পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ
অঙ্ক কীভাবে মিলে গিয়েছে সেদিকে চোখ রাখলেই বিশেষ তদন্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার আর সুযোগ থাকবে না। বন্ডের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ৩৩টি সংস্থা কেন্দ্র-রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে মোট ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা চাঁদার বিনিময়ে মোট ৩.৭ লক্ষ কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পের বরাত পেয়েছে। আবার ইডি, সিবিআই-আয়কর দপ্তরের তদন্তাধীন ৪১টি সংস্থা শুধু বিজেপিকে চাঁদা দিয়েছে ২ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা। এরমধ্যে ১ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা চাঁদা জমা পড়ে তদন্তকারী সংস্থাগুলির হানার পরে। ৪৯টি ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ৬২ হাজার কোটি টাকার বরাত মেলার পরে বিভিন্ন সংস্থা চাঁদা দিয়েছে মোট ৫৮০ কোটি টাকা। আবার ১৯২টি ক্ষেত্রে বরাত পাওয়ার আগেই ৫৫১ কোটি টাকা চাঁদা দেওয়া হয়েছে। এসবই হল শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে কিছু কর্পোরেটের মধুর সম্পর্কের টুকরো ঝলক। আর কে না জানে মোদি সরকারের কর্পোরেট তোষণ নীতির কথা। বলার অপেক্ষা রাখে না, মোদি জমানায় ‘এজেন্সিরাজ এক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। সেই আতঙ্কেই নাকি ভরছে বিজেপি’র তহবিল। হয়তো এই কারণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বিজেপির টাকা তোলার বক্স’।
মিলে যাওয়া অঙ্কে দেখা যাচ্ছে এই অশুভ আঁতাতের হাত থেকে মানুষের জীবনও বড়সড় প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে। সংবাদে প্রকাশ, বন্ড মারফত দেশের ৩৫টি ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থার চাঁদার পরিমাণ প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে অন্তত সাতটি সংস্থার ওষুধের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরে তারা বন্ড কিনেছে। যেমন তেলেঙ্গানার একটি সংস্থাকে ছ’টি নোটিস পাঠিয়েছিল মহারাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। এরপরই তারা ৪০ কোটি টাকার বন্ড কেনায় সব অভিযোগ ঠান্ডা ঘরে চলে গিয়েছে। এই সংস্থাই গুজরাতের একটি ওষুধ কোম্পানিকে নোটিস দেওয়ার পরে তারা বন্ড কেনে ৭৭ কোটি টাকার। আবার বিহারের নিয়ামক সংস্থা গুজরাতের অন্য এক সংস্থাকে নোটিস পাঠানোর পর তারা ২৯ কোটি টাকার বন্ড কেনে। এমন নজির আরও আছে। তার মানে কি এই দাঁড়াল না শাসকদলকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে এইসব সংস্থা নিম্নমানের ওষুধ তৈরি ও বিক্রির ছাড়পত্র পেয়েছে? যা আসলে মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করার নামান্তর। এখানেই শেষ নয়, ‘চাঁন্দা দো, ধান্দা লো’-র ফর্মুলা মেনে গত কয়েক বছরে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম বেড়েছে হু হু করে। চলতি মাসের ১ এপ্রিল থেকে আরও এক দফা দাম বেড়েছে ৮০০টি ওষুধের। একটা সময়ে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে ড্রাগ-প্রাইস কন্ট্রোল অর্ডার আইন চালু হয়। পরবর্তীকালে এই আইনের সংশোধন করে মাত্র ৩৫টি ওষুধকে দাম নিয়ন্ত্রণের তালিকায় রাখা হয়। এর বিরুদ্ধে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে ২০১২ সালে জাতীয় অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকাও তৈরি হয়। কিন্তু মোদি জমানায় ২০১৮-১৯ সাল থেকে নানা অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়ানোর ছাড়পত্র দেওয়া হয়। লক্ষণীয়, ওই সময়েই চালু হয় নির্বাচনী বন্ড। মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির কারণে এরপর থেকে প্রতি বছর ওষুধের দাম বেড়েই চলেছে। আর অলিখিত শর্ত মেনে মোটা অঙ্কের চাঁদাও মিলছে! মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা এই রোগের দাওয়াই নিয়ে কোনও চিন্তাভাবনাই নেই দেশ শাসকের।