শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
জলপাইগুড়ির শান্তিপাড়ার বাসিন্দা শিক্ষক অনিল দাস বলেন, ১৯৫৩ সালে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে আমার জন্ম হয়। কিন্তু প্রয়োজন না থাকায় জন্মের শংসাপত্র এতদিন তোলা হয়নি। চারিদিকে এনআরসি নিয়ে যেভাবে প্রচার চলছে তাতে আমরা সকলেই উদ্বিগ্ন হয়ে আছি। বাড়ির কারও নাম যাতে বাদ না পড়ে সেজন্য জন্মের শংসাপত্র পেতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি। যদিও এত পুরনো নথি পাওয়া যাবে না বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন। কী করব ভেবে পাচ্ছি না।
জলপাইগুড়ির বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক উমেশ শর্মা বলেন, এনআরসি নিয়ে জনমানসে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ১৯৬৮ সালে জেলায় ভয়াবহ বন্যায় অধিকাংশ বাসিন্দারই দরকারি নথিপত্র ভেসে গিয়েছে। এখন এনআরসি নিয়ে যেভাবে চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়েছে তাতে কমবেশি সকলেই উদ্বেগে রয়েছেন। এক্ষেত্রে সরকারকে সঠিকভাবে প্রচার করতে হবে।
নস্যশেখ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়্যারমান বজলে রহমান বলেন, আমরা উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র। সরকারিভাবে এনআরসি ঘোষণা না করা হলেও বাংলায় এনআরসি করা হবে বলে জোর প্রচার চলছে। তাই পুরনো দলিল সংগ্রহ করে তাতে ভুলভ্রান্তিগুলি আমরা সংশোধন করে রাখছি। জমির নথিপত্রের জন্য জেলা অফিসে আবেদন করা হচ্ছে।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তেওয়ারি বলেন, ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের আগের সরকারি নথিপত্র সংগ্রহের জন্য প্রতিদিনই আমাদের দপ্তরে প্রচুর আবেদন জমা পড়ছে। আমার সেসব রেখে দিচ্ছি।
অসমে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরেই জেলাজুড়ে জোর আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ১৯৭১ সালের আগের সরকারি নথি পেতে আবেদনের পাহাড় জমছে জেলাশাসকের দপ্তরে। অনেকেই আবার ডাক মারফত আবেদন পাঠাচ্ছেন। সরকারিভাবে এনআরসি নিয়ে এই রাজ্যে কোনও ঘোষণা না হলেও রাজনৈতিকভাবে এনিয়ে প্রচার শুরু হতেই মানুষের মধ্যে কৌতূহল বাড়ছে। অসমে চূড়ান্ত এনআরসি তালিকায় অনেকেরই নাম বাদ পড়েছে। এখানকার বাসিন্দারা তাই আগেভাগেই পুরনো কাগজপত্র জোগাড় করতে ময়দানে নেমে গিয়েছে।
১৯৬৮ সালের বন্যায় জলপাইগুড়ির সরকারি বিভিন্ন অফিসের কাগজপত্রও ভেসে গিয়েছিল। তাই প্রশাসনকেও এনিয়ে কিছুটা ভাবাতে শুরু করেছে। অসমে এনআরসির তালিকা থেকে প্রচুর বাঙালির নাম বাদ পড়েছে। এনআরসি তালিকায় নাম না থাকা অনেকের আত্মীয়ের বাড়ি কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে আছে। এখানকার বাসিন্দারা তাঁদের থেকে নানা তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শুনে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় এনআরসি নিয়ে নানা ধরনের প্রচারে সকলেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন। ১৯৬৮ সালের বানভাসি হওয়াই নয়, আগুনে বাড়িঘর পুড়ে যাওয়া কিংবা পুরনো দলিল উই পোকা নষ্ট করে দেওয়ায় সকলেই এখন জেলা প্রশাসনের অফিসে ছুটছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অগস্ট মাস পর্যন্ত পুরনো দলিলপত্র নেওয়ার জন্য সপ্তাহে একটা-দু’টো করে আবেদন জমা পড়ত। কিন্তু গত এক মাসে সেই সংখ্যা কয়েকশো গুণ বেড়ে গিয়েছে। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের আগের জমির কাগজ, ভোটার লিস্টে নাম থাকার তথ্য চেয়ে একের পর এক আবেদন জমা পড়ছে।