সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় সাফল্য প্রাপ্তি। কর্মে দায়িত্ব বৃদ্ধিতে মানসিক চাপবৃদ্ধি। খেলাধূলায় সাফল্যের স্বীকৃতি। শত্রুর মোকাবিলায় সতর্কতার ... বিশদ
সম্প্রতি দেশের শীর্ষ আদালত কোভিড মোকাবিলার প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সরকারকে ভর্ৎসনা করেছে। বেকায়দায় পড়ে পিঠ বাঁচাতে এবার রাজ্যকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে আসরে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ এই মহামারী মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলিকে যে অর্থ সাহায্য দেওয়া দরকার ছিল তা তারা দেয়নি। পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় সাহায্য না আসায়, এমনকী জিএসটি ক্ষতিপূরণবাবদ বকেয়া অর্থ না পাওয়ায় এই বৈঠকেও দরবার করতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী দাবি মানার প্রশ্নে নীরব থেকে, ভ্যাকসিন কবে আসবে তার দিশা না দেখিয়ে শুধু উপদেশ দিতেই ব্যস্ত থাকলেন। অথচ কোভিড মোকাবিলার জন্য বাংলা অন্তত কেন্দ্রের দেওয়া টাকার তুলনায় অনেক বেশি অর্থ খরচ করেছে। কোভিড খাতে কেন্দ্র দিয়েছিল ১৯৩ কোটি টাকা, যেখানে বাংলার সরকার ইতিমধ্যে খরচ করেছে ৪ হাজার কোটি টাকা। রাজ্যের হিসাবে জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ বাংলার বকেয়া সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। যখন প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে উষ্মা প্রকাশ করছেন তখন কিন্তু তাঁর সরকারও রাজ্যের প্রতি বঞ্চনার ধারা বজায় রেখে সংঘাতের বাতাবরণই তৈরি করছে। এই ফ্লপ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যে দিশাহীনতার নজির রাখলেন তাতে প্রশ্ন উঠতেই পারে ঘটা করে এই ভিডিও কনফারেন্সের আসল উদ্দেশ্য কী? করোনা চিকিৎসা মানুষের সাধ্যের মধ্যে থাকলে হয়তো দেশে এত মানুষের মৃত্যু হতো না। শুধু সুরক্ষাবিধির কথা বলে কি করোনা নিয়ন্ত্রণে মোদি সরকারের চূড়ান্ত ব্যর্থতাকে আড়াল করা যাবে? রাজ্যের পাওনাগণ্ডা মিটিয়ে দিয়ে তো গালভরা উপদেশ দেওয়া যেত। সে পথে হাঁটেননি প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বারোমাস্যা চলছে। সমগ্র দেশবাসীকে বিনামূল্যে কোভিড টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা কেন্দ্র করবে কি না, সে বিষয়েও নিশ্চয়তা দেননি তিনি। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে বিনামূল্যে টিকা দেবার কথা জানিয়ে যেভাবে আশ্বস্ত করেছেন সেটুকু স্বস্তি দিতেও অপারগ দেশের শাসক! শুধু দেশবাসীর কাছে প্রতিষেধক টিকা পৌঁছে দেওয়ার কাজকে জাতীয় কর্তব্য বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। কিন্তু এপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের একগুচ্ছ মৌলিক প্রশ্নের উত্তর তিনি দেননি। ভ্যাকসিন দেওয়া শুরুর দিনক্ষণ স্থির না করে এমন বৈঠক করার যৌক্তিকতা কতখানি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা তাই অবান্তর নয়। কোভিড মোকাবিলায় গাফিলতি নয়—এ তো জানা কথা।
মহামারী মোকাবিলায় কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের মাধ্যমেই কাজ করা উচিত। ভ্যাকসিন প্রয়োগের আগে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কতটা হতে পারে, তা নিয়েও নিশ্চিত হওয়া দরকার। টাস্কফোর্স গঠন, কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যে পরামর্শ দিয়েছেন তা নিশ্চয়ই রাজ্যগুলি পালন করবে। সামর্থ্যমতো সংক্রমণ মোকাবিলার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রতিটি রাজ্য। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দিশাহীনতার কারণে দেশবাসীর আশাপূরণ হল না।