যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ
সেই ধন্বন্তরী-ধামের সংলগ্ন একটি বৈদিক চতুষ্পাঠী ছিল। ঋক্, যজুঃ, সাম ও অথর্ব বেদ পড়িবার জন্য কাঠিয়াওয়াড়ের বিভিন্ন গ্রামবাসী দরিদ্র বালকগণ মুষ্টিভিক্ষা-লব্ধ দ্রব্য স্বপাকে এক সন্ধ্যা খাইয়া বেদপাঠ করিত।
বৈদিক শিক্ষকগণের হস্তপাঠ ও স্বরপাঠ ভিন্ন বেদের একটি শব্দেরও অর্থবোধ ছিল না। কিন্তু শুক্লযজুর্বেদের শিক্ষক উদাত্ত, অনুদাত্ত, স্বরিত সুরে হাত নাড়িয়া ছাত্রগণ সহ ‘শার্দ্দূলরুতোপম’ ধ্বনিতে বেদপাঠ করিতে লাগিলেন। তখন আমি পুলকিত শরীরে যে অননুভূত আনন্দ উপভোগ করিয়াছিলাম, তাহা ভাষায় প্রকাশ করিবার নয়। প্রত্যেক বৈদিক শিক্ষকের কাছে বসিয়া আমি চার বেদের পাঠ শুনিতাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় শিক্ষকগণের মধ্যে কাহারও বেদাঙ্গের কোন জ্ঞান ছিল না। বিভিন্ন স্থানের বিদ্যার্থী দরিদ্র ব্রাহ্মণবালকগণের কষ্ট দেখিয়া আমি কাশীর রইস্ সুপণ্ডিত বাবু প্রমথদাস মিত্রের সাহায্যে এক অন্নসত্র খুলিয়া দিয়াছিলাম। এই সত্র হইতে প্রত্যহ দরিদ্র ছাত্রগণকে যথোপযুক্ত গমের আটা, ডাল, ঘৃত, ইত্যাদি দেওয়া হইত। অনধ্যায়ের সময় ছাত্রেরা চলিয়া গেল। তখন সেই অন্নসত্র বন্ধ হইয়া যায়। আমিও শুক্লযজুর্বেদের (মাধ্যন্দিনী শাখার) ছাত্র হইয়া হস্তপাঠ ও স্বরপাঠ শিখিতাম। এইরূপ বৈদিক চতুষ্পাঠীতেও সার্থ-বেদজ্ঞ শিক্ষকের অভাব দেখিয়া আমার মর্মান্তিক দুঃখ হইয়াছিল। তখন মনে করিতাম, বেদবেদাঙ্গে ব্যুৎপন্ন পণ্ডিত নিশ্চয়ই কাশীধামে পাওয়া যাইবে; চেষ্টা করিব। এই ধন্বন্তরী-ধামে মাদুরাবাসী জনৈক বেদজ্ঞ দ্রাবিড় পণ্ডিত ব্রাহ্মণ চাতুর্মাস্য উপলক্ষে ছিলেন। তিনি প্রত্যহে ব্রাহ্মমুহূর্তে গাত্রোত্থান করিয়া স্নানাদির পর খুব ছোট শত শত মৃন্ময় শিবলিঙ্গ গড়িয়া সেই শিবলিঙ্গের চতুষ্কোণাকার বেষ্টনী এবং মধ্যে সেই ছোট ছোট শিবলিঙ্গেরই নির্মিত গৌরীপট্টসহ একটি বড় শিবলিঙ্গ করিতেন। বেলা দুইটা পর্যন্ত পূজা করিয়া স্বপাকে আহারাদির পর আমার কাছে বসিয়া শাস্ত্রীয় আলাপ করিতেন।