সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় সাফল্য প্রাপ্তি। কর্মে দায়িত্ব বৃদ্ধিতে মানসিক চাপবৃদ্ধি। খেলাধূলায় সাফল্যের স্বীকৃতি। শত্রুর মোকাবিলায় সতর্কতার ... বিশদ
কিন্তু এবার সবে টনক নড়ছে। কারণ ভোট বড় বালাই। আর কিছু না থাক এই পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোটাধিকার আছে। স্বাধীন ভারতের নাগরিক হিসেবে ওই অধিকারটুকুই তাঁরা ভোগ করেন। তাই করোনাকালেই ভোটের ময়দানে পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যার বিষয়টি বারবার ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। অতীতে যাঁদের কথা বিন্দুমাত্র ভাবার সময় পায়নি শাসক, এবার ভোটের স্বার্থে তাঁদের কথা ভাবা শুরু করল কেন্দ্র। পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষোভের আগুনের আঁচ ভোটবাক্সে যাতে না লাগে তাই কি নড়েচড়ে বসা? আগামী বছর বাংলার ভোট। সেখানেও আছেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক। সেখানে একটি ভোটও অত্যন্ত মূল্যবান। অবশ্য তাঁদের পাশে আগেই দাঁড়িয়েছে বাংলার সরকার। যাঁরা ভিন রাজ্য থেকে কাজ হারিয়ে এরাজ্যে ফিরেছেন তাঁদের বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। সেইসঙ্গে ১০০ দিনের কাজ এবং বাংলা আবাস যোজনার কাজে লাগিয়ে পরিবারগুলির দিনযাপনে সহযোগিতা করেছে মমতার সরকার। পরিযায়ী শ্রমিকদের শ্রমের গুরুত্ব বুঝতে পারায় সাফল্যও মিলেছে। এঁদের কাজে লাগিয়ে করোনাকালেও যেমন রাজ্যের উন্নয়নের কাজ হয়েছে তেমনি করোনাপর্বে বাংলা আবাস যোজনায় রেকর্ড গড়েছে এই রাজ্য। এসব দেখার পর কি বোধোদয় হল কেন্দ্রের? মন্দের ভালো যে পরিযায়ী শ্রমিকদের অভাব অভিযোগ বা সমস্যার সুরাহার উদ্দেশে টোল ফ্রি হেল্পলাইন চালুর পরিকল্পনা নিল তারা। পেশাগত সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শ্রম কোডের প্রয়োগ সংক্রান্ত খসড়া বিধিও প্রকাশ করেছে। ভিন রাজ্যের কর্মস্থল থেকে নিজের বাড়িতে আসার জন্য শর্তসাপেক্ষে পরিবহণ খরচ নিয়োগকারীকে দিতে হবে বলা হচ্ছে। নিয়োগপত্রে তাদের ডেজিগনেশন, দক্ষতা, মজুরি ইত্যাদি বিষয়ের উল্লেখ, এমনকী ৪৫ বছরের বেশি বয়স্কদের বিনামূল্যে বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থাও নিয়োগকর্তাকে করতে বলা হচ্ছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার এব্যাপারে সামাজিক সুরক্ষা ইস্যুতে শ্রম কোডের প্রয়োগ সংক্রান্ত খসড়া বিধি প্রকাশ করেছে। ভালো উদ্যোগ। তবে সবটাই নির্ভর করবে তো সেই নিয়োগকর্তার মতিগতির উপর।
আসলে আইনানুগ ব্যবস্থা অনেক কিছুই থাকে। প্রয়োগে থাকে শিথিলতা। পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা আরও বেশি। কারণ তাঁরা ভিনরাজ্যের বাসিন্দা। নিয়োগকর্তা সরকারি রীতিনীতি না মানলে অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিকেরই বিশেষ কিছু করণীয় থাকে না। কারণ সে কলিজার জোর তাঁদের নেই। উল্টে থাকে কর্মচ্যুতির আশঙ্কা। তাই পরিযায়ী শ্রমিকদের পেশাগত সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক নিয়মকানুন যাতে সর্বত্র বলবৎ হয় তার জন্য কড়া নজরদারি রাখতে হবে সরকারকেই। সেই নিশ্চয়তা থাকা দরকার। এ দায়িত্ব কেন্দ্র না নিলে শত নিয়ম বেঁধে দিলেও তাঁদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন বা সমস্যার সমাধান করা কঠিন হবে।