যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ
বিভিন্ন পথের লোকোত্তর পুরুষেরা যা বলে গেছেন, তাঁদের বাণীর ভিতরে আমরা এক অপূর্ব মিল দেখতে পাই, বিভিন্ন ধর্মপ্রচারকরা যাঁরা ঈশ্বরপ্রেরিত বা ঈশ্বরাবতার বলে অভিহিত। মনীষীরা তাঁদের বাণী, তাঁদের উপদেশ সংগ্রহ করে মিলনসূত্রটি দেখবার চেষ্টা করেছেন। আমাদের পার্থক্য থাকে আচার অনুষ্ঠানে, পার্থক্য থাকে ভাষায়, ঐতিহ্যে। অনুভূতির মধ্য দিয়ে অন্বেষণ করতে গেলে পাব অপূর্ব মিলনসূত্র। আরব দেশের একটি গল্প আছে —কতকগুলি পথিক পিপাসার্ত হয়ে মরুভূমির ভিতর দিয়ে চলেছে। তাদের মধ্যেএকজন পিপাসা শান্তির জন্য এমন একটি ফল চাইছে, যেটির সম্বন্ধে অপরজন বলছে না, ওটি নয়, অন্য একটি ফল হলে ভাল হত। প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা ফলের নাম বলল। এই নিয়ে তাদের কলহ হচ্ছে। এখন একজন বাইরের লোক তাদের বিবাদ শুনে ঝোলার মধ্য থেকে একটি ফল বার করে বললে, ‘দেখ তো, এটা কেউ চাও কি না।’ সকলে অবাক হয়ে সমস্বরে বলে উঠল ‘আমরা তো এইটাই চাইছি।’ আঙুর ফলই তারা চাইছিল, ভিন্ন ভিন্ন শব্দের জন্য তাদের মতভেদ হচ্ছিল। ফলটি দেখার পর অনুভব দিয়ে বোঝা গেল ভাষার বিভেদ, বিভেদ প্রকাশের। শ্রীরামকৃষ্ণ একট উপমা দিতেনঃ পুকুরের চারটে ঘাট আছে; হিন্দু বলছেন জন, মুসলমান বলছেন পানি, খ্রীস্টান বলছেন ওয়াটার। ভিন্ন ভিন্ন নামে যা নিচ্ছে তা সেই জল-ই। নামভেদে জলের সার্থকতা কি ভিন্ন হয়ে যায়, না, তৃষ্ণা নিবারণের পক্ষে উপযোগী হয় না? অনুভূতির মধ্য দিয়ে গেলে আমরা মিলটি দেখতে পাই। অনুভূতিকে বিচারের আবরণের মধ্য দিয়ে, ভাষ্য টীকা-টিপ্পনীর এবং তস্য টীকা তস্য টিপ্পন্নীর মধ্য দিয়ে বুঝতে গেলে নানা প্রভেদ দেখতে পাই। কেন এই প্রভেদ? আমাদের মনের আবরণ একের পর এক বস্তুর উপরে ছাপ দিচ্ছে। ছাপগুলি সত্যকে প্রকাশ না করে আরো আবৃত করে রেখেছে। সত্যকে যখন অনুভূতির ভিতর দিয়ে প্রাণের ভিতর দিয়ে গ্রহণ করতে চাই, তখন দেখি সকল পথের পথিক চাইছে নামভেদে সেই একই বস্তু। নামে ভিন্নই বা বলি কেন, —যত ভাষা আছে সেগুলিকে বিশ্লেষণ করে দেখলে তার মূলে অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। এবং সেই অনুভূতির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। শ্রীরামকৃষ্ণ একটি উপমা দিতেন। বার বার শ্রীরামকৃষ্ণের নাম উচ্চারণ করছি এই জন্য যে, ধর্ম এবং শ্রীরামকৃষ্ণ এই দুইকে মিলিয়ে দেখবার চেষ্টা করছি।