পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ
তারপর থেকে ব্যবস্থাটি সম্পর্কে নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। বন্ডের বিপুল অর্থের প্রাপক বিজেপি-সহ একাধিক দলের অবশ্য নিজ নিজ অবস্থান সম্পর্কে সাফাইয়ের কোনও অভাব হয়নি। তবু, সেসব আমল দেয়নি নিরপেক্ষ পণ্ডিত মহল। মোদিরই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের অর্থনীতিবিদ স্বামী মন্তব্য করেছেন, ‘শুধু ভারত নয়, নির্বাচনী বন্ড বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি।’ স্বভাবতই সাধারণ নির্বাচনের মুখে এতে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পারাকালা প্রভাকর বলেন, ‘নির্বাচনী বন্ড ইস্যুতে শাসক দল বিজেপি বড় ধাক্কা খেতে চলেছে। যত দিন গড়াবে এই ইস্যু নিয়ে তত বেশি তোলপাড় হবে দেশ। এখন সবাই বুঝতে পারছে, শুধু ভারত নয়, নির্বাচনী বন্ড বিশ্বের সর্ববৃহৎ কেলেঙ্কারি। আর সেই কারণেই ভোটাররা এই সরকারকে শাস্তি দেবেন।’ বন্ড বিতর্কের মধ্যেই ফের মাথাচাড়া দিয়েছে পুরনো নোট বাতিল ইস্যু। ‘বিমুদ্রাকরণের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আচমকা গ্রহণের নেপথ্যে মোদি সরকারের কী উদ্দেশ্য ছিল? তা কি পূরণ হয়েছে?’—সেই সংগত প্রশ্নেই নতুনভাবে সরব হতে দেখা গেল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগরত্নাকে। শনিবার এক অনুষ্ঠানে তিনি জানান, ৯৮ শতাংশ বাতিল নোটই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ফিরেছে। অতঃপর তাঁর সাফ প্রশ্ন, ‘তাহলে কালো টাকা নির্মূল হল কোথায়? কেন্দ্রীয় সরকার কীভাবেই-বা সেই দাবি করতে পারে? বরং আমার ধারণা, এটি কালো টাকাকে সাদা করে ফেলারই একটি ভালো পন্থা।’ বিচারপতি আরও বলেন, ‘নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত আইন মেনে নেওয়া হয়নি। এতটাই তাড়াহুড়ো করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, অনেকেই বলেছিল ব্যাপারটি অর্থমন্ত্রীও জানতেন না।’ হায়দরাবাদে নালসার আইন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সংবিধান সম্মেলন, ২০২৪’-এর ভাষণে বিচারপতি নাগরত্না নোট বাতিল প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। গতবছর এই সংক্রান্ত এক মামলায় কেন্দ্রের মত সুপ্রিম কোর্ট বহাল রাখলেও সিদ্ধান্তটি সর্বসম্মত ছিল না। পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে একমাত্র ভিন্ন মতটি দিয়েছিলেন বিচারপতি নাগরত্না। সেই প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে নোট বাতিলের সময় দেশের মোট মুদ্রার ৮৬ শতাংশই ছিল ৫০০ ও ১০০০ টাকা। সেই বিষয়টিতে কেন্দ্রীয় সরকার নজর দেয়নি। নোট বাতিলের পর আয়কর দপ্তর কী পদক্ষেপ করেছিল, তাও আমরা জানি না। কিন্তু সাধারণ মানুষের দুর্দশা আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। তাই রায়ের ক্ষেত্রে ভিন্নমত পোষণ করতে বাধ্য হয়েছিলাম।’
নোট বাতিল মামলায় জয়ী হওয়া সত্ত্বেও, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির এই মন্তব্যে সরকারের অস্বস্তির কারণ খুঁজে পাওয়া যায়। ইলেক্টোরাল বন্ড মামলায় সুপ্রিম কোর্টে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর আঘাত হেনেছে স্বয়ং অর্থমন্ত্রীর অর্থনীতিবিদ স্বামীর বাক্যবাণ! এমন এক বেসামাল অবস্থাতেই, ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির মতোই ফুঁসে উঠেছে নোট বাতিল ইস্যুটি—স্বয়ং শীর্ষ আদালতের বিচারপতির মন্তব্যে। হায়, এরপরেও শাসক দলের ‘মুখ’ দেশজুড়ে ‘স্বচ্ছতার পাঠ’ বিতরণে ক্লান্তিহীন! ‘ভ্রষ্টাচারের বিরুদ্ধে’ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি ‘খড়্গ’ হাতে! বৃহত্তম গণতন্ত্র এই দ্বিচারিতা ও ভ্রষ্টাচারের উপযুক্ত জবাব দিতে আরও সময় নেবে কি?