বয়স্কদের চাই পরশ-এর ছোঁয়া
এখনকার ব্যস্ত জীবনে অনেক সময় বাড়ির বয়স্কদের ততটা সময় দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। আবার কেউ হয়তো কর্মসূত্রে বাড়ির বাইরে অনেক দূরে থাকেন। তাই তিনি চাইলেও মনের মতো করে বাবা, মা, দাদু, দিদা, ঠাকুর্দা, ঠাকুমার যত্ন নিতে পারেন না।
এই সমস্যার সমাধানে ‘পরশ’ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালান করে। পরশ কী? পরশ হল আধুনিকমানের একটি সংস্থা। এরা পেশাদারিত্বের সঙ্গে বাড়ির বয়স্কদের দেখাশোনা করে। বাড়িতে চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা, ডিমেনসিয়া বা অ্যালঝাইমার্সের ক্ষেত্রে বিশেষ পরিষেবা দেওয়া, বাড়িতে বিভিন্ন রকম পরিচর্যা, কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা, অস্ত্রোপচারের পর বিশেষ পরিচর্যা, নিয়মিত স্বাস্থ্য নিয়ে নজরদারি, ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা, মুদিখানার বাজার করা, গাড়ি ভাড়ার বন্দোবস্ত, এসি সার্ভিসিং, বৈদ্যুতিক কাজকর্ম, কাঠের কাজ, বৈদ্যুতিন সামগ্রী নিয়ে সহায়তা প্রভৃতি হরেকরকম কাজ করে থাকে সংস্থাটি।
বয়স্কদের যত্নে এদের আস্থা, স্নেহ এবং পরিষেবা নামে তিনটি পরিষেবা আছে। ‘আস্থা’র জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি ১৪৯৯ টাকা (একবারের জন্য), প্রতি তিন মাসের জন্য সাবস্ক্রিশন ফি ১৫ হাজার টাকা করে লাগে। ‘স্নেহ’র রেজিস্ট্রেশন ফি ৯৯৯ টাকা (একবারের জন্য), প্রতি তিন মাসের জন্য সাবস্ক্রিশন ফি ৯ হাজার টাকা করে লাগে। তবে ‘পরিষেবায়’ জন্য কেবল ৯৯৯ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি লাগে। তারপর কী ধরনের পরিষেবা নেবেন তার ওপর দাম নির্ভর করছে।
সংস্থাটি বয়স্কদের জন্য বিভিন্ন সময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কখনও বা চলে আলোচনাচক্র। যেমন গত ১৯ সেপ্টেম্বর একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। বিষয় ছিল ‘সেফটি অ্যান্ড সিকিওরিটি অব সিনিয়র সিটিজেন’। গত অক্টোবরে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও অঙ্গদান নিয়ে সচেতনতা শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আগামী ১ ডিসেম্বর আয়োজন করা হয়েছে ‘ডিমেনসিয়া কেয়ার অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেন সেফটি অ্যান্ড সিকিওরিটি’ নামে একটি কর্মসূচির। এটি হবে গল্ফ গ্রিন সেন্ট্রালপার্কে। উপস্থিত থাকবেন নিউরোলজিস্ট ডাঃ প্রসেনজিৎ সেনগুপ্ত, প্রোগ্রাম কো অর্ডিনেটর এ আর ডি এস আই, কলকাতা চ্যাপটারের ঋতদীপ মুখোপাধ্যায়, যাদবপুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সুদীপ সরকার প্রমুখ। পরশ-এর কর্ণধার পৌষালী চক্রবর্তী ও সৌপর্ণ রায় চৌধুরী জানালেন, বয়স্কদের যত্নে তাঁরা আগামীদিনে আরও প্রয়োজনীয় কর্মসূচি নেবেন, যাতে তাঁদের কাজে লাগে। বয়স্ক বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা সব সময়ই পরশ-এর ছোঁয়া পাবেন।
যোগাযোগ: ৮৪২০৭৫৩৮৭৫, ৮৬৯৭১৩১৭৬৪, ইমেল: poroshkolkata@gmail.com, ওয়েবসাইট: www.poroshkolkata.org
সহজ পরব সঙ্গে হাট
আজ থেকে সল্টলেক ই জেড সি সি-তে লোপামুদ্রা প্রোডাকশনের দোহারের উদ্যোগে শুরু হচ্ছে দু’ দিনের মিউজিক ফেস্টিভ্যাল সহজ পরব। প্রতিদিন বিকেল পাঁচটা থেকে শুরু হবে নাচ ও গানের অনুষ্ঠান। পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের লোকসঙ্গীত শিল্পীরা পরিবেশন করবেন নানা ধরনের অনুষ্ঠান। সঙ্গে থাকছে দু’দিনের হাট। ই জেড সি সি প্রাঙ্গণে এই হাটে থাকছে মেদিনীপুরের পটচিত্র, দিনাজপুরের মুখোশ, বিষ্ণুপুরের মাদুর, শান্তিনিকেতনের ডোকরার জিনিসপত্র ও নানা ধরনের গয়না। সহজ পরব চলবে ২৪ নভেম্বর রাত পর্যন্ত।
ইন্টারন্যাশনাল পোয়েট্রি ফেস্টিভ্যাল
কলকাতায় দ্বিতীয় ‘চেয়ার পোয়েট্রি ইভিনিংস ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল শুরু হয়েছে গত ২২ তারিখ, চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত। সংস্কৃতির রাজধানীতে কবিতা নিয়ে মেতে থাকবেন দেশ-বিদেশের কবিরা। অস্ট্রেলিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, চিলি, আমেরিকা, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল–সহ আরও কয়েকটি দেশে থেকে কবিরা যোগ দিয়েছেন এই উৎসবে। এসেছেন আমেরিকার বিশিষ্ট কবি ব্রেইন টার্নার, অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্থোনি লরেন্স, পর্তুগালের সারা এফ কোস্টা, চিলির জেসাস সেপুলভেদা, নেদারল্যান্ডসের এলমার কুইপার, হাঙ্গেরির বালাজ্স জলোসি, স্লোভাকিয়ার হ্যাঞ্জাল সিলা নাগি। ভারতীয় কবিদের মধ্যে অংশ নিয়েছেন অরুন্ধতী সুব্রক্ষণ্যম, দেবীপ্রসাদ মিশ্র, আশুতোষ দুবে, হেমন্ত দিভাতে, যশোধরা রায়চৌধুরী, অংশুমান কর, কাত্যায়নী, বীণা সরকার এলিয়াস, প্রবোধ পারিখ, কৌশিকী দাশগুপ্ত এবং অভিমন্যু মাহাতো।
জোড়াসাঁকোর রথীন্দ্র মঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি হয়েছে। যেখানে নিজেদের মাতৃভাষায় কবিতা পাঠ করেন দেশ-বিদেশের কবিরা। এর পাশাপাশি ইংরেজিতে অনূদিত সেই কবিতাগুলিও পাঠ করা হয়। সন্ধেবেলায় ছিল লোকসঙ্গীতের আসর। উৎসবে বিভিন্ন ভাষার সঙ্গীত শোনার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শক, কবিতাপ্রেমীরা। বাংলা, ইংরেজি, গুজরাতি থেকে স্প্যানিশ— সব ভাষা মিলেমিশে গিয়েছে। রয়েছে কবিতা-কর্মশালাও। জোড়াসাঁকো ছাড়াও কবিতা উৎসব আয়োজিত হয়েছে গ্যাঞ্জেস আর্ট গ্যালারিতেও। গঙ্গা বক্ষে কবিতা পাঠের মাধ্যমে সমাপ্তি হবে উৎসব, ২৪ নভেম্বর। তখন মাঝ গঙ্গায় ক্রুজে চেপে কবিতা নিয়ে বিভোর থাকবেন কবিরা। গভীর রাত পর্যন্ত চলবে সে অনুষ্ঠান।
উৎসবের অধিকর্তা, কবি সনেট মণ্ডল বলেন, ‘বাঙালিদের চেতনার সঙ্গে মিশে রয়েছে কবিতা। কবিতা উৎসবের প্রথম বছরেই তুমুল সাড়া পেয়েছিলাম।’ উৎসবের অধিকর্তা, কবি তুষার ধাওয়াল সিংয়ের কথায়, ‘এখানে শুধু প্রখ্যাত কবিদের সৃষ্টি নিয়ে মাতামাতি করছি না। একই সঙ্গে নবীন প্রজন্মের প্রতিভাধরদের একটা মঞ্চ করে দিতে চাইছি।’
স্টারমার্কে পেঙ্গুইন ক্ল্যাসিকস ফেস্টিভ্যাল
কলকাতার প্রতিষ্ঠিত বই বিপণী স্টারমার্কে (সাউথ সিটি মল) শুরু হয়েছে পেঙ্গুইন ক্ল্যাসিকস ফেস্টিভ্যাল। একমেবদ্বিতীয়ম এই ফেস্টিভ্যালে পেঙ্গুইন প্রকাশকের প্রায় ৬ হাজার বইয়ের কালেকশন। যে কারণে এই উৎসবের নামের পর ট্যাগলাইন জোড়া হয়েছে—দেয়ার ইজ ওয়ান ফর এভরিওয়ান। যার যেমন পড়তে ভালোলাগে সেই মতো বইয়ের অভাব হবে না এই উৎসবে। গত বছরও এই উৎসবে বিশাল সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। তাই এবছরও হাজির করা হয়েছে এই বইয়ের সম্ভার। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এই উৎসব চলবে। প্রতিদিন সকাল সাড়ে দশটা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত। কলকাতার পাশাপাশি বেঙ্গালুরু, চণ্ডীগড়, চেন্নাই, গুরগাঁও, হায়দরাবাদ, মুম্বই, তিরুঅনন্তপুরম ও নিউ দিল্লিতেও চলছে এই উৎসব।
স্বস্তিনাথ শাস্ত্রী, স্নেহাশিস সাউ