রকমারি রোদচশমার সঙ্গে ভাব জমালে চোখের যেমন যত্ন নেওয়া হয়, তেমন ফ্যাশনেও এগিয়ে থাকা যায় অনেকটা। কিন্তু কোন মুখে কেমন ফ্রেম মানাবে তা বুঝতে পারলেও কখন কোন সানগ্লাস মানানসই তা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকে। আবার কোথায় কেমন দামে মিলবে তা নিয়েও ভাবনায় পড়েন অনেকে। সমাধানে মনীষা মুখোপাধ্যায়।

শুধু সাজের উপকরণই নয়, দূষণ ও ধুলোবালির হাত থেকেও চোখকে বাঁচায় সানগ্লাস। নামে রোদচশমা বা সানগ্লাস হলেও রোদ না থাকলে যে তা ব্যবহার করা যাবে না, তা কিন্তু নয়। বরং চোখের নিরাপত্তা ও চোখের চারপাশের নরম অনুভূতিপ্রবণ ত্বককে সুরক্ষা দিতেও কাজে আসে রোদচশমা। রোদ না থাকলেও সূর্য থেকে বেরনো অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও চোখকে বাঁচায় সানগ্লাস। বাইক আরোহীদের বেলায় তীব্র গতিতে চলার সময় বাতাসে ভেসে বেড়ানো ধুলোবালি থেকেও চোখকে বাঁচায় সানগ্লাস। তাই শীতের দিন হোক বা ঘোর গরম, এই জিনিসটি কিন্তু সবসময় সঙ্গে রাখা ভালো। অন্তত চোখকে ৭৫ থেকে ৯০ ভাগ আড়াল করতে পারে, এমন রোদচশমাই সংগ্রহে রাখুন। কিন্তু কেমন চশমা আপনার উপযোগী? সানগ্লাস কেনার আগে খেয়াল রাখবেন কী কী? রইল হদিশ।
কখন কোন সানগ্লাস
• ফ্যাশনও চাই, আবার চোখের সুরক্ষাও! এই ভাবনাই যদি মূল হয়, তাহলে মেয়েরা বাছতে পারেন ক্যাটস আই বা বাটারফ্লাই গগলস। আবার একটু ফাঙ্কি ধরনের সানগ্লাস চাইলে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনুন প্রিন্টেড সানগ্লাস। 


• যাঁরা বাইক বা কোনও হুড খোলা গাড়িতে যাতায়াত করেন, তাঁদের জন্য স্পোর্টস সানগ্লাস খুব উপযোগী। চোখকে ধুলোর হাত থেকে বাঁচাতে এটি খুব কাজে আসে। 
• মেঘলা দিনের জন্য তুলে রাখতে পারেন একটি ট্রান্সপারেন্ট সানগ্লাস। এই সানগ্লাসের অপর প্রান্ত থেকে চোখ পরিষ্কার দেখা যায়। সানগ্লাসের কাচেও সবটাই স্পষ্ট থাকে। তাই খুব চড়া রোদের দিনে এমন সানগ্লাস পরা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বরং পড়ন্ত বিকেল বা মেঘলা দিনের জন্য সরিয়ে রাখুন এমন সানগ্লাস। 
• চোখের সমস্যা থাকলে বা চশমা পরলেও  পরতে পারেন হাল ফ্যাশনের যে কোনও সানগ্লাস। সেক্ষত্রে শুধু চোখের পাওয়ার অনুযায়ী সানগ্লাসের কাচটি বদলে নিন।
• গরম ঠেকাতে ও চোখকে চড়া রোদ থেকে বাঁচাতে অ্যাভিয়েটর, রেট্রো, রাউন্ড, ব্রোলিন, ওয়েফেরার সানগ্লাস কেনাই ভালো। সানগ্লাসের কাচ পোলারাইজড আকারের হলে চোখ বেশি আরাম পায়।
• সানগ্লাস কেনার সময় একটু দাম দিয়ে ভালো মানের জিনিস ঠিক দোকান থেকে বাছুন। খুব কমদামি ও ফুটপাতে বিক্রি হওয়া সানগ্লাস কিন্তু চোখের ক্ষতি করতে পারে।
• অতি বেগুনি রশ্মির প্রকোপ থেকে চোখ বাঁচাতে চাইলে ১০০ শতাংশ ইউভি প্রোটেকশন দেয় এমন সানগ্লাস বেছে নিতে হবে। 
কোন সানগ্লাসের কেমন দাম?
মিরর সানগ্লাস: সামনের জিনিসের প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে এই সানগ্লাসের কাচে। এমন সানগ্লাস রাউন্ড শেপ, রেট্রো স্কোয়্যার নানা আকারে মেলে। দাম শুরু ৯৮০ টাকা থেকে। একটু নামী ব্র্যান্ডের এমন সানগ্লাস চাইলে খরচ হবে ২৫০০ টাকার আশপাশে। 
ইউভিআই সানগ্লাস: সূর্যের চড়া রোদ ও অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখকে বাঁচাতে চাইলে ইউভি প্রোটেক্টরযুক্ত সানগ্লাস কিনুন। নিজের পছন্দ মতো আকারে কিনতে পারেন এমন সানগ্লাস। দাম পড়বে ১০০০-১৫০০ টাকার মধ্যে। তবে অনলাইনে কিনলে অফার পাবেন। সেক্ষেত্রে ৭০০-১১০০ টাকা বাজেট হলেই চলবে।
ট্রান্সপারেন্ট সানগ্লাস: এই ধরনের সানগ্লাস কিনতে চাইলে একটু নামী ব্র্যান্ডের কেনাই ভালো। ফাস্টট্র্যাক, ডারভিন, জিম হ্যালো ইত্যাদি নানা সংস্থার ট্রান্সপারেন্ট সানগ্লাসের দাম ঘোরাফেরা করে ৭০০-১২০০ টাকার মধ্যে। মেঘলা দিন হোক বা বিকেলের মৃদু আলো, এই সানগ্লাস যেমন কেতা দেবে তেমন চোখকেও বাঁচাবে।
প্রিন্টেড সানগ্লাস: পিটার জোনস, ড্যানিলো, ট্রু ইন্ডিয়ান এসব সংস্থার প্রিন্টেড সানগ্লাসের বেশ নামডাক আছে। একটু ফাঙ্কি লুকের চাইলে এসব রোদচশমা ৫০০-৬০০ টাকার মধ্যেই পাবেন। এই রোদচশমাগুলো সাধারণত ছেলে ও মেয়ে উভয়েই পরতে পারে। 
স্পোর্টস সানগ্লাস: জিম হালো, অ্যাবকা, গ্রে জ্যাকের স্পোর্টস সানগ্লাস খুবই আকর্ষণীয়। ১০০০-১২০০ টাকার মধ্যেই অনলাইনে এমন সানগ্লাস পাবেন। দোকান থেকে কিনলে এর দাম পড়বে ১৫০০-১৬০০ টাকা। তবে বাজারচলতি কমদামি নানা স্পোর্টস সানগ্লাস রয়েছে। সেগুলোর মান খুব একটা ভালো নয়। 
এবার নিজের মুখের সঙ্গে মানানসই ফ্রেম চিনে সানগ্লাস কিনে ফেলার পালা। হেক্সাগনাল বা ছ’কোনা, চৌকো, গোল, অ্যাভিয়েটর ইত্যাদি আকারের  সানগ্লাসও এই সময় ফ্যাশনে ইন। বন্ধু বা পরিচিত মহলে নিজের স্টাইল স্টেটমেন্ট বদলাতে এবার সানগ্লাসই হোক আপনার সঙ্গী!