আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
ইতিমধ্যেই একটি চানাচুর প্রস্তুতকারক সংস্থার বিরুদ্ধে চিৎপুর থানায় কেস রুজু করেছে। সেখানে খাবারে ভেজাল সহ বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। তার ভিত্তিতে চলছে তদন্ত। শহরজুড়ে এই ভেজাল চানাচুর বা চিঁড়ে ভাজা কোথায় তৈরি হচ্ছে, তার খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছেন অফিসাররা। তাঁদের বক্তব্য, দোকানিদের পাকড়াও করার থেকেও তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হল এর শিকড়ে যাওয়া। যাতে এই ভেজাল খাবার দোকান পর্যন্ত পৌঁছতে না পারে। সূত্রের খবর, চিৎপুর থানা এলাকার খগেন চ্যাটার্জি রোডে একটি চানাচুর তৈরির কারখানা আছে। তারা চানাচুর, চিঁড়ে ভাজা ও মুগডাল ভাজা প্যাকেট করে বিভিন্ন জেলায় পাঠায়। সেখানে তল্লাশি চালাতে গিয়ে দেখা যায়, উপাদানগুলির মধ্যে সর্ষের তেলের সঙ্গে পাম অয়েল ও বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিক মেশানো হয়েছে। যে বেসন ও লঙ্কা-হলুদের গুঁড়ো ব্যবহার করা হয়, তা নিম্নমানের। খাওয়ার অযোগ্য ডালও ব্যবহার হচ্ছে এই মুখরোচক খাবার বানানোর জন্য। একদিকে থরে থরে প্যাকেট করে রাখা আছে ফিনিশড প্রোডাক্ট। কোনওটি ৫০০ গ্রামের, কোনওটি আবার এক কেজির। সব জিনিসই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এগুলি পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ল্যাবরেটরির রিপোর্ট হাতে এসেছে ইবি কর্তাদের। তাতে দেখা যাচ্ছে, সর্ষের তেলের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু ক্ষতিকারক রাসায়নিক। এই তেল শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এই তেলেই ভাজা হচ্ছে চানাচুর। ভাজার সময় দেওয়া হচ্ছে পাম তেল। বেসন বলে যে জিনিস ব্যবহার করা হচ্ছে, তা আসলে আটা আর হলুদ রং। এই রং মূলত ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা হয়। হলুদ বা লঙ্কার গুঁড়ো হিসেবে যা দেওয়া হয়, তা হল ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ ও রং। যা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এই সব ভেজাল চানাচুরই বিক্রি হচ্ছে বাজারে। এই রিপোর্ট হাতে আসার পরেই সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে কেস রুজু করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই সমস্ত নিম্ন মানের মুদি-সামগ্রী আসছে পোস্তা এবং বড়বাজার এলাকা থেকে। সেখানে ঘরে ঘরে ভেজাল হলুদ ও লঙ্কার গুঁড়ো তৈরি হচ্ছে। ভেজাল সর্ষের তেল তৈরি হচ্ছে শহরতলির বিভিন্ন জায়গায়। এই রকম ছোটখাট অসংখ্য চানাচুর কারখানা আছে বিভিন্ন জেলা ও কলকাতায়। এই সব কারখানার মালিকদের একাংশ ভেজাল জিনিস কেনে কম দামে। তাদের তৈরি চানাচুর, চিঁড়ে ভাজা বা মুগডাল ভাজা শুধু এই রাজ্য নয়, বিকোচ্ছে আশপাশের রাজ্যেও। চিৎপুরের যে সংস্থার বিরুদ্ধে কেস রুজু হয়েছে, সেখান থেকে প্রতিদিন লরি ভর্তি চানাচুরের কার্টন বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হতো বলে জানা যাচ্ছে। এই জায়গাগুলি চিহ্নিত করার কাজ চলছে। এর সঙ্গে যে সব অসাধু ব্যবসায়ী জড়িত বলে অভিযোগ, তাঁদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া চলছে। যাতে সেই সব সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পাঠানো যায়।