হস্তশিল্পীরা তাদের কাজের সাফল্যের জন্য সুনাম পেতে পারেন। সঙ্গীতাদি চারুকলার ক্ষেত্রে বিশেষ সম্মান লাভের যোগ। ... বিশদ
স্টল নম্বর ৩১৭। ভিতরে আছে বলতে বড়মাপের একটা কম্পিউটার স্ক্রিন। আর কয়েকজনের হাতে ট্যাব। তাঁদের ঘিরে নানান বয়সি লোকজনের ভিড়। ইতস্তত করে এক মহিলাকে জিজ্ঞাসা করল কৌশিক—‘এখানে কী হচ্ছে?’ মহিলাটি মিষ্টি হেসে বললেন, ‘এটা শিক্ষামন্ত্রকের একটি প্রজেক্ট। তত্ত্বাবধানে আইআইটি খড়্গপুর। এই ওয়েবসাইটে রেজিস্টার করে পড়াশুনো, কেরিয়ার সংক্রান্ত নানান তথ্য থেকে সাহিত্য সমস্ত কিছু মিলবে আঙুলের ছোঁয়ায়।’ কৌশিকের আগ্রহ জয়েন্ট নিয়ে। শুনে বললেন, ‘জেইই মেইন-অ্যাডভান্স, নিটের সলভ করা পেপার, স্টাডি মেটেরিয়াল, আইআইটির প্রফেসরদের ভিডিও লেকচার—সবই পাওয়া যাবে। রেজিস্টার করতে কোনও টাকা লাগবে না।’ শুনে পড়ন্ত বিকেলেও কৌশিকের চোখ ঝকমক করে উঠল। মুখ্যমন্ত্রীর ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে পাওয়া টাকায় কেনা স্মার্টফোনেই তো সবকিছু পড়া যাবে!
শুধু পড়াশোনা নয়, সাহিত্য থেকে দুষ্প্রাপ্য তথ্যচিত্র—সব কিছুই মিলবে এই আর্কাইভে। সিমোন দ্য বেভোয়া, মুন্সি প্রেমচন্দ, জালালউদ্দিন মহম্মদ রুমির পাশাপাশি রয়েছে উপনিষদ, ভাস্কো দা গামার জার্নাল, রবীন্দ্র রচনাবলী, সুকুমার রায়ের গল্প কবিতা বা সত্যজিৎ রায়ের খেরোর খাতা, মায় শার্লক হোমসও। আর্কাইভে মিলবে ১৮৯৫ সাল থেকে পুরনো, বন্ধ হয়ে যাওয়া ‘মুক্তি’, ‘ভারতী’, ‘বঙ্গদর্শন’-এর মতো বিভিন্ন সংবাদপত্র থেকে রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’,‘বিসমিল্লা অ্যান্ড বেনারস’-এর মতো তথ্যচিত্রও।
বিপুলা এই আর্কাইভ এবারের বইমেলায় আট থেকে আশি—সবার কাছে প্রবল আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে বলে জানালেন কলকাতা বিভাগের প্রধান মহুয়া পাল। তাঁর কথায়, ‘আর্কাইভে প্রায় ১২ কোটি বই সহ নানা নথি রয়েছে। আগ্রহীরা যাতে নিজেদের পছন্দসই বিষয় সহজে খুঁজে নিতে পারেন, তার জন্য সেগুলিকে স্কুলশিক্ষা, উচ্চশিক্ষা, গবেষণা, পেটেন্ট অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস, কেরিয়ার ডেভেলপমেন্ট, কালচারাল আর্কাইভস, জুডিশিয়াল রিসোর্সেস, নিউজপেপার আর্কাইভস—মোট আটটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা প্রায় দু’হাজার ছুঁই ছুঁই।’
মেলা থেকে বের হওয়ার সময় ফের কৌশিকের সঙ্গে দেখা। বোনের হাতে পাঁচটা প্যাকেট। সেদিকে তাকাতেই হেসে বলল, ‘আপাতত জয়েন্টের বই কিনতে হবে না। তাই বোনকে দুটো বই বেশি কিনে দিলাম। আবার তো এক বছরের অপেক্ষা...।’
বলতে বলতে মেট্রো স্টেশনের দিকে পা বাড়াল ভাইবোন দু’জনে। অনেকটা পথ ফিরতে হবে।