Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

অমূল্য রতন
প্রদীপ আচার্য

একেবারে বাজপাখির মতো ছোঁ মেরে বইটাকে তুলে নিলেন প্রমদাকান্ত। উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপছিলেন তিনি। এই বইটা তিনি এভাবে ফুটপাতে পাবেন কোনওদিন স্বপ্নেও ভাবেননি। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কিন্তু, তিনি এই মুহূর্তে যা দেখছেন, তা কোনও ভোজবাজি বা স্বপ্ন নয়। কোনও দৃষ্টিভ্রমও নয়। একেবারে দিনের আলোয় জ্বল জ্বল করছে এক নির্মম সত্যি। প্রমদাকান্তর উত্তেজনা বেড়ে যায়। গলায় খরা লেগে যায়। একগ্লাস জল পেলে ভালো হতো এখন। এই বই তিনি কিছুতেই হাতছাড়া করতে পারবেন না। হাজার টাকা দিতে হলেও দেবেন প্রমদাকান্ত। 
ছেলেটা দেখেনি ভাগ্যিস। দেখলে দাম বাড়িয়ে বলত নির্ঘাত। ফুটপাতের দোকানদার ওরা। কাস্টমারের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বোঝে। প্রমদাকান্তও কম যান না। এই ফুটপাত থেকে জলের দরে দেশি-বিদেশি সাহিত্যের অনেক অমূল্য রতন তুলে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। সেই যে সেই যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখো তাই...। প্রমদাকান্ত তাই করেন। তবে কোনও বই নিয়ে বেশি আগ্রহ দেখালে ওরা বুঝতে পারে। ভেবে নেয় পাখি ফাঁদে পড়েছে। উড়ে যাবে না। তাই নট নড়নচড়ন। তখন ফিক্সড প্রাইসের গাওনা গায়। আরে রাখ তোমার ফিক্সড প্রাইস। ফুটের বইয়ের দোকান। কোনও বাড়ির মনিব মারা গিয়েছে। ছেলেরা বিদেশে থাকে। বাড়ির চাকর বইয়ের আলমারি ফাঁক করে ঝেড়ে দিচ্ছে। নইলে এত পুরনো এডিশনের রেয়ার বই এত কমে বেচো কী করে চাঁদু? ওসব আমাকে শেখাতে এসো না। মনে মনে এসবই বিড়বিড় করেন প্রমদাকান্ত। আবার ভাবেন, সবই কি বাড়ির চাকর ঝাড়ে? ছেলেরাও তো জঞ্জাল সাফ করার জন্য আলমারি ধরেই বেচে দিচ্ছে আজকাল। বাবা হয়তো অভাবের মধ্যেও কষ্টের টাকায় বই কিনেছেন।  আহাম্মকের মতো কাজ করেছেন। যেমন তিনি করছেন।
কবে আছেন কবে নেই। একবার তাঁর ছেলে অর্ক তাঁর একটা ছবি বাঁধানোর আর্জেন্ট অর্ডার দিলেই হল। সাদা কাপড়ের ম্যারাপ খোলা ইস্তক তর সইবে না, আলমারি ধরেই হয়তো বেচে দেবে।
ছেলেকে ডাক্তার বানিয়ে কানমলা খেয়েছেন তিনি। সাহিত্যের সাতশো কিলোমিটার দূর দিয়ে হেঁটে চলে যায়। বইগুলো সব ওজন দরেই হয়তো বেচে দিয়ে বেঁচে বর্তে যাবে। প্রমদাকান্ত ভাবেন, অর্কর বউ মধুরিমাও তো ডাক্তার। তাঁর তো বইয়ের প্রতি বেশ আগ্রহ আছে। ছেলেটা অমন বেরসিক হল কী করে? বাপের কিসসু পায়নি অর্কটা। উল্টে বউমা মধুরিমা যেন শ্বশুরের ধাঁচ পেয়েছে। রীতিমতো বইপত্তর পড়েটড়ে। আজকের এই ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের ই-বুকের এরাতেও ওই বয়সি একটা মেয়েকে বই পড়তে দেখলে নতুন করে বাঁচতে ইচ্ছে করে।
পেনশনের টাকায় এমনিতেই টেনেটুনে চলতে হয় প্রমদাকান্তকে। সেই টাকায় থাবা বসাচ্ছে বই। একেবারে বাঘের থাবা। রেহাই নেই। কী করবেন প্রমদাকান্ত? রেয়ার বই পড়া, সেসব বই সংগ্রহে রাখার নেশা মদের নেশার চেয়েও মারাত্মক। সেই নেশাতেই সপ্তাহে একবার অন্তত এই অঞ্চলে ঢুঁ না মারলে পেটের ভাত পাকস্থলী ইস্তক পৌঁছবে না প্রমদাকান্তর।
হাতে বইটা নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁপতে থাকেন প্রমদাকান্ত। ছেলেটার অবশ্য হুঁশ নেই। শেষমেশ জলের দরেই বইটা পেয়ে গেলেন তিনি। বইটাকে শুধু রেয়ার কালেকশন বললে ভুল হবে। রেয়ার অব দ্য রেয়ারেস্ট যাকে বলে।
প্রমদাকান্তর বয়স বাহাত্তর ছুঁই ছুঁই। বলতে গেলে জীবনের একেবারে শেষ প্রান্তে এসে এই মহার্ঘ প্রাপ্তিতে তাঁর দু’চোখ ফেটে জল এসে গেল। বইটাকে সাইডব্যাগে সযত্নে গুছিয়ে রাখেন। পাঞ্জাবির পকেট থেকে রুমালটাকে দ্রুত তুলে নিলেন মুঠোর মধ্যে। চশমার কাচ ঝাপসা হয়ে আছে। তাই দু’চোখ রুমালে মুছে নিলেন তিনি। ফুটপাতে একটু ছায়া খুঁজে গিয়ে দাঁড়ালেন। রুমালে মুখ, গলা ও ঘাড়ের ঘাম মুছে নিলেন। চশমাটা ফের চোখে রাখলেন। ভাবলেন, জীবনের এই প্রাপ্তির ঘটনাটা কারওর সঙ্গে শেয়ার না করলে স্বস্তি নেই তাঁর। কিন্তু এই ঘটনা তো রামা-শ্যামার সঙ্গে শেয়ার করা চলে না। বাড়িতে নীলিমাকে বলতে গেলে ভিক্ষে চাই না কুকুর ঠেকাও পরিস্থিতি হবে। বউমা মধুরিমা অবশ্য বুঝবে। তবে ওকে বলারও ইচ্ছে হল না। ইচ্ছে হল না কারণ, প্রমদাকান্তর মনে ও মগজে এসে উঁকিঝুঁকি দিতে শুরু করেছে সুবিনয়। প্রমদাকান্তর প্রিয় ছাত্রদের মধ্যে একজন। তাঁর বিচারে সুবিনয় সবার সেরা। সবচেয়ে প্রিয়। সেরা সমঝদার। প্রমদাকান্তর এক-এক সময় মনে হয়েছে অর্কর বদলে সুবিনয় যদি তাঁর নিজের ছেলে হতো, তাহলে বেশ হতো। অর্কর মতো একটা নীরস আত্মকেন্দ্রিক ছেলে তিনি কামনা করেননি। এমন একটা ঘটনা শুধু সুবিনয়ের সঙ্গেই শেয়ার করতে পারলেই যেন প্রমদাকান্ত স্বস্তি পেতেন। শরীরের সব জ্বালাপোড়ার উপশম হয়ে যেত। কিন্তু সুবিনয় তো তাঁর কাছ থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছে। সেই যাদবপুরে গিয়ে ফ্ল্যাট কিনে সেটেল্ড হয়েছে।  প্রমদাকান্ত ভাবেন, তিনি এখনই সুবিনয়ের কাছে চলে যাবেন নাকি? যাদবপুরেই চলে যাবেন নাকি? নিজের ভেতরে দোটানা চলতে থাকে। তিনিও চলতে থাকেন ডালহৌসি এলাকা ছেড়ে শিয়ালদার দিকে। রাস্তা অনেকটা। তবু বাস ট্রামের তোয়াক্কা করেন না প্রমদাকান্ত। শিয়ালদহে নেমে হামেশাই ধর্মতলা আর ডালহৌসি চত্বরে হেঁটেই চলে আসেন। আবার হেঁটেই ফেরেন। সেই চিরকেলে এগারো নম্বর বাস। একটু হাঁটাচলার মধ্যেই থাকতে চান তিনি। নইলে বয়স পেয়ে বসবে। কলকব্জা সব অকেজো হতে শুরু করবে। শরীর এখনও টানটান মেদহীন। বয়স না বললে ধরা যায় না।
শিয়ালদার খুব কাছাকাছি এসে আবার পোকা নড়ে বসল প্রমদাকান্তর মগজে। নড়ছে তার কারণ, হঠাৎই তাঁর মনে পড়ল, আজ বুধবার। সুবিনয়ের উইকলি ডে অফ। ছুটির দিন নিশ্চয়ই বাড়িতে থাকবে। রেস্ট নেবে। মধ্যমগ্রামের বাড়িতে থাকতে তো বলত, কাল ডে অফ। সূর্যেরও মুখ দেখব না। সত্যিই তো খবরের কাগজের কাজ। চব্বিশ ঘণ্টাই ডিউটি আওয়ার। ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ছোকরা বেশ মজার কথা বলে। বলে, ‘স্যার আটঘণ্টা কাজের দাবিতে যখন আন্দোলন হয়েছে, তখন বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছিলাম আমরা। তাই আমাদের এখন চব্বিশ ঘণ্টা ডিউটি। আর গুলির সামনে যারা বুক পেতে দিয়েছিল, তারা সবাই এখন গিয়ে বসেছে সরকারি চেয়ারে।’ প্রমদাকান্ত ভাবেন, ছেলেটার এই রসবোধের জন্যেই তিনি বয়সের ব্যবধান ভুলে একদা ছাত্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়েছেন। মধ্যমগ্রামে ছিল, কাছে ছিল। দেখা হতো, আড্ডা হতো। ছেলেটার সঙ্গে কথা বলে সুখ আছে। এমন তুখোড় সেন্স অব হিউমার যে, কাকে কী বলে বোঝাবেন প্রমদাকান্ত। বেশ চোস্ত চৌকস ছেলেটা। সুন্দর অবজার্ভেশন। অভিজ্ঞতার অর্জন কিছু কম নয়। প্রমদাকান্ত মনে মনে ছাত্রকেই গুরু মানেন। এই ডিজিটাল যুগে তো তিনি একেবারেই ডিসকোয়ালিফাইড। সাদা কাগজে মার্জিন টেনে কলমে লেখার দিন তো গিয়েছে। প্রমদাকান্তর একটু আধটু লেখালিখির বাতিক আছে। সুবিনয় বলে, ‘স্যার, একটা স্মার্টফোন কিনে নোটপ্যাডে লিখুন। অনেক সুবিধা।’ অর্কর বউ মধুরিমাও বেশ কয়েকবার ঝোঁক তুলেছে, বলেছে, ‘বাবা, চলো তোমাকে একটা দামি ফোন কিনে দিই। আমি সব শিখিয়ে দেব। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে দেব।’
আরে ধুর ওসব দিয়ে কী হবে? আবার ভাবেন প্রমদাকান্ত, ফেসবুকে নাকি অনেক পুরনো বন্ধুর হদিশ মেলে। কৈশোরের বেশ কয়েকজন বন্ধুর কথা তাঁর খুব মনে পড়ে। তাঁরা সব কোথায় যে যার মতো ছিটকে গিয়েছে। তাঁর মধ্যমগ্রামে তিনি একা শিবরাত্রির সলতের মতো আছেন। বসুনগর, বঙ্কিমপল্লিতে যে দু-চারজন ছিল, তাঁদের ছবিতে মালা উঠেছে। বাসুদেব, মলয় ওরা সব কোথায় থাকে? বেঁচে বর্তে আছে কি না ভেবে বুকের ভেতরে এক ধরনের শূন্যতা অনুভব করেন। তাঁর স্কুলের সহকর্মীদের মধ্যে কেউই তাঁকে তেমনভাবে টানে না যে, গিয়ে দু’দণ্ড আড্ডা দিয়ে সময় কাটাবেন। তারচেয়ে তাঁর বইবন্ধু অনেক প্রিয়। অল্প বয়সে পড়া বইগুলো ফিরে ফিরে পড়েন। সেই পড়ার মধ্যে দিয়ে ফিরে ফিরে আসে তাঁর হারিয়ে যাওয়া অনেক মুখ। তলিয়ে যাওয়া অনেক ঘটনা। বেশ রোমাঞ্চ জাগে। তাঁর এই ফিলিংসটা সুবিনয় বেশ ধরতে পারত, বুঝতে পারত। এসব ভাবতে ভাবতেই প্রমদাকান্ত তাঁর অজান্তেই কখন শিয়ালদা সাউথ স্টেশনের দিকে হেঁটে চলে এসেছেন। তার মানে সুবিনয়ই টানছে তাঁকে। আর তাই প্রমদাকান্তকে যেন কোনও ক্লান্তি স্পর্শ করতে পারছে না। আজকের অমূল্য রতন প্রাপ্তির কথা সুবিনয়কে না বলা পর্যন্ত যেন তাঁর কোনও নিস্তার নেই। বাড়ি ফিরতে নির্ঘাত অনেক রাত হয়ে যাবে। বাড়িতে নীলিমা ভাববে। হয়তো বার বার ফোনে তাঁকে ধরার চেষ্টা করবে। তা করুক গে। ফোন বেজে যাক। প্রমদাকান্ত আজ ফোন ধরবেন না। আজ তাঁর কাউকে কোনও কৈফিয়ত দেওয়ার দায় নেই। তাঁর রক্তে এখন যে রোমাঞ্চ জেগে আছে, তাতে সুবিনয়ের সঙ্গে দেখা না হলে সব মাটি হয়ে যাবে।
একটা লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালে ভিড় ঠেলে উঠে গেলেন প্রমদাকান্ত। অফিসযাত্রীদের বাড়ি ফেরার ভিড়। এই কুৎসিত ভিড়ের ট্রেনে ওঠার পাত্র তিনি নন। মধ্যমগ্রাম থেকে দুপুরের ট্রেনে উঠে শিয়ালদা আসেন, ভিড় থাকে না। ফেরার সময় ধীরেসুস্থে বারাসাত লোকালে উঠে সিনিয়র সিটিজেনের সিট। ব্যস নো টেনশন। সেই টেনশন আজ ছুঁতে পারছে না প্রমদাকান্তকে। দিব্যি ময়দা ঠাসা ভিড়ে কাঁধের ঝোলাটাকে কোনওমতে সামলে দাঁড়িয়ে রইলেন। যাদবপুর স্টেশনে হুড়োপাটা করে নেমেও গেলেন। 
স্টেশন থেকে রিকশয় বেশ অনেকটাই পথ। অটোতেও উঠতে পারতেন। সেখানে লাইনে দাঁড়ানোর তর সইবে না প্রমদাকান্তর। তিনি এখন পারলে উড়ে চলে যাবেন সুবিনয়ের কাছে। সেই পাখনাও যেন তাঁর গজিয়ে যেতে পারে। তাঁর কাঁধের ঝোলায় দুষ্প্রাপ্য বইটিকে তিনি পরম যত্নে ভরে রেখেছেন। ঝোলার মুখের কাছটাকে খামচে মুঠো করে ধরে রেখেছেন। প্রমদাকান্ত যেন কোনও এক অলীক পাখিকে ঝোলায় পুরেছেন। যেন মুঠি আলগা করলেই সেই পাখি এই সন্ধেরাতের অন্ধকারেই ফুরুৎ উড়াল দিয়ে পালিয়ে যাবে। একেবারে সুবিনয়ের সামনে গিয়েই এই মুঠি আলগা করবেন তিনি।
সুতনুকা অ্যাপার্টমেন্টের সামনে এসে রিকশ থেকে নেমে পড়লেন তিনি। ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে তরতর সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে তিনতলায় উঠে গেলেন। কে বলবে তিনি বাহাত্তুরে বুড়ো। ডোর বেল চেপে দিলেন। দরজা খুলে সুদেষ্ণা বলল, ‘আরে স্যর আপনি!’
‘সুবিনয় বাড়ি আছে তো?’
‘হ্যাঁ, আছে। আসুন। আপনি ভেতরে আসুন।’ প্রমদাকান্ত ধীর পায়ে ঘরে ঢুকলেন। গন্তব্যে পৌঁছনোর পরে আর কীসের ব্যস্ততা? সুদেষ্ণা মেয়েটি আগাগোড়াই বেশ আন্তরিক। সে চেঁচিয়ে ডাকল সুবিনয়কে, ‘এই যে দেখ কে এসেছেন।’ সুবিনয় বেডরুম থেকে বেরিয়ে এসে ভূত দেখল। ‘এ কী! স্যার আপনি? কোত্থেকে এলেন?’ প্রমদাকান্ত এখন শান্ত। গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, ‘চলো আগে বসি। তারপরে বলছি।’ প্রমদাকান্তকে ডিভানের কাছে বসাল সুবিনয়। নিজে গুছিয়ে বসল  ডিভানে। প্রমদাকান্ত বললেন, ‘আমার লেখা একটা বই তোমায় দিয়েছিলাম তোমাদের কাগজে রিভিউ করতে। মনে পড়ে তোমার?’
‘হ্যাঁ, স্যার। অনেকদিন হল। তবে বইটা আমি আমার কাছে যত্নেই রেখেছি। রিভিউ হবে।’
‘বইটা তোমার কাছে থাকতে পারে না সুবিনয়। কারণ বইটা আজ আমি ফুটপাত থেকে কিনে এনেছি। এই দেখ, আমার নিজের হাতের লেখা, শ্রীমান সুবিনয়কে সমালোচনার জন্য...’
অলংকরণ : সোমনাথ পাল
01st  January, 2023
সখা হে
সোমজা দাস

খাওয়া দাওয়া সেরে সবে সিরিয়াল দেখতে বসেছিল বনানী। আর ঠিক তখনই মোবাইলটা বেজে উঠেছিল। অচেনা নম্বর, অপরিচিত কণ্ঠস্বর। টিভির পর্দা থেকে চোখ না সরিয়ে ফোনটা কানে ছুঁইয়েছিল বনানী অগাধ নির্লিপ্তি নিয়ে। ঝিমলি তখনও স্কুলে, অনন্ত কারখানায়। বিশদ

05th  March, 2023
বাবলা
আইভি চট্টোপাধ্যায়

‘অ বউদি, দেখো আবার চলে এসেছে।’ দরজা খুলেই চিত্‍কার করে মামিকে ডাকল ছবি মাসি। ‘আবার!’ ঘরের মধ্যে থেকেই চেঁচিয়ে উঠেছে মামি, ‘একদম ঢুকতে দিবি না।’ বিশদ

26th  February, 2023
সুগন্ধের মতো
নিয়তি রায়চৌধুরী

 

সতর্ক হল সৌম্য। কী সব ভাবছে সে। বোধহয় একেই বলে অবচেতন, নাহলে তো কালকের অফিস ফেরত বিকেলটাই এতক্ষণ ঘুরছিল মনে। মা বলেছিল, ফেরার পথে রুকুর জন্য একটা টিফিন-বক্স কিনে আনবি। আগেরটা পুরনো হয়ে গেছে। কফিশপ থেকে বেরিয়ে সেটা কিনতে গিয়ে কিঙ্কি বলল, দাঁড়াও আমি পছন্দ করে দিচ্ছি। বিশদ

19th  February, 2023
নাইট ক্রিম
মহুয়া সমাদ্দার

কথায় কথায় কথাটা বলেই ফেলল বিনায়ক। প্রথমে ভেবেছিল চুমকির জন্যে কোনও উপহার এনে সারপ্রাইজ দেবে তাকে। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারল না। পেট থেকে কথাটা নীচে পড়তেই লুফে নিল চুমকি। এটা অবশ্য জানাই ছিল বিনায়কের। এত সুন্দর ক্যাচ মিস করার মতো প্লেয়ার নয় সে। বিশদ

12th  February, 2023
প্রথম
সুন্দর  মুখোপাধ্যায়

বরানগরে জয় মিত্তির ঘাটের ঠিক পাশে যেখানে বালির ট্রাকগুলো দাঁড়ায়, তার আড়ালে একখানা একহারা গাছ গঙ্গার দিকে হেলে দাঁড়িয়ে। গাছের নীচে একটা ভাঙা তক্তাপোষ ফিট করে রেখেছে পাঁচু বোস। তাতে লেখা, ‘অনুমতি ছাড়া বসা নিষেধ। আদেশানুসারে।’ বিশদ

05th  February, 2023
মহানগরের ঘোড়ার গাড়ি
কলহার মুখোপাধ্যায়

‘অভিনেতা অক্ষয়কুমারের হাত দিয়েই বদলে গেল কলকাতার ঘোড়ার গাড়ির ইতিহাস...’ শুনেই হেঁয়ালির মতো লাগল। তবে প্রথমেই সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে পুরোটা শোনার পর বোঝা গেল গল্পটা।
বিশদ

29th  January, 2023
স্কুলছুট
সায়ন্তনী বসু চৌধুরী

সকাল আটটা সাড়ে আটটা থেকেই আকাশে মেঘ জমছিল। বেলা বাড়তে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে শুরু হল টিপটিপ বৃষ্টি। চড়াইদিঘি স্কুলের পাশে এতক্ষণ ব্যাজার মুখে দাঁড়িয়েছিল সুখেন বাউড়ি।
বিশদ

29th  January, 2023
বর্ণাশ্রম
ভগীরথ মিশ্র

নিজে পুরোপুরি নিরক্ষর হলেও মানুষটি মনেপ্রাণে চেয়েছে, নয়ন পড়েশুনে মহা-দিগগজ হোক। সম্ভবত সেই কারণেই, একেবারে শিশুকাল থেকেই, সুযোগটি পাওয়ামাত্র, ঠিক বাচ্চাকে মোয়ার লোভ দেখানোর ভঙ্গিতে  বলত, ‘তুয়াকে কিন্তু মন দিয়ে লিখাপড়া কইরতে হব্যেক বাপ। বিশদ

22nd  January, 2023
পৌষের পিঠেপুলি
হারাধন চৌধুরী

রবীন্দ্রনাথ পিঠেপুলি ভীষণ ভালোবাসতেন। তাই শান্তিনিকেতনের অনেকেই নানারকম পিঠে বানিয়ে কবির কাছে পাঠাতেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শিক্ষক নেপালচন্দ্র রায়ের স্ত্রী ও পুত্রবধূ। ঠান্ডার আমেজ আসামাত্র কবিই জিজ্ঞেস করতেন নেপালবাবুকে, ‘পৌষপার্বণের আর কত দেরি?’
বিশদ

15th  January, 2023
বস্তির ছেলে
কাবেরী রায়চৌধুরী

অর্পিতার মেজাজ যে খারাপ করে দিয়েছে সে বুঝেই চায়ের কাপে চুমুক দিয়েই ডাকল, অপু! শুনছ? অপুউউ...!
অপ্রসন্ন মুখ অর্পিতার, বলল, ‘বল, কী?’  বিশদ

08th  January, 2023
অন্তরের আলো জ্বালাতেই
কল্পতরু উৎসব
সন্দীপন বিশ্বাস

১ জানুয়ারি। বাংলা নববর্ষের পাশাপাশি বাঙালির কাছে ইংরেজি নববর্ষের এই দিনটিও বেশ আনন্দের। সেই আনন্দের স্বাদ পেতে বাঙালি সেদিন বেরিয়ে পড়েন পথে। কারও গন্তব্য পার্ক স্ট্রিট, কারও চিড়িয়াখানা, কারও ইকো পার্ক, আবার কেউবা কোনও বিনোদনস্থল বা পর্যটনকেন্দ্রে চলে যান। বিশদ

01st  January, 2023
দেশ-বিদেশের আলোর উৎসব
তরুণ চক্রবর্তী

আমাদের মনের আলো, আমাদের চেতনার আলো জ্বালিয়ে দিতে চেয়েই আজকের দিনটিতে এই পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন মহামানব যিশু খ্রিস্ট। ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় যন্ত্রণাক্ত হতে হতে তিনি জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তাঁর ঘাতকদেরও ক্ষমা করে। আজ আলোই বুঝি তাঁকে প্রণামের সর্বোত্তম উপাদান। বিশদ

25th  December, 2022
অঙ্গুরীমাল
সঞ্জয় রায়

বাবার পাশে বসে বিনোদ দেখত পুকুর ধারে ভেজা মাটি খুঁড়তেই কিলবিল করতে থাকা ক্ষুদ্র কীটগুলো উঠে আসছে। বাবা বলত, ‘এগুলো মাছের খাবার।’ তারপর কিলবিল করতে থাকা সরু লম্বা লম্বা কীটগুলোকে বাবা একটা ভাঁড়ে মাটির ভিতর জমিয়ে রাখত। বিশদ

11th  December, 2022
ভালোবাসার বাগান
বিতস্তা ঘোষাল

এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে ছেলেটি বাসে বসা মানুষগুলোর মুখের দিকে তাকাল। কী যেন নিরীক্ষণ করে সামনের সিটে বসা ছেলেটির দিকে একটা কাগজ আর পেনটা এগিয়ে দিয়ে লিখে দেখতে বলল। ছেলেটি লিখতে লিখতেই সে আবার বলে উঠল, ‘কোম্পানি শুধুমাত্র এই একটি পেনই আজ বিক্রি করছেন না, তার সঙ্গে দিচ্ছে আরও দুটো পেন,’ বিশদ

04th  December, 2022
একনজরে
নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনকাণ্ডে ধৃত ‘জামাই’ মনোজ রায়ের ফাঁসির দাবি উঠেছে। বৃহস্পতিবার ধৃতকে শিলিগুড়ি আদালতে তোলার সময় এই দাবি তোলেন মৃত নাবালিকার প্রতিবেশীরা। ...

উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছিলেন তনয় মান্না। বাবাকে বলেছিলেন, পরীক্ষা ভালোই হচ্ছে। পরীক্ষার দিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় গিয়েছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপ স্টাডি করতে। রাত আটটা নাগাদ স্কুটি চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। মাঝরাস্তায় একটি মালবাহী গাড়ি সটান এসে ধাক্কা মারে তনয়ের স্কুটিতে। ...

পূর্ব বর্ধমানে বিজেপির ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের শক্তি প্রমুখ গৌতম মাল সহ চারজন নেতা পদত্যাগ করেছেন। ...

তিনদিনের মস্কো সফর সেরে ইতিমধ্যেই দেশে ফিরে গিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং। পশ্চিমি দুনিয়ার শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলিকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

মেয়াদি সঞ্চয় থেকে অর্থাগম যোগ আছে। সন্তানের আবদার মেটাতে অর্থ ব্যয়। ধর্মকর্মে মন আকৃষ্ট হবে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস
বিশ্ব আবহাওয়া দিবস

১৬০৩: ইংল্যান্ডের রানী প্রথম এলিজাবেথের মৃত্যু
১৬৯৩: ইংরেজ সূত্রধর ও ঘড়ি-নির্মাতা জন হ্যারিসনের জন্ম
১৮৬১: লন্ডনে প্রথম ট্রাম চলাচল শুরু হয়
১৮৭৪:  বিশ্বের অন্যতম সেরা জাদুকর হ্যারি হুডিনির জন্ম
১৯০৫: ফরাসি লেখক জুল ভার্নের মৃত্যু
১৯৩৩: এড্লফ হিটলার জার্মানির একনায়ক হন
১৯৫৬: পাকিস্তানকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়
১৯৬১: ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার ডিন জোন্সের জন্ম
১৯৬৫: মার্কিন পেশাদার কুস্তীগির দ্য আন্ডারটেকারের জন্ম
১৯৭৯: অভিনেতা ইমরান হাসমির জন্ম
২০০৫: সঙ্গীতপরিচালক,আবহসঙ্গীতপরিচালক ও যন্ত্র সঙ্গীত শিল্পী ভি বালসারার মৃত্যু
২০২২: টলিউড অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.৩৩ টাকা ৮৩.০৭ টাকা
পাউন্ড ৯৯.৬৭ টাকা ১০৩.০৭ টাকা
ইউরো ৮৮.১২ টাকা ৯১.২৭ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৫৯,৯০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৫৬,৮৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৫৭,৭০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৯,৪০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৯,৫০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৯ চৈত্র, ১৪২৯, শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩। তৃতীয়া ২৮/১৭ অপরাহ্ন ৫/১২। অশ্বিনী নক্ষত্র ১৯/১২ দিবা ১/২২। সূর্যোদয় ৫/৪১/২২, সূর্যাস্ত ৫/৪৫/৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/১৬ মধ্যে পুনঃ ৮/৪ গতে ১০/৩০ মধ্যে পুনঃ ১২/৫৫ গতে ২/৩২ মধ্যে পুনঃ ৪/৯ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/২১ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ৩/১৬ গতে ৪/৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/৩১ গতে ১১/১৯ মধ্যে পুনঃ ৪/৪ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/৪২ গতে ১১/৪৩ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৪ গতে ১০/১৪ মধ্যে। 
৯ চৈত্র, ১৪২৯, শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩। তৃতীয়া রাত্রি ৭/৩০। অশ্বিনী নক্ষত্র দিবা ৩/৫০। সূর্যোদয় ৫/৪৩, সূর্যাস্ত ৫/৪৫। অমৃতযোগ দিবা ৭/৫ মধ্যে ও ৭/৫৫ গতে ১০/২৪ মধ্যে ও ১২/৫৩ গতে ২/৩২ মধ্যে ও ৪/১১ গতে ৫/৪৬ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/২৩ গতে ৮/৫৬ মধ্যে ও ৩/৭ গতে ৩/৫৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ১০/২৯ গতে ১১/১৫ মধ্যে ও ৩/৫৩ গতে ৫/৪২ মধ্যে। বারবেলা ৮/৪৩ গতে ১/৪৪ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৪৫ গতে ১০/১৪ মধ্যে। 
১ রমজান।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
কালীঘাটে জনতা দলের (সেকুলার) নেতা কুমারস্বামীকে স্বাগত জানালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

05:26:00 PM

৩৫৩ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স

03:10:12 PM

রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ
লোকসভায় সদস্যপদ খোয়ালেন রাহুল গান্ধী। আজ, শুক্রবার সেই বিষয়ে লোকসভার ...বিশদ

02:24:00 PM

কুপওয়ারায় অনুপ্রবেশকারী জঙ্গিকে নিকেশ করল নিরাপত্তা বাহিনী
উপত্যকায় নিকেশ এক জঙ্গি। আজ, শুক্রবার জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলার জাব্দির ...বিশদ

02:00:25 PM

মুর্শিদাবাদে আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি

01:47:17 PM

২৪ পয়েন্ট উঠল সেনসেক্স

01:38:25 PM