শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
ওপার বাংলা থেকে আসার সময় শিকদার পরিবার তাদের পারিবারিক দুর্গা প্রতিমার পুরনো কাঠামো ও পুজোয় ব্যবহৃত পিতলের ঢাল, তলোয়ার নিয়ে এসেছিল। প্রতিমার কাঠামোটি নষ্ট হয়ে গেলেও আজও রয়ে গিয়েছে পিতলের সেই ঢাল, তলোয়ার। পারিবারিক পুজোর বংশানুক্রমিক অনুশাসন মেনে আজও মায়ের প্রতিমার পাশে রাখা সেই ঢাল, তলোয়ারও পুজো হয়।
শিকদার বাড়ির বর্তমান প্রজন্মের পেশা কৃষিকাজ। এপার বাংলায় আসার পর নবনগরে জমি কিনে চাষবাস করেই প্রতিবছর মায়ের পুজো করেন তাঁরা। এই শিকদার বাড়ির পারিবারিক দুর্গাপুজোর বর্তমান প্রধান পরেশ শিকদার। বৈষ্ণব মতে ও শাস্ত্রীয় আচার নিষ্ঠার কঠোর অনুশাসনের নিয়মেই শিকদার বাড়িতে পূজিতা হন দশভূজা।
শিকদার বাড়ির পারিবারিক পুজোয় মায়ের প্রতিমা বানান মুজনাই গ্রামের মৃতশিল্পী দিলীপ পাল। চিরাচরিত সাবেকিয়ানার রীতি মেনেই মায়ের প্রতিমার গড়ন তৈরি হয়। বংশের নিয়ম অনুসারে গাড়িতে নয়, চার-পাঁচ কিমি দূরে প্রতিমা তৈরির কারখানা থেকে শিকদার বাড়ির লোকেরা কাঁধে করেই বাড়িতে প্রতিমা নিয়ে আসেন।
স্থানীয় মুজনাই নদীতে দশমীতে প্রতিমাও নিরঞ্জন দেওয়া হয় কাঁধে চাপিয়েই। প্রতিমা নিরঞ্জনেও যানবাহন ব্যবহার করা হয় না। বংশের ওই ধারা আজও অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন শিকদার বাড়ির পরবর্তী পুরুষরা। ওপার বাংলায় থাকার সময় শিকদার বাড়ির এই পারিবারিক পুজোয় মহিষ বলি দেওয়া হতো। এই বাড়ির বর্তমান কর্তা ভবেশ শিকদার ও রণজিৎ শিকদার বলেন, পরিবারের বর্তমান সদস্যদের মায়ের পুজোয় মহিষ বলি পছন্দ নয়। তাই এখন মহিষ বলি তুলে দেওয়া হয়েছে। পরিবারের অনুশাসন মেনে আজও আমাদের পারিবারিক দুর্গাপুজোয় অষ্টমীর গভীর রাতে রক্ষাকালীর পুজো হয়। পারিবারিক পুজো হলেও তাতে শামিল হন গ্রামের লোকেরা।
শিকদার বাড়ির এই পারিবারিক দুর্গাপুজোর ইতিহাস ধরে রেখেছে ওপার বাংলা থেকে আনা পুজোয় ব্যবহৃত পিতলের তৈরি সেই ঢাল, তলোয়ার। অত্যন্ত ভারী এই ঢাল, তলোয়ার একইসঙ্গে পুজো করা হয়।