ব্যবসা সূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ... বিশদ
হাসপাতালে বেআইনিভাবে আয়া মাসিদের দৌরাত্ম্য, দালালদের দাপাদাপি নিয়ে জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও বুধবার রাজ্যের মন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পর পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায় সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে সবমহল। হাসপাতাল সুপার সুরজিৎ কুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, বেআইনি আয়ারাজ, দালালরাজ, হাসপাতালে দীর্ঘদিনের জবরদখলদারদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে বেশকিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে। হাসপাতালের সহকারি সুপার বিপ্লব হালদার বলেন, হাসপাতালে আয়া প্রথা অবৈধ। তাই বৃহস্পতিবার থেকে আয়ারা কেউ যেন হাসপাতালের ওয়ার্ডে না ঢোকেন, মৌখিকভাবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রতিদিন রোগীদের পরিবারের উপর আর্থিক জুলুম বন্ধ করতে হস্তক্ষেপ করতেই এতেই টনক নড়েছে আয়া মাসিদের। আয়ারা বুধবার হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের কাছে দাবিদাওয়া জানাতে স্মারকলিপি দিতে চাইলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করেনি। জরুরি বিভাগে হাসপাতালে আসা মুমুর্ষ রোগীদের ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য চারজন ওয়ার্ড বয় থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে দালালরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে কাজে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। ফলে ওই দালালদের খপ্পরে পড়ে রোগীর পরিবারের লোকদের ৫০০-১০০০ টাকা ট্রলি ম্যানদের মেটাতে হয়। মদ্যপ ও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ট্রলি টানছে ওই দালালরা। হাসপাতালের নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীদের তোয়াক্কা না করে দিনের পর দিন হাসপাতালে থাকা ওই দালালরাই রোগীদের নার্সিংহোমে নিয়ে যেতে উৎসাহিত করছে। বাইরে থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে বাধ্য করা হচ্ছে। নিখরচায় চিকিৎসা করতে হাসপাতালে এসে কাড়ি কাড়ি টাকা গুনতে হচ্ছে রোগীর পরিবারের লোকদের। একজন রোগী যেকদিন হাসপাতালে ভরতি থাকেন, দিনরাত প্রত্যেক রোগীর পরিবারকে ২০০ টাকা আয়া চার্জ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরিষেবা না নিলেও ওই টাকা সব রোগীর বাড়ির লোকেদের মেটাতে হয়। এছাড়া প্রসূতি বিভাগে আয়ারা আগে সন্তান জন্মের পরই পরিবারের লোকেদের কাছে হাজার হাজার টাকা দিতে বাধ্য করে। একশ্রেণীর চিকিৎসকও নিয়মিত হাসপাতালে ডিউটি করেন না বলে অভিযোগ। নার্সদের একাংশ নিজেদের ডিউটি ভুলে গিয়েছেন বলেও অভিযোগ। তাদের কাজ আয়ারা করে দেওয়ায় চেয়ারে বসে বসে মোবাইল ফোনে কর্তব্যরত নার্সদের একাংশ ডুবে থাকেন। অনিয়মটাই যেন রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে। এনিয়ে ভুক্তভোগীরা অভাব অভিযোগ জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দালালদের শিকড় এতটাই গভীরে রয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের সুন্দর পরিষেবার স্বপ্নটাই ভেঙে গিয়েছে। এতে শাসকদলের ভাবমূর্তিও নষ্ট হচ্ছে বলে রাজ্যের মন্ত্রী থেকে দলের নেতারা বিরক্ত। তাই এবিষয়ে এদিন কড়া পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন মন্ত্রী গোলাম রব্বানি। মন্ত্রী বলেন, জেলাশাসককে পদক্ষেপ করতে বলেছি। আমি নিজে এনিয়ে খোঁজখবর রাখব।