সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় সাফল্য প্রাপ্তি। কর্মে দায়িত্ব বৃদ্ধিতে মানসিক চাপবৃদ্ধি। খেলাধূলায় সাফল্যের স্বীকৃতি। শত্রুর মোকাবিলায় সতর্কতার ... বিশদ
নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এসেই এই অস্ত্রে শান দিতে শুরু করেন। সেটা বুঝতে পেরে পাল্টা চাল দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের তৃণমূল সরকার কেন্দ্রের মোদি সরকারের আগেই কিছু নেতাজি ফাইল প্রকাশ করেছিল। কোনও সন্দেহ নেই তাতে আরও চাপে পড়ে গিয়েছিল মোদি সরকার। কথা দিয়ে কথা না-রাখার ‘ঐতিহ্য’ আঁকড়ে থাকতে পারেনি, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬-তে কেন্দ্র কিছু ফাইল প্রকাশ করেছিল। আমরা জানি, ক্রমে দেশবাসী উপলব্ধি করেছিল দুই সরকারের তরজায় যা-কিছু প্রকাশ পেয়েছে, তা বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়ার অতিরিক্ত নয়। এতে নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচনের কোনও ম্যাজিকই নেই। দেশবাসী যে খুশি হয়নি তা মালুম হতেই দ্বিতীয় মোদি সরকার প্রতিষ্ঠার আগে আরও একাধিক মাস্টার স্ট্রোক দেন মোদিজি। আজাদ হিন্দ বাহিনীর সম্মানে লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রস আইল্যান্ডের নামকরণ করেন নেতাজির নামে। ২০১৯-এর ২৩ জানুয়ারি লালকেল্লায় উদ্বোধন করেন নেতাজি মিউজিয়াম। এটি নেতাজি ও আজাদ হিন্দ ফৌজকে উৎসর্গ করা হয়। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর সামনে আরও কয়েকটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন: নেতাজিকেই ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর স্বীকৃতি দেওয়া হবে এবং ২১ অক্টোবর দিনটিকে সরকারের তরফে ‘আজাদ হিন্দ দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে। দিনটি সাধারণতন্ত্র দিবস (২৬ জানুয়ারি) এবং স্বাধীনতা দিবসের (১৫ আগস্ট) মতোই মর্যাদা পাবে।
সুভাষচন্দ্রকে নিয়ে এতটা আবেগ যে সরকারের সেই সরকার নেতাজির ১২৫তম জন্ম দিবস উদযাপনের ক্ষেত্রে গড়িমসি করছে কেন? এই প্রশ্ন তুলেছে রাজনৈতিক মহল। গত ২১ অক্টোবর কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল ঘোষণা করেছিলেন, এই বিষয়ে ভারত সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরি করবে। তারপর পাঁচ সপ্তাহের বেশি অতিক্রান্ত। কিন্তু সেই কমিটির হদিশ নেই। অথচ, রাজ্য সরকার ২০২১ সাল জুড়ে নেতাজিকে নিয়ে নানা ধরনের কর্মসূচি পালনের জন্য তৈরি হচ্ছে। দু’জন নোবেলজয়ীকে নিয়ে বিদ্বজ্জনদের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, বসু পরিবার দিল্লিতে খোঁজখবর নিয়ে কেন্দ্রের ভূমিকায় রীতিমতো হতাশ। কারণ, সংস্কৃতিমন্ত্রী তাঁর একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান নিয়ে এতই ব্যস্ত যে নেতাজির বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার ফুরসত পাননি! এই ঘটনা দেশবাসীকে নিঃসন্দেহে ব্যথিত করেছে। প্রধানমন্ত্রীর উচিত, ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টিতে নজর দেওয়া। নেতাজির জন্মদিনটিকে দেশপ্রেম দিবসের মর্যাদা দান এবং জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করার দাবিটিও আন্তরিকভাবে বিবেচনা করা উচিত। নেতাজি যে নিছক সঙ্কীর্ণ রাজনীতির বোড়ে নন, সত্যিকার মর্যাদালাভের অধিকারী—এটি প্রমাণের দায় এখন প্রধানমন্ত্রীর।