আবহাওয়ায় হিমেল ভাব বাড়ছে। অনেকেই এই সময় চুলের দেখভাল নিয়ে চিন্তিত থাকেন। তবে ঘরোয়া উপায়ে নিমেষেই মিলবে সমাধান। জানালেন মনীষা মুখোপাধ্যায়। 

 ধীরে ধীরে জনজীবন স্বাভাবিক হচ্ছে। তবু এখনও ভাইরাস-ভয় থেকে মুক্তি মিলল কোথায়! প্রতিদিন ঘাড়ে শ্বাস ফেলছে করোনার ভয়। তাই পার্লারে বা স্যালঁয় যাওয়ার দ্বিধা অনেকেই কাটিয়ে উঠতে পারছেন না। এদিকে শীত তার আধিপত্য বিস্তার শুরু করেছে পুরোদমে। এই সময় ত্বক যেমন শুকনো হতে থাকে, তেমনই রুক্ষ হয় চুলও। বর্ষায় ঠিক যতটা বাড়তি যত্ন চুলের প্রয়োজন, শীতেও কিন্তু ততটাই। এই মরশুমে শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে চুলের জেল্লা প্রাণ হারায়। ঝিমিয়ে পড়ে চুলের স্বাস্থ্যও। তাই শীতের শুরু থেকেই বিশেষ যত্নের প্রলেপ চুলের জন্য খুব দরকার। 
কিন্তু যত্ন বা খেয়াল রাখা মানেই কি শুধু ঘন ঘন পার্লারে ছোটা? তা কিন্তু নয়। বরং রূপবিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু নিয়ম মানতে পারলে ঘরেই হতে পারে চুলের নিয়মিত যত্ন। মাথার ত্বক পেতে পারে সতেজ হওয়ার মন্ত্র। কিন্তু কীভাবে?
রূপবিশেষজ্ঞ শর্মিলা সিং ফ্লোরার মতে, ‘আজকাল সকলেই ব্যস্ত। তবু সেই ব্যস্ততা থেকে একটু সময় বের করলেই চুলের জন্য প্রয়োজনীয় যত্নটুকু নেওয়া যায়। ঘরোয়া কিছু সহজলভ্য উপাদানই এর জন্য যথেষ্ট। ভরসা করতে পারেন নিজের হাতের মাসাজের উপরেই।’
ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন কীভাবে করবেন রইল তারই হদিশ।
• চুলের প্রাথমিক যত্নে কিন্তু শ্যাম্পুর কথা সকলেই ভাবেন। কিন্তু নিয়মিত মাথার ত্বক ও চুল পরিষ্কার রাখাই শেষ কথা নয়। তাই শুধু শ্যাম্পুতে থেমে গেলে চলবে না। শ্যাম্পুর পর নিয়ম মেনে কন্ডিশনার ও সেরাম লাগানো খুব জরুরি। আবার কন্ডিশনার ধুয়ে ফেলার কাজটাও খুব ভালো ভাবে করতে হবে, নইলে মাথার ত্বকে তা জমে খুশকি হতে পারে। চুলে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দেওয়ার পর ভিজে চুলেই ছুঁয়ে নিতে হবে সেরাম।
• রান্নাঘরের কিছু জরুরি উপাদান দিয়েও চুলের জেল্লা ফেরাতে পারেন। যেমন ধরুন সর্ষের তেল। চুলের ত্বকে না লাগিয়ে হালকা করে ভিজে চুলে মাসাজ করুন এই তেল। চুল প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ ভিজিয়ে নিন এমন মাসাজের আগে। মিনিট ২০ রেখে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে বার তিনেক এই পদ্ধতি মেনে চললে চুল তার হারানো জেল্লা ফিরে পাবে।
• অনেকেই রাতভর নারকেল তেল ও অলিভ অয়েল মাসাজ করে রাখেন চুলে। সেক্ষেত্রে তেলটা গরম করে নিন। আঙুলের ডগা দিয়ে হালকা চালে মাসাজ করে নিন। মাথার ত্বকেও এই মাসাজ করতে পারেন। এতে স্ক্যাল্পে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ পৌঁছে যায়। তবে কারও খুশকির সমস্যা থাকলে সারারাত চুলে তেল দিয়ে রাখবেন না। বরং মিনিট ১৫ মাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। 
• ঘরোয়া যত্নের কথা ভাবলে ডায়েটকে অস্বীকার করলে কিন্তু হবে না। তাই সারাদিনের খাদ্যতালিকায় আমলা বা আমলকী রাখুন। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলও থাকুক। এগুলো চুলের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা নেয়। 
• অ্যালোভেরা চুল ভালো রাখার অন্যতম উপাদান। বাড়ির টবে এই গাছ সহজেই বাড়ে। এই গাছের পাতার শাঁস চুলে লাগিয়ে মিনিট ১০ রেখে শ্যাম্পু করে নিলেও চুল ভালো থাকবে। 
• অনেকে ডিম, দই দিয়ে প্যাক বানিয়ে চুলে লাগান। এতেও চুলে অনেকটা পুষ্টি পৌঁছয়। তবে চুল তৈলাক্ত হলে এই প্যাক মাসে এক-দু’বার ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। চুল রুক্ষ হলে সপ্তাহে একদিন এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
একটু সময় আর অনেকটা ইচ্ছা। এই দুই এবার মিলে গেলেই আসন্ন শীত আপনার চুলকে বিপাকে ফেলতে পারবে না মোটেই।