পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ
একটি বিরল পদক্ষেপে, বেআইনি বাজেয়াপ্ত সংক্রান্ত একটি মামলারও উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। মামলাটি এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। ২০২২ সালের অক্টোবরে ফাউন্ডেশন ফর মিডিয়া প্রফেশনালসের দায়ের করা একটি মামলার কথাও প্রধান বিচারপতি এই প্রসঙ্গে উত্থাপন করেন। আবেদনকারীরা শীর্ষ আদালতের নজরে এনেছেন যে, ইলেকট্রনিক ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে কোনও গাইডললাইন বা নির্দেশিকা নেই! ওই মামলার সূত্রেই তাঁর বক্তব্য, তেমন গাইডলাইন তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত সিবিআইকে তার ক্রাইম ম্যানুয়াল অনুসরণ করার নির্দেশ আগেই দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ১৪ ডিসেম্বর, কেন্দ্রীয় সরকার শীর্ষ আদালতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে নির্দেশিকা তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত ডিজিটাল সাক্ষ্য সংক্রান্ত ক্রাইম ম্যানুয়ালই সিবিআই অনুসরণ করবে। কিন্তু কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশিকা প্রণয়ন করেনি বলেই প্রধান বিচারপতি এদিন উষ্মা প্রকাশ করেন। নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে তিনি সরাসরি কিছু না বললেও, এই আমলে নাগরিকের গোপনীয়তার অধিকার যে পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন তিনি। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় একইসঙ্গে মুখ খোলেন বিচারের দীর্ঘসূত্রতার বিরুদ্ধেও। তাঁর বক্তব্য, আইনভঙ্গের গুরুতর অভিযোগ আনার পর বিলম্বিত বিচারে অভিযুক্তদের ব্যক্তিজীবন এবং ভাবমূর্তি দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সোজা কথায়, সিবিআই এবং অন্য আইনপ্রণয়নকারী সংস্থাগুলির অতিসক্রিয়তা ও আইনি প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রের খামতি বিচার বিভাগের শীর্ষ মহল মোটেই ভালো চোখে দেখছে না। কারণ এতে নাগরিকরা, বিশেষ করে বিরোধীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং সুবিচার অনেকের কাছেই অধরা থেকে যাচ্ছে। বস্তুত, বিরোধী দলগুলির দীর্ঘদিনের অনেক অভিযোগই মান্যতা পেয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির তাৎপর্যপূর্ণ কথায়। তাঁর পর্যবেক্ষণও যথার্থ—এইভাবে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগশেনর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থারও ক্ষতি হচ্ছে। লক্ষ্যচ্যুত হয়ে পড়ছে সিবিআই। এই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বা তদন্তকারী সংস্থার অগ্রাধিকার হওয়ার কথা জাতীয় নিরাপত্তা কিংবা দেশের বিরুদ্ধে সংগঠিত অপরাধের মোকাবিলা। তার পরিবর্তে আমরা এটাই দেখছি যে, সিবিআই এখন অনেক কম গুরুত্বের কিছু ফৌজদারি অভিযোগের পিছনে ছুটে ক্লান্ত হচ্ছে! আরও দুর্ভাগ্য যে, প্রবণতাটি ক্রমবর্ধমান। অথচ ওইসব ঘটনার তদন্তের পক্ষে রাজ্য পুলিস অথবা খুব বড় জোর সিআইডি’ই যথেষ্ট। তার বদলে, এখন কথায় কথায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ নিয়ে নাজেহাল কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। প্রধান বিচারপতি আলাদাভাবে উল্লেখ না করলেও একই হাল ইডি, এনআইএ’র মতো সংস্থাগুলির তদন্তেরও। সব মিলিয়ে বহু ব্যবহারে ধার নষ্ট হচ্ছে একদা ধারালো অস্ত্রগুলির। ব্যাপারটি সেই পালে বাঘ পড়ার গল্পের মতোই। যেদিন সত্যিকার সিবিআই, ইডি বা এনআইএ তদন্ত জরুরি হবে, সেদিনও মনে হবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ফালতু ডাকা হয়েছে! সব মিলিয়ে প্রধান বিচারপতির কথায় যে উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে, তার শরিক সারা দেশ, গোটা শান্তিকামী গণতান্ত্রিক সমাজ।