ব্যবসা সূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ... বিশদ
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ গুসকরা-কালনা রুটের একটি বাস বর্ধমান-কালনা রোড ধরে কালনার দিকে আসছিল। আটঘড়িয়া-সিমলন পঞ্চায়েতের কেষ্টপুরের কাছে উল্টোদিক থেকে আসা একটি বাইকের সঙ্গে বাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। বাইকের চালক ও আরোহী রাস্তায় ছিটকে পড়েন। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। যাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথ চলতি মানুষজন প্রথমে জখম অবস্থায় দুই বাইক আরোহীকে উদ্ধার করে কালনা হাসপাতালে পাঠায়। এরপর বাসের দরজা, জানালা ভেঙে যাত্রীদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কালনা ও মধুপুর হাসপাতালে পাঠায়। বাইক আরোহী দু’জনকেই চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অভিযোগ, পুলিস গাড়ি আটকে টাকা তোলার কারণে বাইক চালক দ্রুত পালাতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরই রাস্তা অবরোধ শুরু করে উত্তেজিত জনতা। খবর পেয়ে কালনার বুলবুলিতলা ফাঁড়ি ও কালনা থানার পুলিস ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত জনতা পুলিসের উপর ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে বুলবুলিতলা ফাঁড়ির ইনচার্জ কুণাল বিশ্বাসকে উত্তেজিত জনতা হেনস্তা করার পাশাপাশি ঠেলে রাস্তার ধারে একটি পানা পুকুরে ফেলে দেয়। পুলিসের গাড়ি ভাঙচুর করে একটি বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে কালনা, মন্তেশ্বর, নাদনঘাট ও পূর্বস্থলী থানা থেকে বিশাল পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে পৌঁছন কালনার এসডিপিও শান্তনু চৌধুরী।
এদিকে ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিস যখন ব্যস্ত, তখনই কালনা হাসপাতালের সামনে মৃতদের আত্মীয় পরিজনরা গাছের গুঁড়ি ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে। অবরোধকারীরা এতটাই উত্তেজিত হয়ে পড়ে যে, হাসপাতালের সামনে দিয়ে যাওয়া একটি বাইক থেকে আরোহীকে নামিয়ে বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে বিশাল পুলিসবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। অবরোধকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা চলার পর বিকেল ৫টা নাগাদ অবরোধ ওঠে। এদিকে, অবরোধের জেরে কালনা-বর্ধমান ও কালনা এসটিকেকে রোডে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। ঘটনার খবর পেয়ে কালনা হাসপাতালে জখমদের দেখতে আসেন মহকুমা শাসক নীতেশ ঢালি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জখম এক যাত্রী দেবীপুরের বাসিন্দা জয়দেব ঘোষ বলেন, কালনা পোস্ট অফিসে দরকারি কাজের জন্য ওই বাসে যাচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ পরই বাসটিতে বিরাট আওয়াজ হয়। তারপরই উল্টে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা এসে জানালা ভেঙে আমাদের উদ্ধার করেন।
মৃতদের আত্মীয় ইয়াজুদ্দিন ধাবক বলেন, বিটারে ফিরোজের এক আত্মীয়ার বাড়িতে চার-পাঁচটি বাইকে চেপে গ্রামের কয়েকজন যাচ্ছিলাম। কালনা-ধাত্রীগ্রাম রেলগেট পেরিয়ে আমরা কিছুটা যেতেই পুলিস আমাদের আটকে কাগজপত্র দেখতে চেয়ে টাকা চায়। এরই মধ্যে আমাদের একটি বাইকে ফিরোজ ও শাজাহান যাচ্ছিল। হঠাৎ বাস এসে ওদের বাইকে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। পুলিসের শাস্তি চাই।
জেলার পুলিস সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, পথ দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। বাস উল্টে বেশ কিছু যাত্রী জখম হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। গাড়িতে আগুন ধরানো হয়েছে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। বড়সড় আইন শৃঙ্খলা সামাল দিতে গেলে যা হয়, সেটাই হয়েছে। তবে, নিয়ম মেনে বডি ক্যামেরার মাধ্যমে বাইক চেকিং হয়। তদন্ত শুরু হয়েছে। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ঘটনার কথা আমি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোনে জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।