে ওঠে। অনেক রোগের কথা এই বারো বছরের জীবনে সে শুনেছে। না, এমন রোগের কথা জন্মে শোনেনি। প্রতিদিনই বাড়ছে, লোক মরছে। এই বুঝি এল ভাইরাস! ভয়ে জড়সড় হয়ে কাটল দিনের পর দিন। তারপর যাও বা খুলল, স্কুল-কলেজ বন্ধ, লেখাপড়া বন্ধ। ফলে সৈকতের স্কুল যাওয়া নেই। বাবার অফিস যাওয়া নেই। এই ভাবে দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ , মাসের পর মাস গড়িয়ে গেল!
জমিটমি নেই। বাবা কোনওদিন মাঠে যাননি। চাষাবাদ করেননি। আরামবাগ কলেজ থেকে গ্রাজুয়েট হয়ে কত স্বপ্ন দেখেছিলেন! কোনও স্বপ্নই শেষপর্যন্ত সত্যি হয়ে ওঠেনি। কোথায় সব হারিয়ে গেছে! শেষে কলকাতার গণেশ টকিজের দিকে এক অফিসে মেলে সামান্য মাইনের চাকরি। অফিসের কাজ, বাইরের কাজ, কাজের শেষ নেই! এত খাটাখাটুনির পরও পেট ভরে না। অভাব তীব্র, নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যায়।
সেই বিচ্ছিরি অসুখটা কমেনি, বরং বেড়েছে। সবার এখন মুখ বাঁধা। চোখেমুখে আতঙ্ক! টিভিতে সারাক্ষণই মৃত্যুর পরিসংখ্যান। কবে আসবে ভ্যাকসিন, না, কেউই জানে না। এরই মধ্যে আজ ট্রেন চালু হয়েছে। বাবাও মুখ বেঁধে মাথায় টুপি পরে অফিসে দৌড়েছেন। এই ক’মাসে বাবা পাঁচ-সাতবার অফিসে ফোন করেছেন, এই পর্যন্তই। প্রথম প্রথম এদিকে সেদিকে বের হতেন। পরে বাইরে বের হওয়ার উৎসাহই বুঝি হারিয়ে ফেলেছিলেন! সারাক্ষণই মন-মরা! মুখে আষাঢ়ের মেঘ, খুবই যে চিন্তা-দুশ্চিন্তায় রয়েছেন, তা গোপন থাকেনি। এ-ক’মাস অভাবে অনটনে কী কষ্টেই না কেটেছে! কেটেছে বা বলা কেন, কীভাবে কাটছে, তা ভাবতে গিয়ে সৈকতের সব কষ্ট গলার কাছে দলা পাকিয়ে গেল।
টানা মাস আটেক ট্রেন বন্ধ থাকার পর আবার চালু হয়েছে। সকালে আজ সবার আগে ঘুম ভেঙেছে বাবার। মাকে ডেকেছেন। অনেক দিনের অনভ্যাস, তবুও উঠতে দেরি করেননি মা। রান্নাঘরে বাসনকোসনের শব্দ ঘুমচোখেও কানে এসেছে সৈকতের। আড়মোড়া ভাঙতে আরও কিছুটা সময় লেগেছে। জানলা গলে একটুকরো রোদ ঢুকে পড়েছে ঘরে, সরাসরি বিছানায়। তবু সৈকতের ইচ্ছে করেনি বিছানা ছেড়ে উঠতে।
পড়াশোনায় এখন ঢিলেমি পড়েছে। কতদিন স্কুল যাওয়া নেই। শেষ কবে গিয়েছিল, তাও বুঝি মনে পড়ে না! ক্লাসরুমে, বেঞ্চিতে, চেয়ারে, টেবিলে অনেক ধুলো জমেছে। বড্ড দূরে, দু’গ্রাম পেরিয়ে যেতে হয় স্কুল। এসব ভাবতে ভাবতে সৈকত ঠিক করে নেয়, কাল সকালের দিকে বেরিয়ে পড়বে। একবার স্কুলটা দেখে আসবে।
মা সৈকতের পিছু পিছুই চলে এসেছেন রমলামাসির বাড়ি থেকে। রান্নাঘরের কাছে এসে সৈকতের মুখেই শুনলেন, মস্ত এক মৃগেল মাছ ধরেছে। সৈকত মাছ ধরার কথা বলে প্রবল উল্লাসে। সাত-রঙা রামধনু খেলে যায় তার চোখে-মুখে। সে রং-আলো অবশ্য মা’র মুখে ছড়াল না। সেখানে অমাবস্যার নিষ্প্রদীপ রাত, ঘন ঘোর অন্ধকার।
গামলা দিয়ে ঢেকে রাখা মাছটাকে সৈকত দেখায় তার মাকে। মা দেখে যে আনন্দে ডগমগ হলেন, তা নয়, বরং একটু বিপন্নই বোধ করলেন! নিজের মনে বিড়বিড়িয়ে বললেন, এত বড় মাছ! কী দিয়ে ভাজব? তেল কোথায়?
যতই আস্তে বলুন না কেন, সৈকতের তা কানে যায়। আরও মন খারাপ হয়ে গেল। দারিদ্র্যের যন্ত্রণা তাকে কুরে-কুরে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়।
তেলের অভাবে সব মাছ মা ভাজতে পারলেন না। কেটেকুটে বেশ কিছুটা পৌঁছে দিলেন রমলামাসির বাড়িতে। খুব খুশি রমলামাসি। সৈকতকে বললেন, বেশ বড় মাছ, মাছের কালিয়া বানাব। তুই দুপুরে এখানে খাস।
হঠাৎ করে নেমন্তন্ন পেয়ে সৈকতের ভালো লাগলেও খারাপ লাগাও রয়ে যায়। মাকে রমলামাসি খেতে বললেন না। মা তেলের শিশি উল্টে নিজেদের জন্য রাখা মাছটুকু ভাজলেন। তেল কম পড়ায় ক’টা পুড়ে গেল।
রমলামাসির বাড়িতে খাওয়ার পর লম্বা ঢেকুর তুলল সৈকত। আহা, রান্নার কী সোয়াদ! হাতের জল শুকিয়ে গেলেও জিভে সেই সোয়াদ লেপ্টে থাকে।
বাবার ফিরতে রাত হয়ে যেত আগে! আজও নিশ্চয়ই তেমনি রাত করে ফিরবেন, ভাবতে থাকে সৈকত। বাবার সঙ্গে প্লাস্টিকের প্যাকেটে মুড়ি থাকে। সারাদিন খাটাখাটনির পর হাওড়ায় পৌঁছে ট্রেনে উঠে মুড়ির সঙ্গে একটু চানাচুর খেয়েই কী আনন্দ! খিদের আগুন জুড়োলে, পেটে ছুঁচোর নৃ্ত্য থামলে ডেলিপ্যাসেঞ্জার বন্ধুদের সঙ্গে চলে যত বকরবকর! বাবার মুখেই এসব শুনেছে সৈকত। নড়বড়ে চেয়ারে বসে এসব ভাবতে ভাবতে সৈকতের ঘুম-ঘুম লাগে।
হঠাৎই কড়া নাড়ার শব্দ। একনাগাড়ে বাবা যেভাবে নেড়ে যান, তেমন নয়। থেমে থেমে নাড়া। স্বতঃস্ফূর্তভাবে নাড়া নয়, নাড়তে হয়, ডাকতে হয়, তাই বুঝি নাডছেন, ডাকছেন! বাবা আবার ফিরে আসেননি তো, এই অসময়ে ফিরবেনই বা কেন, এমন এক দোলাচলের মধ্যেই সৈকত দরজা খুলে দেয়। দরজা খুলেই থ, আরে, বাবাই তো দাঁড়িয়ে রয়েছেন! ঝড় বয়ে গেছে তাঁর ওপর দিয়ে যেন! খুব বিপন্ন দেখাচ্ছে তাঁকে। ততক্ষণে মাও এসে পড়েছেন দরজার কাছে। বাবাকে এমন উদ্ভ্রান্তের মতো দেখে হাতটা চেপে ধরে জিজ্ঞাসা করলেন, কী হয়েছে? শরীর খারাপ?
বাবা দরজার বাইরে স্তব্ধ হয়েই দাঁড়িয়ে রইলেন। ভেতরে ঢোকার মতন শক্তি নেই তাঁর। মা কোনও রকমে হাত ধরে ভেতরে নিয়ে এলেন। ধপাস করে সশব্দে চৌকিতে বসে সৈকতের হাত চেপে ধরলেন বাবা। তারপর খুব আস্তে, নিচু গলায় বললেন, জানিস, আর আমায় অফিস যেতে হবে না। চাকরিটা নেই। কয়েকজনকে ছাঁটাই করেছে, তার মধ্যে আমিও আছি।
গলার স্বর খুব আস্তে। আরও নিচু গলায় স্বগতোক্তির মতো করে বললেন, মাসের পর মাস অফিস যাইনি! যেতে পারিনি, সেই কারণেই চাকরি গেল। এই অজুহাতেই তো আমায় তাড়াল!
বাবার কথা শেষ হওয়ার আগেই মা বিমর্ষ হয়ে মেঝেতে বসে পড়লেন। সৈকতের মনে হল, এতটুকু ঘরে আস্ত এক কালবোশেখি ঢুকে পড়েছে। ঝড়-বাতাসে সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। ছোট্টটি আর নেই সে, দমকা বাতাসে হঠাৎ এই বড় হয়ে ওঠা সৈকতও এখুনি বুঝি ধপাস করে মাটিতে পড়ে যাবে!